নিজস্ব প্রতিবেদন : গত সপ্তাহের রবিবার থেকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে রয়েছে টাইটান (Titan)। এই সেই যান যাতে চড়ে বিশ্বের ৫ জন ধন কুবের সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২৫০০ ফুট নিচে থাকা ধ্বংস টাইটানিক (Titanic) দেখতে গিয়েছিলেন। টাইটনিক দেখতে গিয়ে তাদেরও সলিল সমাধি হয়। পাঁচজনকেই মৃত ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে শোরগোল তৈরি হওয়ার পাশাপাশি নানান বিতর্কও দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
অন্যদিকে এমন ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর অধিকাংশ জায়গায় দেখা যাচ্ছে টাইটানকে সাবমেরিন বলা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হল সত্যিই কি টাইটান সাবমেরিন? এই প্রশ্নের উত্তর হল না। টাইটান মোটেই সাবমেরিন নয়, বরং এটি সাবমার্সিবল। কেন টাইটানকে সাবমেরিন বলা হবে না? সাবমেরিনের সঙ্গে সাবমার্সিবলের পার্থক্য কোথায়?
সাবমেরিন এবং সাবমার্সিবল এই দুটির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ইউএস ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানাচ্ছে, সাবমেরিন হলো এমন একটি যান যেটিতে বন্দর ছেড়ে যাওয়ার পর আবার নিজে থেকে বন্দরে ফিরে আসার পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকে। অন্যদিকে সাবমার্সিবলের ক্ষমতা কিন্তু সীমিত। এটি পরিচালনা করার জন্য নৌযানের প্রয়োজন হয়। যা টাইটানের মতো সাবমার্সিবলকে পুনরুদ্ধার করতে পারে। সহজ ভাষায় বললে টাইটান হল স্কুবা ড্রাইভারের মত। স্কুবা ড্রাইভারকে যেমন সমুদ্রের নির্দিষ্ট একটি জায়গায় ছেড়ে দেওয়া হয় এবং তারপর তারা নিজেদের মতো খোঁজ শুরু করে। পরে আবার জাহাজটি তাদের বন্দরে নিয়ে আসে।
টাইটান হল এমন একটি সাবমার্সিবল যেটি সমুদ্রের নিচে গিয়ে সবকিছু দেখতে পারে, গবেষকরা গবেষণা করতে পারেন এবং তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। এটি সমুদ্রের গভীরে গিয়ে ছবি এবং ভিডিও সংগ্রহ করতে পারে। এছাড়াও গভীর সমুদ্রে নেমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার ক্ষমতাও রয়েছে টাইটানের। ওশানগেট তাদের টাইটান নামের এই সাবমার্সিবলকে অন্যান্যদের তুলনায় হালকা এবং আলাদা গতি দেওয়ার জন্য কার্বন ফাইবার, টাইটানিয়াম ইত্যাদি ব্যবহার করেছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
ওশানগেটের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, টাইটানের দৈর্ঘ্য প্রায় ২২ ফুট এবং প্রস্থ প্রায় ৯.২ ফুট। এর মোট ওজন ১০৪৩২ কেজি। টাইটান নামের এই সাবমারসিবল ৬৮৫ কেজি পর্যন্ত ভার বহন করতে পারে। এই যন্ত্রটিতে পাঁচ জন যাত্রী জন্য মোট ৯৬ ঘন্টা লাইফ সাপোর্ট ছিল। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৫.৫ কিলোমিটার।