৮ ফুটের অজগর উদ্ধার বীরভূমে

হিমাদ্রি মন্ডল : গরমকাল শুরু হলেই প্রতিবছর নিজেদের এলাকা থেকে লোকালয়ে আসতে দেখা যায় সাপেদের। খাবারের সন্ধানে তারা চলে আসে। আর সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবছরও প্রায় প্রতিদিনই বীরভূমের সিউড়ির বিভিন্ন এলাকা থেকে নানান ধরনের সাপ উদ্ধার হচ্ছে। লকডাউন জারি হওয়ার পর থেকে শ’খানেকের বেশি বিষধর অথবা নির্বিষ সাপ উদ্ধার হয়েছে সিউড়ি এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকায়। ঠিক তেমনি সোমবার একটি ৮ ফুটের অজগর উদ্ধার হল বীরভূমের লম্বোদরপুর এলাকা থেকে। এদিন সাপটি উদ্ধার করেন জাতীয় বন্যজীব অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর সদস্য দীনবন্ধু বিশ্বাস।

সাপটিকে উদ্ধার করার পর সাপটির লেজে আঘাত থাকায় দীনবন্ধু বাবু সাপটিকে সরাসরি নিয়ে যান সিউড়ির পশু হাসপাতালে। সেখানে তার চিকিৎসা করা হয় এবং এরপর বিকালে সাপটিকে নিয়ে যাওয়া হবে সিউড়ি বনদপ্তর অফিসে। সিউড়ি বনদপ্তর অফিসের কর্মীরা সাপটির শারীরিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন সাপটিকে এখনই পুনর্বাসন দেওয়া হবে নাকি তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। কারণ সাপটি উদ্ধার হয় রুগ্ন অবস্থায়।

দীনবন্ধু বিশ্বাস জানান, “অজগরটিকে এলাকার মানুষেরা দেখতে পেয়ে আমাকে ফোন করেন। আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাপটিকে উদ্ধার করি। উদ্ধার হওয়া এই অজগরটি স্ত্রী সাপ। তাকে রুগ্ন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় এবং তার লেজে সামান্য আঘাত থাকায় আমি সরাসরি তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে বনদপ্তরের সহযোগিতায় এর পুনর্বাসন দেওয়া হবে।”

অজগরটি রুগ্ন হয়ে পড়ার কারণ হিসাবে দীনবন্ধু বাবু জানান, “সাপটি যেহেতু স্ত্রী সাপ তাই সে ডিম দেওয়ার পরে ৬০ থেকে ৭০ দিন সেই ডিম আগলে ছিল। যে কারণে দীর্ঘদিন ধরে সঠিক খাবার না পাওয়ায় রুগ্ন হয়ে পড়েছে। এই সময়টি হল অজগর ডিম দেওয়া এবং বাচ্চা হওয়ার। এখন ওই ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়ে যাওয়ার পর ওই স্ত্রী সাপটি খাবারের সন্ধানে এলাকায় ঢুকে পরে। তারপরে স্থানীয়দের চোখে পড়ে অজগরটি।”

দীনবন্ধু বাবু আরও জানান, এর আগেও বীরভূমের বিভিন্ন এলাকা থেকে অজস্র অজগর সাপ উদ্ধার হয়েছে। তিনি নিজেই ৩১টি অজগর সাপ উদ্ধার করেছেন। এছাড়াও বনদপ্তর আরও অনেকগুলি অজগর সাপ উদ্ধার করেছে। এমনকি দিন চারেক আগেই সিউড়ির তিলপাড়া এলাকায় তিনটি অজগর সাপের বাচ্চা দেখতে পান স্থানীয়রা। যদিও সেই সাপগুলি পরে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়।