নিজস্ব প্রতিবেদন : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯ (CAA) নিয়ে প্রথম থেকেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে দেশে। এই সংক্রান্ত বিল যেদিন সংসদে পেশ করা হয়েছিল সেদিন থেকেই উত্তাল হতে দেখা গিয়েছিল দেশের বিভিন্ন প্রান্তকে। তবে সেসবকে উপেক্ষা করেই কেন্দ্র সরকার নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করে বিলকে আইনে পাশ করেছে এবং শেষমেষ গত সোমবার এই আইন দেশজুড়ে লাগু করা হয়।
দেশজুড়ে আইন লাগু হওয়া একেবারেই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বলেই মনে করছেন অনেকেই। কেননা এই আইনের সুবিধা পেতে বছরের পর বছর ধরে তাকিয়ে রয়েছেন অন্যান্য দেশ থেকে শরণার্থী হিসেবে আসা অনেক মানুষেরা। তবে এই আইনের সুবিধা কেন পাবেন না মুসলিমরা? কেন বেছে বেছে তাদের বাদ দেওয়া হল? এবার সেই বিষয়টি খোলসা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (CAA Explain by Amit Shah)।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯ এ ঠিক কি বলা হয়েছে? বলা হয়েছে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ থেকে আগত হিন্দু, খ্রিস্টান, পারসি, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষেরা পাঁচ বছর শরণার্থী হিসাবে এবং এক বছর টানা বসবাস করার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদন খতিয়ে দেখে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন ? CAA Document: ভারতের নাগরিকত্ব পেতে কী কী ডকুমেন্ট লাগবে, যতটা সহজ ভাবছেন ততটা নয়, রইল তালিকা
এক্ষেত্রে খ্রিস্টান এবং পারসি ধর্মের উত্থান ভারত থেকে না হলেও তারাও সুবিধা পাবেন। এমনকি বিশ্বের অনেক দেশেই এই ধর্মের মানুষদের বসবাস রয়েছে। যে কারণে ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে কোন দেশ থেকে তারা বিতাড়িত হলে অন্যান্য অনেক দেশে ঠাঁই পেতে পারেন। তবে অমিত শাহ জানিয়েছেন, খ্রিস্টান ও পারসি ধর্মের উত্থান ভারত না হলেও তারা অখন্ড ভারতেরই অংশ। আর অখন্ড ভারতে তাদের বসবাসের জন্য আলাদা করে কোন জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে মুসলিমদের জন্য অখণ্ড ভারতে বসবাসের আলাদা জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে।
অমিত শাহের কথায়, অখণ্ড ভারত বর্তমানের পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, মায়ানমার, তিব্বত সবকিছু নিয়েই ছিল। কিন্তু মুসলিম জনসংখ্যার কারণে আজ আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ভারতের অংশ নয়। এই সমস্ত এলাকা নির্দিষ্ট করে মুসলিমদের বসবাসের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে যারা অখন্ড ভারতের অংশ এবং ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার, যাদের নির্দিষ্ট করে বসবাসের কোন জায়গা নেই তাদের বসবাসের জায়গা করে দেওয়া সরকারের নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব।