পুজো থেকে বিসর্জন, দুর্গাপূজা নিয়ে ১১ দফা গাইডলাইন রাজ্য সরকারের

নিজস্ব প্রতিবেদন : হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন, তারপরেই বাঙ্গালীদের সবথেকে বড় উৎসব দুর্গাপূজো। তবে এবছরের পুজো অন্যান্য বছরের তুলনায় সম্পূর্ণ ভিন্ন। করোনাকালে এই ভিন্ন অবস্থায় কিভাবে সুষ্ঠুভাবে দুর্গাপুজো সম্পন্ন করা যায় তাই এখন সরকারের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জকে মাথা পেতে নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সোমবার দুর্গা পূজোয় কি কি করা যাবে, কি করা যাবেনা, সংক্রমণ ঠেকাতে কি কি মেনে চলা উচিত সেই সংক্রান্ত ১১ দফা একটি গাইডলাইন প্রকাশ করা হলো। এই গাইডলাইনে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পুজো থেকে অঞ্জলি, বিসর্জন সব ক্ষেত্রে সুরক্ষা ব্যবস্থা বজায় রাখতে কি কি মেনে চলা উচিত।

১) প্যান্ডেলের ক্ষেত্রে খোলামেলা প্যান্ডেল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সিলিংয়ের ব্যবস্থা রেখে চারদিক খোলা রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে চারদিকে দেওয়ালের ব্যবস্থা করা হলে সিলিং খুলে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে এমনটা জানানো হয়েছে।

প্যান্ডেলের মধ্যে প্রবেশ করার জন্য এবং বাইরে বের হওয়ার জন্য আলাদা আলাদা গেটের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্যান্ডেলের ভিতরে যথেষ্ট জায়গা রাখতে হবে যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যায়। প্রয়োজন পড়লে সাদা গোল দাগ কেটে দিতে হবে। কোনভাবেই বিল অথবা জমায়েত করতে দেওয়া যাবে না।

২) প্যান্ডেলে প্রবেশ করার জন্য দর্শনার্থীদের মাস্ক ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। যদি কোন দর্শনার্থী মাস্ক না পরে আসেন তাহলে ওই দর্শনার্থীকে প্যান্ডেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে মাস্ক দেওয়া বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। প্যান্ডেল এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকা স্যানিটাইজ করতে হবে। মোটের ওপর মাস্ক না ব্যবহার করলে প্যান্ডেলে প্রবেশ করা যাবে না।

৩) অতিরিক্ত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে পুজো উদ্যোক্তাদের অঞ্জলি থেকে শুরু করে সিন্দুর খেলা পর্যন্ত পরিকল্পনা অনুযায়ী সবকিছু করতে হবে। কোনভাবেই কোন ক্ষেত্রে ভিড় করা যাবে না। পুরোহিত মাইকে মন্ত্র পড়বেন এবং দর্শনার্থীরা প্রয়োজনে বাড়ি থেকে ফুল নিয়ে আসবেন।

৪) পুজো মণ্ডপ অথবা তার আশেপাশে কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।

৫) সেরা পুজো বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিচারকরা পুজো মণ্ডপে এসে ভিড় করতে পারবেন না। বড়জোর দুটো গাড়ি নিয়ে এসে তারা পূজামণ্ডপ দেখে সবকিছু নির্বাচন করতে পারবেন। আর এই নির্বাচনের সময় সকাল ১০ টা থেকে দুপুর তিনটে পর্যন্ত।

৬) পুজো উদ্যোক্তাদের নিজেদের পুজো প্রচারের পাশাপাশি নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রসঙ্গে প্রচার করতে হবে।

৭) পুজোর উদ্বোধন থেকে বিসর্জন সবকিছু করতে হবে হাতেগোনা লোক নিয়ে। উদ্বোধন অনুষ্ঠান ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিসর্জনের ক্ষেত্রে প্রশাসনের সাথে পরামর্শ নিয়ে সুষ্ঠু ভাবে তা পরিকল্পনা মতো পড়তে হবে।

৮) পূজো সংক্রান্ত নানান অনুমোদন নিতে হবে অনলাইনে।

৯) ভিড় এড়ানোর জন্য পুজো উদ্যোক্তারা ইচ্ছে করলে তৃতীয়ার দিন থেকে দর্শনার্থীদের জন্য প্যান্ডেল দর্শনের সুযোগ করে দিতে পারবেন।

১০) এবছর করোনাকালে অন্যরকম পুজো কার্নিভাল করা হবে না।

১১) পুজো উদ্যোক্তাদের বিনামূল্যে দমকল বাহিনীর অনুমোদন দেওয়া হবে। পাশাপাশি বিদ্যুতের বিলে ৫০% ছাড় দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি পুজো উদ্যোক্তাদের ৫০ হাজার টাকা করে অনুমোদন দেবে রাজ্য সরকার।