রাগি মাসির হোটেল, সুস্বাদু খাবারের সঙ্গে জোটে গালাগালও, হেসে ফেলেন খরিদ্দাররা

নিজস্ব প্রতিবেদন : হোটেল হোক অথবা অন্য কোন দোকান। ব্যবসায়িক জায়গায় সাধারণত হোটেল মালিকদের মুখমিষ্টি মন জয় করে খরিদ্দারদের। তবে এই বাংলাতেই এমন একটি হোটেল রয়েছে যেখানে সুস্বাদু খাবার যেমন পাওয়া যায় সেই রকমই খরিদ্দারদের কপালে জোটে গালাগালও। ভাবতে অবাক লাগলেও রাগী মাসির হোটেলে গাল খেয়ে মুচকি হাসতে বাধ্য হন খেতে আসা খরিদ্দাররা।

আজব এই হোটেলটি রয়েছে রাসবিহারী রোডে। রাজবিহারী রোডের ব্যস্ততার মাঝেই বহু খরিদ্দার দুপুরের লাঞ্চ সারতে আসেন সেখানে। রাগি মাসির হোটেলের খাবার ওই সকল খরিদ্দারদের কাছে এক নম্বর হওয়ার পাশাপাশি তাদের মাঝে মাঝেই খেতে হয় গালিগালাজ। তবে এই গালিগালাজ তাদের কাছে অমৃত সমান।

তবে প্রশ্ন হল, যেখানে অন্যান্য দোকানদার বা হোটেল মালিকদের মুখমিষ্টিতে ক্রেতাদের মন জয় করতে দেখা যায় সেই জায়গায় কেন রাগী মাসির হোটেলে রেগে যান তিনি? এই বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, “রেগে যাব না? রাগালে তো রাগবই। কতক্ষণ ধৈর্য ধরে রাখা যায়? ধৈর্যের তো একটা সীমা আছে। আমাকে রাগানোর জন্য ইচ্ছে করে সকলে আমার পিছনে লাগে। কাস্টমাররা বলে আমার গালাগাল না শুনলে নাকি ভাত হজম হয় না। রেগে গেলে আমি কাউকে ছাড়ি না। আমার বাবাকেও ছাড়ি না।”

রাগি মাসির এই হোটেলে একটু বেলা গড়ালেই পাওয়া যায় কালো জিরে, পাঁচফোড়ন দিয়ে কাতলা মাছের ঝোল, আলু বেগুনের চচ্চরি, মুরগির ঝোল আরও কতকি। তার হোটেলে ৪০ টাকাতেই পাওয়া যায় মাছ ভাত। শুধু ক্রেতারা নন পাশাপাশি কাজের ক্ষেত্রে কোন রকম গন্ডগোল হলে দোকানের কর্মচারীরাও গালমন্দ খেতে বাদ যান না।

তবে এই মাসি যতই গালমন্দ করুক না কেন মনের দিক থেকে তিনি খুবই নরম। আবার মনের দিক থেকে নরম হলেও কাজের দিক থেকে দশভূজা। প্রতিদিন সবজি কেনা থেকে শুরু করে কুটো, রান্না করা, আবার সেই সকল রান্না তার খরিদ্দারদের পরিবেশন করা সবকিছুই একা হাতে সামলে থাকেন। সোনারপুর থেকে ভোরের ট্রেনে বালিগঞ্জ এসে তিনি তার ব্যবসা চালান। তবে এখন বয়সের ভারে তার এই ডেলি প্যাসেঞ্জারি খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে।