This type of train Compartment is the most secure: কিছুদিন আগেই ঘটে গেছে আরও একটি ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। মৃতের সংখ্যাও প্রায় ১৫ ছাড়িয়েছে। আগরতলা থেকে কলকাতাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে ১ টি মালবাহী ট্রেন। মালবাহী ট্রেনটির চালকও এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার ২ টি কামরা একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। ঠিক ১ বছর আগে জুন মাসেই ঘটেছিল আরো ১ টি ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিল বহু মানুষ। ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটতে দেখলেই মনে একটা প্রশ্ন উঠে আসে। ট্রেনের কোন কামরা সব থেকে বেশি সুরক্ষিত? কোন কামরায় (Train Compartment) যাতায়াত করলে বিপদের আশঙ্কা সবথেকে কম থাকবে?
ভারতে প্রচলিত পরিবহন ব্যবস্থাগুলির মধ্যে সবথেকে বড় পরিবহন ব্যবস্থা হল ভারতীয় রেল পরিষেবা। প্রতিদিন কয়েক লক্ষ মানুষ রেল পরিষেবাকে ব্যবহার করে কম বা বেশি দূরত্বের পথ অতিক্রম করার জন্য। তাই ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সব থেকে বেশি সংখ্যক মানুষ। দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচার জন্য অনেকে ট্রেনযাত্রাকে সুরক্ষিত বলে মনে করেন। কিন্তু সেই ট্রেনযাত্রাই যখন আতঙ্কের হয়ে দাঁড়ায় তখন কি উপায়? স্বাভাবিকভাবেই মনে এই প্রশ্নটা বারবার উঠে আসে। কোন কামরায় (Train Compartment) যাতায়াত করলে সব থেকে বেশি সুরক্ষিতভাবে গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে? বিপদের মুখে পড়লেও কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে কোন কামরাটি?
ট্রেন দুর্ঘটনা অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়, যে কোন দেশে এই ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু তুলনামূলক উন্নত সুরক্ষা ব্যবস্থার কারণে জাপান, আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশে ট্রেন দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেকটাই কম। দুর্ঘটনা ঘটুক বা নাই ঘটুক ট্রেনের কোন অংশটি সবথেকে বেশি সুরক্ষিত এটা জানার আগ্রহ রয়েছে সমগ্র বিশ্ববাসীর। সেই আগ্রহ থেকেই গবেষণা চালিয়েছিল আমেরিকান ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ রেল রোড প্যাসেঞ্জার। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল সাদরে গ্রহণ করেছে বিশ্বের প্রতিটা দেশ। গবেষণার ফলস্বরূপ জানা গেছে, দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচতে সবথেকে নিরাপদ জায়গা ট্রেনের মধ্যবর্তী ৩ টি কামরা (Train Compartment)।
আরও পড়ুন ? Viral Video: ৫০০ টাকায় ট্রেনে পাওয়ার ব্যাঙ্ক কিনলে যা হয় আর কি! ভিডিও দেখলে আপনিও থ হয়ে যাবেন
ভারতীয় রেলে এক্সপ্রেস ট্রেনগুলির ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় ২২ টি কামরা ব্যবহার করা হয়। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, ২২ টি কামরার মধ্যে ১০, ১১ এবং ১২ এই ৩ টি কামরা (Train Compartment) সবথেকে বেশি নিরাপদ। ভারতীয় রেল কতৃপক্ষের তরফ থেকে জানা গেছে ১০, ১১, ১২ এই ৩ টি কামরা সবসময় নির্দিষ্ট থাকে না। যেহেতু একেকটি ট্রেনের পরিকাঠামো একেকরকম, সেহেতু কখনো এই ৩ টি কামরা সাধারণ প্যাসেঞ্জার সিটিং হয়ে থাকে, আবার কখনো এগুলি এসি থ্রি টায়ারও হয়ে থাকে। তবে কামরাগুলি যাই হোক না কেন সেগুলি সব সময় বেশি নিরাপদ। কারণ, খুব সহজ ভাষায় বলতে গেলে ২২ টি কামরাযুক্ত ১ টি ট্রেনের প্রথম ৮-৯ টি কামরা বালিশের মতন কাজ করে। অর্থাৎ শুরুতে বা শেষে আঘাত লাগলেও সেই আঘাতের প্রভাব মাঝখানের কামরাগুলিতে এসে পৌঁছতে অনেকটা সময় লাগে এবং বেগও অনেকটাই কমে আসে। তাই এই ৩ টি কামরাই সব থেকে বেশি সুরক্ষিত।
তবে এই যুক্তি যে সবসময় খাঁটবে তার কিন্তু কোন মানে নেই। দুর্ঘটনার পরিমাণ কতটা তার ওপর নির্ভর করে ট্রেন কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে তার উপর। গত বছর করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা তার প্রমাণ। করমন্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় সম্পূর্ণ ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে পড়েছিল ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সবকটি কম্পার্টমেন্ট। ১ টি কম্পার্টমেন্টের মানুষও সেই ভাবে সুরক্ষিত বলতে পারেনি নিজেকে। ট্রেনের কোন কামরাটি সবথেকে বেশি সুরক্ষিত জানা গেলেও সেই কামরার (Train Compartment) টিকিট কাটা কিন্তু সম্ভব নয়। রেল কর্তৃপক্ষ যে টিকিট নির্ধারণ করেন সেটিই নিতে হয় যাত্রীকে। যাত্রীর কাছে শুধুমাত্র সুযোগ থাকে বার্থ বা ক্লাস নির্ধারণ করার। বর্তমানে সব থেকে বেশি সুরক্ষিত ট্রেন বলা যায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসকে। সবরকম সুরক্ষা ব্যবস্থা করা হয়েছে এই ট্রেনটিতে। ২ টি শতাব্দী ট্রেনের খরচায় তৈরি হচ্ছে ১ টি মাত্র ট্রেন। ট্রেন যাতে লাইনচ্যুত না হয়, দুর্ঘটনার কবলে পড়লে নিজেকে সামলাতে পারে, এমনকি ভিতর বাহির সব দিক থেকে সুরক্ষিত করা হয়েছে এই ট্রেনটিকে। বিশেষজ্ঞদের মতে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে কোন রকম ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।