লকডাউনে হাওড়া থেকে ৩৬৭ কিমি হেঁটে বাড়ির পথে ১৮ শ্রমিক

হিমাদ্রি মণ্ডল : দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। নেই কোনো যানবাহন, স্তব্ধ যোগাযোগ ব্যবস্থা। দেশের সাধারণ মানুষদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দেশকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে। তবে এমত অবস্থায় বেশ কিছু মানুষ, বিশেষ করে শ্রমিক সম্প্রদায় ভিন রাজ্য বা ভিন জেলায় আটকে পড়ে বিপদে পড়েছেন। কারণ এই লকডাউনের পরিস্থিতিতে তাদের কাছে থাকা টাকা-পয়সাও প্রায় শেষের দিকে। এখন বাড়ি আসার তাগিদ দেখা দিয়েছে তাদের মধ্যে।

সেরকমই ১৮ জন শ্রমিক হাওড়া থেকে ৩৬৭ কিমি হেঁটে ঝাড়খন্ডের গোড্ডা যাচ্ছিলেন। তারা হাওড়াতে এক ঠিকাদার সংস্থায় রাস্তা তৈরীর কাজ করছিলেন। লকডাউনের পর যানবাহন না পেয়ে হেঁটেই বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি ফেরার পথে শনিবার তারা রাস্তায় সিউড়ীর সরকারি বাসস্টান্ডে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সেসময় স্বাস্থ্য দপ্তরের টিম তাদের গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর শরীরের তাপমাত্রা বেশী থাকায় ৬ জনকে সিউড়ী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের আইশোলেসন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়, বাকি ১২ জনকে সরকারি ননহোম কোয়ারান্টিনে পাঠানো হয়। ওই ১২ জনের ফের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর ঝাড়খন্ডের গোড্ডা পাঠানোর ব্যাবস্থা করবে প্রশাসন।

পায়ে হেঁটে শুধু হাওড়া থেকে ঝাড়খন্ডের গোড্ডা নয়, হাওড়া থেকে মূর্শিদাবাদের ধূলিয়ান রওনা দিয়েছিল আরও একটি দল। তারাও সিউড়ীর ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে যখন হেঁটে যাচ্ছিলেন স্থানীয় যুবকরা তাদের বসিয়ে টিফিন করান। পরে মুর্শিদাবাদ গ্রামের একটি সবজির গাড়িতে তাদের তুলে দেন। লকডাউনের জেরে এই ভাবেই পায়ে হেঁটে তাদের কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছেন শ্রমিকরা। জাতীয় সড়কে সেইমতো স্থানীয় যুবকরা ঐ সমস্ত শ্রমিকদের জন্য ব্যবস্থা করে রেখেছে খাবার-দাবারের। তার সঙ্গে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বীরভূম জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরে একটি টিম ঘুরে বেড়াচ্ছে সিউড়িতে।

পায়ে হেঁটে আসা শ্রমিকদের দলের এক যুবক জানান, “কোনরকম গাড়ি না থাকায় আমরা পায়ে হেঁটে বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি। হাওড়া থেকে সিউড়ি আসতে আমাদের তিনদিন সময় লাগলো। আমাদের আরো হাঁটতে হবে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য।”