নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারত তৃতীয়বারের জন্য চন্দ্রাভিযানে নেমেছে। ভারতের এই চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) এখন কেবল সফলতার জন্য হাতছানি দিচ্ছে। হাতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আর তারপরেই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram) প্রজ্ঞানকে সঙ্গে নিয়ে অবতরণ করবে। চন্দ্রযান ৩ অভিযানে ল্যান্ডার বিক্রমের ওজন ১৭৫২ কেজি আর প্রজ্ঞানের ওজন ২৫ কেজি। ল্যান্ডার বিক্রম, প্রজ্ঞান এসব নিয়ে চন্দ্রযান ২ থেকেই অনেকে অনেক কিছু জেনেছেন। তবে প্রশ্ন হলো চন্দ্রযানের ক্ষেত্রে যে সকল ল্যান্ডার ব্যবহার করা হয় তাদের নাম কেন বিক্রম?
গত ১৪ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরি কোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে যে চন্দ্রযান ৩ সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল সেই রকেটের ওজন ছিল প্রায় চার হাজার কেজির এলভিএমথ্রি মার্ক ৪। এর সঙ্গেই মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিল ১৭৫২ কেজি ওজনের বিক্রম এবং ২৫ কেজি ওজনের প্রজ্ঞান। এছাড়াও সঙ্গী হিসেবে ছিল ২১৪৮ কেজি ওজনের প্রোপালাসন মডিউল। তবে বর্তমানে এখন বিক্রম সবাইকে ছেড়ে চাঁদের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে।
ISRO এখন থেকেই আশাবাদী এবারের চন্দ্রাভিযান অর্থাৎ চন্দ্রযান ৩ ইতিহাস গড়বে। ইতিহাস গড়ার হাতছানি ২০১৯ সাল থেকেই ছিল ইসরোর হাতে। তবে ২০১৯ সালের চন্দ্রযান ২ শেষ মুহূর্তে এসে সামান্য গন্ডগোল করে ফেলায় ল্যান্ড স্পেস সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আর এই ইতিহাস গড়ার হাতছানির দিকে তাকিয়েই ইসরোর তরফ থেকে ল্যান্ডারের নাম রাখা হয়েছে বিক্রম। আর এই বিক্রম নামের কারণ জানলে আপনিও শ্রদ্ধায় মাথা নত করবেন।
ডঃ বিক্রম আম্বালাল সারাভাই (Doctor Vikram Ambalal Sarabhai) এর নামানুসারেই চন্দ্রযানের ল্যান্ডারের নাম দেওয়া হয়েছে বিক্রম। তিনি ছিলেন ইসরোর প্রাণপুরুষ। তাকে শ্রদ্ধা জানাতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরো এবং চন্দ্রযানের ল্যান্ডারের নাম রাখা হয়েছে বিক্রম। বিজ্ঞানী বিক্রম আম্বালাল সারাভাই আমেদাবাদে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাকে ভারতের অন্তরীক্ষ গবেষণার জনক বলা হয়।
বিজ্ঞানী বিক্রম সারাভাই কেমব্রিজ থেকে ফিরে আসার পর নিজের পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবদের সহযোগিতায় ১৯৪৭ সালের ১১ নভেম্বর আমেদাবাদে গড়ে তোলেন ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি (PRL)। ১৯৬৬ সালে তিনি তৈরি করেন আমেদাবাদ কমিউনিটি সায়েন্স সেন্টার। যেটি বর্তমানে বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টার নামে পরিচিত। পরিবর্তিকালে তিনি অ্যাটোমিক এনার্জি কমিশনের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। এসব ছাড়াও তিনি একাধিক প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। এমন একজন মহান বিজ্ঞানী ১৯৬৬ সালে পদ্মভূষণ এবং ১৯৭২ সালে মরণোত্তর পদ্মবিভূষণ সম্মান পান।