নিজস্ব প্রতিবেদন : ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে চলেছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। পরিস্থিতি এমনটাই যে যেন সুনামি এসে পড়েছে। শেষ তথ্য অনুযায়ী ভারতে একদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাই ২ লক্ষ ৩৫ হাজার মানুষ। দিন কয়েক ধরেই দেশের দু’লক্ষের বেশি মানুষ এইভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন। আর এই পরিস্থিতিতে করোনাকে ঠেকানোর জন্য দেশের বিভিন্ন রাজ্য বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। কোথাও লকডাউন, কোথাও কার্ফু, কোথাও আবার কড়া স্বাস্থ্যবিধি। চলুন দেখে নেওয়া যাক দেশের কোন কোন রাজ্য করোনা ঠেকাতে কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করলো।
চন্ডিগড় : পরিস্থিতি সামাল দিতে এখানে সপ্তাহান্তে লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার রাত দশটা থেকে শুরু হবে লকডাউন এবং তা চলবে সোমবার ভোর পাঁচটা পর্যন্ত। জরুরী পরিষেবা ছাড়া আর কোনো কিছু ছাড় দেওয়া হয়নি এই লকডাউন চলাকালীন। লকডাউন সময়কালে কেউ যদি বাইরে যেতে চান তাহলে তাকে COVA পঞ্জাব অ্যাপে পরিকল্পনার কথা জানিয়ে রাখতে হবে।
উত্তর প্রদেশ : সপ্তাহে ছয়দিন খোলা থাকলেও রবিবার দিন সমস্ত কিছু বন্ধ। ওই দিনটিই সর্বত্র স্যানিটাইজ করা হবে। মাস্ক না পরলে ১০০০ টাকা জরিমানা। আর এই স্বাস্থ্যবিধি বারংবার না মানার মতো দুঃসাহসিকতার পদক্ষেপ ওঠালে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা। মহারাষ্ট্র এবং কেরল থেকে আগতদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে RT-PCR নেগেটিভ রিপোর্ট লাগবে।
মহারাষ্ট্র : মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি সবথেকে খারাপ হওয়ায় এখানে ১৫ দিনের জন্য কার্ফু জারি করা হয়েছে। এই সময় কোন রকম ভিড় অথবা জমায়েত করা যাবে না। ১৪৪ ধারা মোতায়েন করা হয়েছে সর্বত্র। স্বাস্থ্যপরিসেবা সহ যেকোন পরিষেবায় ছাড় থাকার পাশাপাশি ছাড় দেওয়া হয়েছে নির্মাণ কাজে।
দিল্লি : আপাতত জিম, স্পা, শপিংমল, সিনেমা হল ইত্যাদি সব বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সপ্তাহান্তে কার্ফু জারি করেছে দিল্লি। বিয়ের অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ ৫০ জন এবং শ্রাদ্ধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০ জন অংশগ্রহণ করতে পারবেন। একটি বসতি এলাকায় একটিমাত্র বাজার খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং যান চলাচলের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট রুট তৈরি করা হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশ : মধ্যপ্রদেশে কোন রকম লকডাউন জারি করা না হলেও জারি করা হয়েছে করোনা কার্ফু। পাশাপাশি মহারাষ্ট্র থেকে আগত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে RT-PCR নেগেটিভ রিপোর্ট পেশ করতে হবে।
কর্ণাটক : কর্নাটকের ৮ জেলায় ইতিমধ্যেই নাইট কার্ফু জারি করা হয়েছে। জেলাগুলি হল বেঙ্গালুরু, মহীশুর, ম্যাঙ্গালুরু, কালাবুর্গি, বিদার, টুমকুরু, উডুপি, মণিপাল। পাশাপাশি চণ্ডীগড়, কেরল, পঞ্জাব, মহারাষ্ট্র থেকে আগতদের ৭২ ঘণ্টা আগে RT-PCR নেগেটিভ রিপোর্ট পেশ করতে হবে।
পাঞ্জাব : পাঞ্জাবের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রাত ৯ টা থেকে সকাল পাঁচটা পর্যন্ত নাইট কারফিউ জারি করা হয়েছে। সমস্ত রকম জমায়েত অথবা ভিড় বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পাঞ্জাব সরকারের তরফ থেকে। এই রাজ্যে স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজস্থান : ১৯ তারিখ পর্যন্ত এই রাজ্যে কার্ফু জারি করা হয়েছে। কোন এলাকায় কোনো রকম ভিড় করা যাবে না। বিয়ে বাড়ি অথবা শ্রাদ্ধানুষ্ঠান থাকলে হাতেগোনা কয়েকজনকে নিয়ে তা করতে হবে। তবে নির্বাচন রয়েছে এইরকম এলাকায় ছাড় দেওয়া হয়েছে। গণপরিবহনের ক্ষেত্রে ৫০% যাত্রী নিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উত্তরাখণ্ড : রাত সাড়ে ১০টা থেকে সকাল পাঁচটা পর্যন্ত জারি হয়েছে কার্ফু। তবে কুম্ভ মেলার জন্য পুণ্যার্থীদের সংখ্যা থিকথিক করছে। যানবাহন এবং জিম ৫০% খালি রাখতে হবে। কোচিং সেন্টার, সুইমিং পুল, স্পা বন্ধ। কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ২০০ জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না।
হরিয়ানা : নাইট কার্ফু থাকার পাশাপাশি ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার, পাঠাগার, ট্রেনিং ইনস্টিটিউট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গুজরাত : রাজ্যের ২০টি শহরে রাত ৮টা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত নাইট কারফিউ জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি সুরাতে আগতদের SMC Covid-19 Tracker অ্যাপে সম্পূর্ণ তথ্য দিতে হবে।
ওড়িশা : নাইট কার্ফু জারি করা হয়েছে ১০টি জেলায়।
কেরল : ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রাত্রি নটা থেকে রাজ্যের প্রতিটি দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার জন্য ই-পাস লাগবে।
জম্মু-কাশ্মীর : নাইট কারফিউ জারি করা হয়েছে আট জেলায়।
ছত্তিশগড় : সুকমা ও দুর্গে লকডাউন জারি করা হয়েছে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত। ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। দোকানপাট খোলার সময় সকাল সাতটা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।
[aaroporuntag]
পশ্চিমবঙ্গ : মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, কেরালা এবং তেলেঙ্গানা থেকে আসাদের আবশ্যিকভাবে RT PCR নেগেটিভ রিপোর্ট আনতে হবে। সর্বোচ্চ ৭২ ঘন্টা আগের রিপোর্ট গ্রহণ করা হবে।