Where does India vs Maldives stand in terms of military power: গত বছরের শেষের দিক থেকে আমাদের ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন কারণ কে কেন্দ্র করে লাক্ষাদ্বীপ ও মালদ্বীপ বিতর্কের শুরু হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে মালদ্বীপের মন্ত্রী দের পক্ষ থেকে প্রায়ই একটি যুদ্ধর পরিবেশ তৈরি করার মতো একের পর এক উস্কানি মূলক মন্তব্য করা হয়েছে। সত্যিই যদি যুদ্ধ বাঁধে তবে কি ভারতের সঙ্গে সামরিক দিক থেকে পাল্লা দিয়ে উঠতে পারবে এই দ্বীপ রাষ্ট্র? এর আগে অবশ্য কখনো ভারত মহাসাগরের বুকে অবস্থিত এই দ্বীপ রাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কোনো বিরোধ বাঁধেনি। বরং বরাবর ভারত বিভিন্ন প্রয়োজনে মলদ্বীপের পাশে থেকেছে। কিন্তু প্রশ্ন এসেই যায় তবে এই বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্কের মাঝে এই দুই দেশের (India vs Maldives) যুদ্ধের বাতাবরণ ই বা সৃষ্টি হচ্ছে কেন?
সে প্রসঙ্গে জানা যাচ্ছে গত নভেম্বর মাসে মলদ্বীপে ক্ষমতায় আসেন চিনপন্থী প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু আসায়। তিনি ক্ষমতায় এসে ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারকে সামনে রেখেছেন। ক্ষমতা দখল করার পর তিনি একের পর এক ভারত বিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছেন। সেখানে অবস্থান করা ভারতীয় সেনার দলকে মলদ্বীপ ছাড়ার জন্য ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছেন তিনি। মলদ্বীপকে ‘ভারতের প্রভাবমুক্ত’ করা লক্ষ্যে চিনকে আমন্ত্রণ করে আনছেন তিনি। এই সব কারণেই তিনি দ্বীপ রাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারত ও মলদ্বীপের কুটনৈতিক সম্পর্ক একেবারে অবনতির দিকে এগিয়ে গেছে।
এই অবস্থায় যদি ভারত ও মালদ্বীপ (India vs Maldives) এর যুদ্ধ বাঁধে, তবে আগে থেকেই দেখে নেওয়া প্রয়োজন সামরিক শক্তিতে কোন দেশের অবস্থা ঠিক কেমন। চলতি বছরের শুরুর দিকে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার সংস্থা বিশ্বের সমস্ত দেশ গুলির সামরিক শক্তির ভিত্তিতে একটি সমীক্ষা করেছিল। সেই সমীক্ষা অনুসারে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের সেরা সামরিক শক্তি সম্পন্ন দেশ গুলির মধ্যে ভারত রয়েছে পঞ্চম স্থানে। মোট ১৪৫ টি দেশের তালিকায় সবশেষে নাম রয়েছে ভুটানের। বিশেষ উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো যে দ্বীপ রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে সামরিক সংঘাতে যেতে চাইছে তাদের ক্ষমতা এতটাই কম যে ১৪৫ টি দেশের তালিকায় তাদের স্থান হয়নি।
আরও পড়ুন ? On Account Budget: ‘কত ধানে কত চাল’, এবার বুঝবে মালদ্বীপ, বাজেটে হয়ে গেল বড় ঘোষণা
মলদ্বীপকে সামরিক দিক থেকে অত্যন্ত শক্তিশালী ভারতের সঙ্গে তুলনা করা না গেলেও মলদ্বীপের সামরিক বাহিনী আছে। তাদের সামরিক বাহিনীর নাম মলদ্বীপ ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স। এই বাহিনীর তিনটি শাখা হল মলদ্বীপ কোস্ট গার্ড, এমএনডিএফ মেরিন কর্পস এবং স্পেশাল ফোর্স। কোস্ট গার্ড হল মলদ্বীপ ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের নৌবাহিনী বা সামুদ্রিক শাখা। তাদের তিনটি ‘ট্র্যাকার এমকে ২ ক্লাস’ টহলদারী নৌকা, ১টি ‘ট্র্যাকার ক্লাস’ টহলদারী নৌকা, ১টি ‘১৭ এম ক্লাস’ টহলদারী নৌকা, ১টি ড্যাগার ক্লাস টহলদারী নৌকা, ১টি শেভারটন ক্লাস টহলদারী নৌকা, ২টি ইজরায়েলি ডভোরা ক্লাস ফাস্ট টহলদারী নৌকা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের জলযান রয়েছে। ১টি নিকোবর শ্রেণীর টহলদারী জাহাজ রয়েছে, যেটি আবার ভারতেরই উপহার দেওয়া।
মালদ্বীপ জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর গ্রাউন্ড কমব্যাট ফোর্স কে বলা হয় এমএনডিএফ মেরিন কর্পস। এরা সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। আর স্পেশাল ফোর্সেস শাখাগুলি বিভিন্ন সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা ও পরিচালনা করার জন্য ব্যবহার করা হয়। তাদের হাতে বেলজিয়ামের ব্রাউনিং হাইপাওয়ার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এম১৯১১ পিস্তল, মার্নি যুক্তরাষ্ট্রের এম৪ কার্বাইন, সুইডেনের কার্ল গুস্তাফ ৮.৪ সেমি রিকোয়েললেস রাইফেল, রাশিয়ার তৈরি আরপিজি-৭ এবং একে-১০৩, সুইজারল্যান্ডের এসআইজি সয়ের পি২২৬, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সিএমপি ৯, রাশিয়ার একে-৪৭, পিকে মেশিনগান ইত্যাদি আরো কিছু আগ্নেয়াস্ত্র আছে। তবে তাদের এই সামরিক শক্তি ভারতের (India vs Maldives) সাথে কোন তুলনাতেই আসে না। যদিও জানা যাচ্ছে চীন এবং পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে লড়াই করতে মলদ্বীপকে সহযোগিতা করতে পারে। তবে আশা করা যাচ্ছে সরাসরি যুদ্ধ করার মতো নির্বুদ্ধিতা তারা নাও করতে পারে।