কলকাতা: রাজ্য তো উত্তাল, আর এরই সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চাপ বাড়াচ্ছে দেশ তথা বিশ্ব। হ্যাঁ আমরা আরজি কর কাণ্ডের কথা বলছি। আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিবাদ এখন রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশ তথা বিশ্বের গণ্ডিতে পৌঁছে গিয়েছে। আর এই ঘটনায় রীতিমত চাপে পড়েছে রাজ্য সরকার। যদিও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের তরফ থেকে অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে আবার মিছিল করা হচ্ছে জেলায় জেলায়।
আরজি কর কাণ্ড নিয়ে যখন চিকিৎসক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষেরা আন্দোলনে নেমেছেন সেই সময় আচমকা দেখা যায় ৪৩ জন চিকিৎসকের অন্যত্র বদলির (Doctors Transfer) নির্দেশ বেরিয়েছে। এই ঘটনার খবর চাউর হতেই রীতিমতো আরও ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন সাধারণ মানুষেরা। তাদের মনে জায়গা করে নেয়, আন্দোলনের জেরেই বদলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওই সকল চিকিৎসকদের।
যদিও এমন বদলির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পরিপ্রেক্ষিতে মমতা সরকারের স্বাস্থ্য ভবন রুটিন বদলি বলেই দাবি করেছে। এমনকি দুমাস আগে এই বদলির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল বলেও দাবি করা হচ্ছে। তবে গত ১৬ আগস্ট অর্থাৎ শুক্রবার ৪৩ জন ডাক্তারকে বদলির যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল সেই বিজ্ঞপ্তি স্বাস্থ্য ভবন যতই রুটিন বদলি বলে দাবি করুক না কেন, তা সাধারণ মানুষ এবং চিকিৎসক মহলে আলাদা বার্তা পৌঁছে দিয়েছে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে যখন ক্ষোভের আগুন আরও চওড়া হচ্ছে সেই সময় স্বাস্থ্য ভবন ওই বদলির বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করল। শুক্রবার জারি করা বদলির বিজ্ঞপ্তি ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই শনিবার প্রত্যাহার করে নিল স্বাস্থ্য ভবন। এমন বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করার কারণ হিসাবে স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, বিতর্ক না বাড়িয়ে এখন পরিষেবা প্রয়োজন আর সেই কারণে বদলির নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়াও রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের দায়িত্ব সামলান। এমন পরিস্থিতিতে যখন চিকিৎসকদের উপর এমন ঘটনা বারবার ঘটে চলেছে সেই সময় রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করছে। তার পদত্যাগের দাবিতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় চলছে একের পর এক আন্দোলন। যদিও তৃণমূলের তরফ থেকে দাবী করা হচ্ছে, আর জি করের ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি তৃণমূলকে ক্ষমতা যুক্ত করার জন্য অভিসন্ধি তৈরি করছে।