খালাসী থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক, কয়লা মাফিয়া রাজুর উত্থান হার মানাবে সিনেমাকেও

Shyamali Das

Published on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : আসল নাম রাজেশ ঝাঁ, পরিচিতি লাভ করেছেন রাজু ঝাঁ (Raju Jha) নামে। রুপালি পর্দার চরিত্রের মতোই উত্থান হয় এই কয়লা মাফিয়ার (Coal Mafia)। রুপালি পর্দার মতো যেমন উত্থান ঠিক সেই রকমই রূপালী পর্দার মতোই শেষ হতে হলো তাকে। শনিবার সন্ধ্যাবেলায় বর্ধমানের শক্তিগড়ে তাকে শুট আউট করে খুন করা হয়। শরীরের সাতটি বুলেট তাকে ঝাঁঝরা করে দেয় মুহূর্তে।

Advertisements

রাজু ঝাঁ বিহারের দ্বারভাঙা এলাকার বাসিন্দা। পরবর্তীতে তিনি দুর্গাপুরে চলে আসেন। তার উত্থান হয় রানীগঞ্জ থেকে। প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন সামান্য একজন কয়লার ট্রাকের খালাসী। সেখান থেকেই যে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠবেন তিনি তা কেউ ভেবে উঠতে পারেননি। রাজুর এমন কারনামা শুরু হয়েছিল ২০০৩-০৪ সাল থেকে।

Advertisements

রাজু ঝাঁ অর্গানাইজড ভাবে কয়লা পাচার করার জন্যই আজ এই জায়গায় এসে পৌঁছান। বেআইনি কয়লাকে অর্গানাইজড ভাবে ট্রান্সপোর্ট করার কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। সেই সময় কাল থেকেই তিনি কয়লা মাফিয়া হিসাবে পরিচিত লাভ করেন। এমনকি তাকে পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হতে হয়েছিল। খুনি থেকে অবৈধভাবে কয়লা তুলে পাচার করার ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে নাম ছিল রাজুর। সূত্র মারফত এমনটাই জানা যায়।

Advertisements

অন্ডাল থেকে ডানকুনি পর্যন্ত চলত তার রাজত্ব। প্যাড ব্যবহার করে দিনের পর দিন টন টন কয়লা চলে যেত এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। পশ্চিম বর্ধমান ছাড়াও বীরভূমের বিভিন্ন জায়গায় তার নামে নানান অভিযোগ রয়েছে। বেআইনি কয়লা পাচারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৬ সালে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং বেশ কয়েকদিনের জন্য জেল খাটেন। কয়লা সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগের জন্য ২০১১ সালের ৩ জুলাই ফের গ্রেপ্তার করা হয় রাজুকে। এর পাশাপাশি আরও একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি।

২০০৬ সাল থেকে রাজু দুর্গাপুরে ধীরে ধীরে নিজের ব্যবসা গোছাতে শুরু করেন। শপিংমল, রেস্তোরাঁ, পার্কিং প্লাজা, শাড়ির দোকান, হোটেল সবকিছুই রয়েছে তার। এইসব ব্যবসার কিছু নিজের নামে এবং কিছু বকলমে রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে সূত্র মারফৎ। জানা যাচ্ছে বেআইনি কয়লাকে অরগানাইজড ভাবে পাচার করার জন্য তার দায়িত্ব ছিল অন্ডাল থেকে মগরা পর্যন্ত।

সূত্রের খবর ২০০৭ সালে তিনি তার এমন দাপটকে আরও বৃদ্ধি করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। সেই সময় যে সকল ছোট ছোট মাফিয়া গ্রুপ ছিল তাদের একত্রিত অর্থাৎ সংগঠিত করেছিলেন। জানলে অবাক হবেন, একসময় তার ব্যবসার টার্নওভার ছিল প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা। অবৈধ কয়লা পাচার এবং অন্যান্য ব্যবসার পাশাপাশি রাজু হাত পাকিয়েছিলেন ভলভো গাড়ির ব্যবসাতেও। তিনিই প্রথম দুর্গাপুরে ভলভো বাস পরিষেবা চালু করেছিলেন বলে জানা যায়।

Advertisements