Mousuni Island: বাঙ্গালিদের প্রিয় মৌসুনি নিয়ে বাড়ছে চিন্তা, কাল হতে পারে ঘুরতে যাওয়া

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

প্রসূন কান্তি দাস: বাঙালি ভ্রমণ প্রিয়। আর তাই মাঝে মাঝেই ঘুরতে বেড়িয়ে পড়তে ইচ্ছে করে। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত যে কোন ঋতুতেই বাধা মানে না ইচ্ছারা। ঘুরতে যাবার জন্য আমরা বেছে নি সেই আবহাওয়ার উপযুক্ত জায়গাগুলিকে। ঠিক যেমন এখন বর্ষাকাল তাই জঙ্গলে যাওয়া একেবারেই নিষিদ্ধ। কিন্তু পাহাড় এবং সমুদ্রে উপছে পড়ছে পর্যটকদের ভিড়। কেউ যাচ্ছেন পাহাড়ী বর্ষার আনন্দ উপভোগ করতে। আবার কেউ যাচ্ছেন সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাসের মজা নিতে। সমুদ্রের নাম মনে পড়লেই সবার আগে যেটা মনে আসে তাহলো দীঘা অথবা পুরীর সমুদ্র। কিন্তু বর্তমানে আরো একটি দ্বীপপুঞ্জ পর্যাটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। যার নাম মৌসুনি দ্বীপ (Mousuni Island)। প্রিয় মৌসুনি নিয়ে বাড়ছে চিন্তা, কাল হতে পারে ঘুরতে যাওয়া।

Advertisements

বাঙালির সব সময় পছন্দের ভ্রমণ স্থল দিপুদার পাশাপাশি জায়গা করে নিচ্ছে মৌসুনি দ্বীপও (Mousuni Island)। তাই বছরের সবসময়ই এই দ্বীপপুঞ্জে লেগে থাকে পর্যটকদের ভিড়। অল্প সময়ের মধ্যে ঘুরে আসার জন্য পর্যটক বেছে নিচ্ছেন এই দ্বীপপুঞ্জটিকে। কিন্তু এই মুহূর্তে পর্যটকদের জন্য একেবারেই নিরাপদ নয় এই মৌসুনি দ্বীপ। সম্প্রতি এই দ্বীপপুঞ্জে দেখা গেছে ভাঙ্গন। চিন্তার ছাপ পর্যটন শিল্পের কর্মকর্তাদের কপালেও। কিছুদিন আগেই চলছিল নিম্নচাপ, তার উপরে যুক্ত হয় পূর্ণিমার ভরা কোটাল। সব মিলে জলের দাপটে ভেঙ্গে যায় মৌসুনি দ্বীপের পাড়। ছোটখাটো কোন ভাঙ্গন নয়, ভেঙে গেছে প্রায় ৮০০ মিটারের নদীর বাঁধ। বর্তমানে মৌসুনি দ্বীপের আশপাশের এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। নদীর এই ভয়াবহ অবস্থা দেখে আতঙ্কিত এলাকাবাসীসহ কর্মকর্তারাও।

Advertisements

তিন দিকে জলবেষ্টিত একটি ছোট্ট দ্বীপ হলো মৌসুনি দ্বীপ (Mousuni Island)। একদিকে বঙ্গোপসাগর, একদিকে মুড়িগঙ্গা, আরেকদিকে রয়েছে চিনাই নদী। জলরাশির কারণে প্রত্যেক বছরই বর্ষার সময় আতঙ্কে থাকেন মৌসুনি দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দারা। চারিদিকে বিপুল জলরাশি থাকা সত্বেও কোন কংক্রিটের বাঁধ দেওয়া নেই এই এলাকায়। প্রতি বছরই বর্ষার সময় সামান্য হলেও ভাঙ্গন দেখা দেয় নদীতে। নোনা জল ঢুকে নষ্ট হয়ে যায় চাষের জমি। পর্যটকদের জন্য তৈরি করা কটেজগুলিও। কিন্তু এইবারে নদী ভাঙ্গন যেন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। যদি অবিলম্বে এই বাধ সারাই করা না হয় তাহলে মৌসুনি দ্বীপ হয়তো এবার জলের তলাতেই চলে যাবে।

Advertisements

আরও পড়ুন ? Offbeat Tourist Destinations: খরচ নামমাত্র! দু’দিনেই ঘুরে আসুন বাংলার মিনি গোয়া থেকে

নদী ভাঙ্গনের খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন নামখানা বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মদক্ষ। তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাধ মেরামতির বিষয়ে গ্রহণ করেছেন পদক্ষেপ। স্থানীয়দের তিনি আশা দিয়েছেন খুব শীঘ্রই বাধ মেরামতি করে এই সমস্যার সমাধান করা হবে। কিন্তু পূর্ণিমার ভরা কোটালের ফলে যে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সেই জল যদি আরো বাড়তে থাকে তাহলে ঠিক কি পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে তা ভেবে আতঙ্কেই দিন কাটছে স্থানীয়দের। বাধ মেরামতির আশ্বাস পাবার পরও এক মুহূর্তের জন্য নিশাচিন্ত হতে পারছেন না তারা। এই মুহূর্তে প্রাণ বাঁচানোটাই তাদের কাছে সব থেকে বড় চিন্তার বিষয়। সরকারের পক্ষ থেকে বাধ মেরামতির বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সাধারণ মানুষের মনকে শান্ত করা যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে পরিস্থিতি কিছুটা হাতের বাইরেই রয়েছে সরকারের।

মৌসুনি দ্বীপের (Mousuni Island)। এই ভাঙ্গন প্রতি বছরের ঘটনা। তাই সাধারণ বাধ এই পরিস্থিতি সামাল দিতে একেবারেই অপারগ। স্থানীয়দের মতে এখানে একমাত্র কংক্রিটের বাধই পারবে এই পরিস্থিতি সামাল দিতে, তাদের সুরক্ষিত করতে। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন তাদের থাকার কোন নির্দিষ্ট জায়গাই নেই। প্রত্যেক বছর বৃষ্টির সময় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তাদেরকে নিজেদের বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যেতে হয়। কতদিন বাড়ি ছেড়ে এইভাবে থাকা যায়? প্রতিবছর অনিশ্চয়তার মধ্যে ডুবে থাকতে হয় মৌসুনির প্রায় কয়েকশো পরিবারকে। আর এইভাবে অনিশ্চয়তার মধ্যে কতদিনই বা বাঁচা যায়? মৌসুমীর অবস্থা সংশোধন করতে চাইলে কংক্রিটের বাধই একমাত্র উপায়। এখন সরকার কবে বাধ তৈরির পরিকল্পনা নেয় সেই দিকেই তাকিয়ে আছে মৌসুনি দ্বীপের স্থায়ী বাসিন্দারা।

Advertisements