নিজস্ব প্রতিবেদন : নতুন নতুন অ্যাপ থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন নতুন প্লাটফর্ম ইত্যাদির কথা আমরা প্রত্যেকেই জানি। বর্তমানে যেভাবে ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এই সকল মাধ্যমের সূচনা আশ্চর্যের কিছু নয়। তবে এসবের মধ্যেই বাজারে হাজির ডিজিটাল অ্যারেস্ট (Digital Arrest)। অ্যারেস্ট কথাটির সঙ্গে আমরা পরিচিত, তবে আশা করি ডিজিটাল অ্যারেস্ট কথাটির সঙ্গে অধিকাংশরাই পরিচিত নয়।
কোন নাগরিক আইন অমান্য করলে তাকে পুলিশ অ্যারেস্ট করতে পারে এই বিষয়টি সম্পর্কে আমরা প্রত্যেকেই জানি। কিন্তু ডিজিটাল অ্যারেস্ট কি তা না জানলে নাগরিকদের পকেট ফাঁকা হতে সময় লাগবে না। কেননা এই ডিজিটাল অ্যারেস্ট পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে আনা হয়নি, ডিজিটাল অ্যারেস্ট আসলে প্রতারকদের নতুন ফাঁদ।
প্রতারকদের থেকে হঠাৎ করে নাগরিকদের মোবাইল নম্বরে ফোন অথবা হোয়াটসঅ্যাপ করে জানানো হচ্ছে তাকে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করা হয়েছে। প্রথমে বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য না হলেও প্রতারকরা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ওই ব্যক্তি সম্পর্কে নানান তথ্য সংগ্রহ করে এমন সব কথা বলছেন যাতে করে ওই ব্যক্তি ডিজিটাল অ্যারেস্টের বিষয়টি বিশ্বাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। আর এরপরেই শুরু হচ্ছে আসল খেলা। এরপর ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোন ভিডিও কনফারেন্সের লিঙ্ক পাঠানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন ? Juice Jacking: প্রতারণার নয়া চাল জ্যুস জ্যাকিং! বিমানবন্দর, হোটেলে সামলে রাখবেন স্মার্টফোন
প্রতারকদের তরফ থেকে পাঠানো ওই লিংকে ক্লিক করে যখনই ওই ব্যক্তি সরাসরি জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন তখন অপর প্রান্তের ব্যক্তি এমন ভাবে উপস্থিত থাকেন যেন তিনি একটি থানার মধ্যে রয়েছেন এবং তিনি আসল পুলিশ। কিন্তু তা নয়। আসলে পুরো বিষয়টি এমনভাবে সাজানো হয় যে ফাঁদে পড়া ব্যক্তি যেন সবকিছু আসল ঘটনা বলে মনে করেন। এই জিজ্ঞাসাবাদ চলার সময় প্রতারকদের তরফ থেকে বারবার ভয় দেখানো হয়, যদি ভিডিও কনফারেন্স কেটে দেওয়া হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে গিয়ে পুলিশ তাকে অ্যারেস্ট করে নিয়ে আসবেন। আর এইভাবে জিজ্ঞাসাবাদ চলতে চলতে যখন প্রতারকরা বুঝতে পারেন ওই ব্যক্তি পুরোপুরিভাবে ফাঁদে পড়ে গিয়েছেন তখন তার সঙ্গে টাকা-পয়সার ডিল শুরু হয়।
এই ধরনের ডিজিটাল অ্যারেস্টের মত কোন হুমকি এলে সেই হুমকিতে কোনোভাবেই পড়লে হবে না। কেননা ভারতবর্ষের আইন অনুযায়ী ডিজিটাল অ্যারেস্ট বলে কোন ব্যবস্থা নেই। এই ধরনের ঘটনা সামনে এলেই তৎক্ষণাৎ স্থানীয় পুলিশকে বিষয়টি জানাতে হবে। এছাড়াও এই ডিজিটাল অ্যারেস্টের ফাঁদে যাতে আপনার প্রতিবেশী থেকে আত্মীয়রা না পড়েন তার জন্য তাদের সতর্ক করতে হবে। পাশাপাশি মনে রাখতে হবে কোন পুলিশ অফিসার কখনোই কারো থেকে নিজের অ্যাকাউন্টে টাকার দাবি করতে পারেন না।