দীর্ঘ দিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সংসদের দুই কক্ষেই পাশ হয়ে গিয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী বিলটি। বিরোধী দলকে তোয়াক্কা না করেই বিলের পক্ষে ভোটের জোর বেশি থাকায় বিলটি দ্রুত পাশ হয়ে গেল। তাই এবার জয়ের হাসি হাসছে শাসক দল। এবার আইন সংশোধনে কোনও বাঁধা রইলো না। তবে শাসক দলের এই স্বস্তির সময়ে গোটা দেশের মানুষ এখন চর্চায় মেতেছে ওয়াকফের সম্পত্তির পরিমাণ কত, কোথায় কোথায় সম্পত্তি ছড়িয়ে রয়েছে এইসব একাধিক বিষয়। আবার তারই মাঝে এখন চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠলো এক অজানা তথ্য। বাংলার বুকে ইডেন গার্ডেন্স, ফোর্ট উইলিয়াম, মহাকরণ, ও আলিপুর চিড়িয়াখানার অর্ধেক অংশ নাকি ওয়াকফের সম্পত্তির মধ্যে পড়ছে।
এমনটাই কিন্তু দাবি করা হচ্ছে। গোটা দেশের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও ওয়াকফের প্রচুর পরিমাণ সম্পত্তি ছড়িয়ে রয়েছে। ওয়াকফের একাংশের তরফে দাবি করা হয়েছে, কলকাতা বিমানবন্দরের কিছু অংশ রাজভবন, ইডেন গার্ডেন্স, ফোর্ট উইলিয়াম, মহাকরণ, আলিপুর চিড়িয়াখানার অর্ধেক অংশ নাকি ওয়াকফ সম্পত্তি। মোহনবাগান, ইস্ট বেঙ্গল ও মহামেডান ক্লাবের জমিও তালিকা থেকে বাদ যায়নি। সম্প্রতি বিজেপি মুখপাত্র কেয়া ঘোষও এই বিষয়ে মুখ। তার কথায়, তৃণমূলের এক বিধায়ক তথা ধর্মীয় নেতার তরফে স্পষ্টত দাবি উঠেছিল ইডেন গার্ডেন্স থেকে রাজভবন এমনকি গোটা দক্ষিণ কলকাতাই নাকি ওয়াকফ সম্পত্তি। কিন্তু তার দাবির সাপেক্ষে যথাযথ কোনও প্রমাণ মেলেনি।
আরও পড়ুন: Sealdah Station: চিনতেই পারবেন না এই শিয়ালদহ স্টেশনকে! বাংলার নববর্ষের ছোঁয়া সেখানেও
বেশ কিছুদিন আগে রাজ্যসভায় বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যের ওয়াকফ সম্পত্তির পরিমাণকে কেন্দ্র করে। তার তরফে প্রশ্ন করা হয়েছিল রাজ্যের ওয়াকফ সম্পত্তির মধ্যে কত অংশ সম্পত্তিকে শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে? কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়নমন্ত্রী কিরণ রিজিজুর তরফে স্পষ্টত উত্তর দেওয়া হয়েছিল, রাজ্যে মোট ৮০,৫৪৮ সংখ্যা ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে। এখন ৩৮০টি ওয়াকফ সম্পত্তি দখলে রয়েছে।ওয়াকফ বোর্ডের তরফে সেগুলির জন্য ভাড়াও নেওয়া হয়।
আবার কলকাতার দুই রাজকীয় ক্লাব একটি হল রয়্যাল ক্যালকাটা গলফ ক্লাব ও অপরটি হল টলিগঞ্জ ক্লাব দুটোই নাকি ওয়াকফ সম্পত্তির ওপরে অবস্থিত এমনটাই জানা গিয়েছে কেন্দ্রের তথ্য থেকে। মোটা টাকা ভাড়া গুনতে হয় এই দুই ক্লাবের জন্য। প্রতিবছর মোট ১৮ লক্ষ ৮৮ হাজার ২২৪ টাকা দিতে হয় দুই ক্লাবকে ভাড়া বাবদ। তবে কিরণ রিজিজুর তরফে প্রকাশ করা হয়েছে কোন কোন ওয়াকফ সম্পত্তি সাধারণ মানুষের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।
বাংলার বুকে ৪টি মডেল ইংলিশ মিডিয়াম মাদ্রাসা ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। মুসলিম পুরুষ ও মহিলাদের জন্য থাকার জন্য হস্টেল তৈরি হয়েছে ১৯টি সম্পত্তিতে। হাসপাতাল ও ডিসপেনসারি তৈরি করা হয়েছে ওয়াকফের ৯ টি সম্পত্তিতে,স্কুল গড়ে উঠেছে ১৫৮টি সম্পত্তিতে। এগুলো বাদেও সুবিশাল শপিং কমপ্লেক্স গড়ে উঠেছে বীরভূমের পাথরচাপড়িতে একটি ওয়াকফ সম্পত্তি ওপর।