এবার আরও সহজে যাওয়া যাবে বৈষ্ণোদেবী (Vaishno Devi) ভ্রমণে। কারণ এবার ট্রেনে করেই পৌঁছনো যাবে ত্রিকূট পাহাড়ের কোলের শতাব্দী প্রাচীন ওই মন্দিরে। সেই জন্যই জম্মু-কাশ্মীরে দ্রুত গতিতে রেল লাইন পাতার কাজ চালাচ্ছে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। আর কিছুদিনের মধ্যেই সাধারণ মানুষ এই। ট্রেনে চেপে যেতে পারবেন বৈষ্ণোদেবী (Vaishno Devi) দর্শনে।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫ হাজার ৩০০ ফুট উঁচুতে দেবীর অধিষ্ঠান বৈষ্ণো দেবীর। ভারতের অন্যতম পবিত্র ধর্মস্থান এটি। মায়ের কাছে পৌঁছনোর পথটা কিন্তু মোটেই সোজা নয়। এক-দুই নয়, গুণে গুণে ১৩ কিলোমিটার রাস্তার চড়াই ভেঙে তবে দর্শন মেলে দেবীর। মাতার দরবারে পৌঁছতে কৃচ্ছ্রসাধনই অন্যতম পথ। তাতেই সুখ। তাতেই শান্তি।
কিন্তু, যাঁরা বয়সের ভারে কিংবা অসুস্থতার জন্য সেই কষ্ট করে উঠতে পারেননা, তাঁরাও কিন্তু মায়ের আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হন না। তীর্থযাত্রীদের বেস ক্যাম্প কাটরা থেকে ঘোড়া, খচ্চর, পিট্টু বা পালকিতে চড়ে মাতার ভবনে পৌঁছনো যায়। যার মূল্যও মন্দির কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে রেখেছে। এছাড়াও কাটরা থেকে সাঁঝি ছট পর্যন্ত একটি দৈনিক হেলিকপ্টর পরিষেবাও রয়েছে। অবশ্য, হেলিকপ্টারে যেতে হলে আগে থেকেই বুকিং করে রাখতে হয়। সাঁঝি ছট থেকে মাত্র আড়াই কিলোমিটার পায়ে হেঁটে গেলেই মায়ের মন্দির।
যাইহোক, অনেকটা টাকার খরচ বাঁচাতে এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে তো বটেই, কাটরা থেকে হেঁটে ভবনে ওঠাই পছন্দ করেন অধিকাংশ ভক্ত। ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রায় ৯১ লক্ষ ভক্ত এখানে দেবীর দর্শন করতে এসেছিলেন। তাঁদের বেশিরভাগই জম্মুর কাছে ৫ হাজার ২০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত ত্রিকূট পর্বতের মন্দির পর্যন্ত পৌঁছনোর জন্য ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ হেঁটে পাড়ি দিয়েছিলেন। তবে এবার খুশির খবর ভক্তদের জন্য। কারণ আগামী বছরের মধ্যেই সমতলের সঙ্গে জুড়ে যাবে জম্মু-কাশ্মীর। দ্রুত গতিতে উপত্যকায় চলছে রেললাইন পাতার কাজ। যার পোশাকি নাম শ্রীনগর-উধমপুর-বারামুলা রেলওয়ে লিঙ্ক প্রকল্প। কাজ চলছে ২০০২ সাল থেকে। জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
এবার ট্রেনে পৌঁছনো যাবে ত্রিকূট পাহাড়ের কোলের শতাব্দী প্রাচীন ওই মন্দিরে। সেই লক্ষ্যে জম্মু-কাশ্মীরে দ্রুত গতিতে রেল লাইন পাতার কাজ চালাচ্ছে ভারতীয় রেল। শনিবার শ্রীনগরে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, হিমালয়ের দুর্গম পীর পঞ্জাল পর্বতমালার মধ্যে দিয়ে ১১১ কিলোমিটার লাইন পাতার কাজ চলছে। কাজটি করছে নর্দান রেলওয়ে। আর এই লাইনেই রয়েছে বিখ্যাত দুই ব্রিজ, চেনাব নদীর উপর পৃথিবীর সবথেকে উচু রেল ব্রিজ এবং ভারতের প্রথম কেবল স্টেইড ব্রিজ আঞ্জি খাদ ব্রিজ। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলেই সমতলের সঙ্গে ব্রডগেজ রেলপথে জুড়ে যাবে কাশ্মীর উপত্যকা। আশা করা যায় আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। আর তারপরই মানুষ বৈষ্ণোদেবী (Vaishno Devi) যেতে পারবেন খুব সহজেই।