‘আজিব দাস্তা হে ইয়ে’, কঠোর বিধিনিষেধের ফাঁকা রাস্তায় সুর তুললেন বৃদ্ধ দম্পতি

নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রতিভা এমন একটা জিনিস যা নিয়ে মানুষ জন্মগ্রহণ করে এবং আলোর মত প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটে। যার ফলে ব্যক্তির প্রতিভা ঠিক প্রকাশ পায়। তবে একটা সময় প্রতিভা প্রকাশের এই রাস্তাটি এতটা সহজ ছিল না, তখন সেভাবে কোনো অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরি হয়নি। অনেক মানুষের মধ্যেকার প্রতিভায় তাই সেই ভাবে প্রকাশ পায়নি ঠিকঠাক একটি প্ল্যাটফর্মের অভাবে।

বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে একটি ডিজিটাল প্লাটফর্ম তৈরি হয়েছে যার ফলে যেকোন প্রান্তে থাকা ব্যক্তি তার প্রতিভার ফলে কোটি কোটি মানুষের চোখের সামনে হাজির হতে পারেন।

অনলাইনে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে রাতারাতি বিখ্যাত হয়েছিল রানু মন্ডল। রানাঘাট স্টেশনে ভিক্ষাবৃত্তি করতেন তিনি আর তার সাথে গান গাইতেন। তার এই গানই একদিন সোশ্যাল ওয়ার্কার অতীন্দ্র বাবুর চোখে পড়ে যায়, রানু মন্ডল এর গানের ভিডিও তৈরি করে সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেন অতীন্দ্র বাবু। এরপর মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় রানু মন্ডল, রানাঘাট স্টেশন থেকে উঠে গিয়ে গানের জগতে পরিচিতি পায় সে। হিমেশের সঙ্গে একসাথে তেরি মেরি গান গেয়ে আরো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সে।

এছাড়া দরিদ্র অভাবী পরিবারের মেয়ে চাঁদমনি হেমব্রম ও সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে পরিচিতি পেয়েছিল। অভাবী সংসারের মেয়ে চাঁদমণি গানের প্রশিক্ষণটুকুও নিতে পারেনি, পাশের বাড়ির সাউন্ড রেকর্ডারের গান শুনে মুখস্ত করে ফেলেছিল সে। তার এক শিক্ষক তার গানের প্রতিভা উপলব্ধি করে চাঁদ মনির গান ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেয়। তারপর বিভিন্ন জায়গা থেকে গানের জন্য ডাক পায় চাঁদমনি। নিজের মিউজিক ভিডিও রিলিজ করেছে তার, গানের জন্য সে পৌঁছে গিয়েছে বলিউডে অবধি।

এই ভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে প্রতি মুহূর্তে কেউ না কেউ নিজের প্রতিভার দ্বারা নেটাগরিকদের মন ছুঁয়ে যায় ঠিক যেমন মন ছুঁয়ে গেলেন সাম্প্রতিককালের ভাইরাল ভিডিওর ব্যক্তিটি। ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে রাস্তার মধ্যে এক বৃদ্ধ দাঁড়িয়ে আছেন আর তার হাতে আছে একটি বেহালা। সেই বেহালাতেই তিনি প্রতি মুহূর্তেই নতুন নতুন সুর তুলছেন। তার চেহারা দেখে তার বয়স বোঝা গেলেও তার প্রতিভায় কিন্তু বয়সের ছাপ পড়ে নি!তাই আশেপাশের রাস্তার মানুষ মুগ্ধ হয়ে শুনছেন তার গান।

প্রসঙ্গত, ওই ভদ্রলোকের নাম তার বাড়ির ঠিকানা পেশা কোন কিছুই জানা যায়নি। তবে ভিডিওটি শেয়ার করার সময় ক্যাপশনে লেখা ছিল ‘talent spotted in Kolkata’।

পরে জানা যায়, ওই বৃদ্ধ কলকাতার ১৮/১ বিডন স্ট্রিটে দাঁড়িয়ে কঠোর বিধিনিষেধ চলাকালীন বেহালায় এই সুর তুলেছেন। পাশাপাশি ওই বৃদ্ধের পোশাক আশাক, শরীরের অবস্থা দেখে স্পষ্ট, তাঁর প্রতিভা থাকলেও তিনি কষ্টের মধ্যে জীবন যাপন করছেন। গায়ে একটি জীর্ণ জামা। আর তার সাথে একটি আটপৌরে পোশাক পড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক বৃদ্ধা। বৃদ্ধার হাতে রয়েছে একটি থলি। স্পষ্ট যে তারা এই ভয়ঙ্কর করোনা পরিস্থিতির মাঝেও নিজেদের জীবন অতিবাহিত করার জন্য পথে নেমেছেন অর্থ সংগ্রহে।