ছাত্র ছাত্রীদের জীবনে সবচেয়ে প্রথম বড় পরীক্ষা হল মাধ্যমিক। তবে সে পরীক্ষা যে একটি পড়ুয়ার জীবনের থেকে বেশি মূল্যবান নয় তা এবার প্রমাণ করে দিলেন এই অভিভাবকরা। সমাজের অনেক মানুষই একথা বলেন যে ব্যর্থতার পরে সফলতার স্বাদ পাওয়া যায় কিন্তু আদেও কী ব্যর্থ ছেলে মেয়ের পাশে দাঁড়ায় পরিবার? বাস্তবে চিত্রটা হয় একবারে ভিন্ন! তাই তো ব্যর্থ হয়ে জীবনে আত্ম*হত্যার মত চরম সিদ্ধান্ত বেছে নেয় স্কুল, কলেজের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা।
তবে এবার মুখের কথা কাজের সাথে মিলে গিয়েছে। বাস্তব চিত্রে বদল ঘটেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত হয় দশম শ্রেণির বোর্ডের ফলাফল। আর সেই দশম শ্রেণি অর্থাৎ জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষাতেই উত্তীর্ণ হতে পারেনি এক পড়ুয়া। শুধু তাই নয়, সমস্ত বিষয়ে সে অকৃতকার্য হয়েছে। তবুও মা-বাবার চোখে মুখে দেখা মেলেনি হতাশা বা আক্ষেপের। বরং তারা ছেলেকে মিষ্টি খাইয়ে আনন্দ উদ্যাপন করেছেন। ঘটনাটি দেখা গিয়েছে কর্নাটকের বাগালকোটে। সেখানকার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্র অভিষেক চোলাচাগুদ্দা। সে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় কোনো বিষয়ে পাশ করতে পারেনি। ৬০০ নম্বরের মধ্যে সে মাত্র ২০০ পায়, যা প্রায় ৩২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বোঝালেন তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়
অভিষেকের এমন ফলাফলের পর, তার কপালে জোটে প্রতিবেশী ও বন্ধুদের ব্যঙ্গ, কটাক্ষ। তবে তার মা-বাবা তার এই কঠিন সময়ে ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দিয়ে, ছেলের মনে সাহস জুগিয়েছেন। ছেলেকে বকাবকি না করে তারা কেক কেটে, মিষ্টি খাইয়ে মুহূর্তটি স্মরণীয় করে তুলেছেন। তাদের তরফে ছেলেকে বলা হয়, “হতে পারে তুমি স্কুলের পরীক্ষায় সফল হতে পারোনি, কিন্তু জীবনের পরীক্ষায় তুমি হার মানোনি। আবার চেষ্টা করলে নিশ্চয়ই সাফল্য অর্জন করবে।”
স্বাভাবিকভাবেই মা-বাবার পাশে থাকার এই উদারতায় অভিষেক দারুণ উচ্ছ্বসিত। পড়ুয়ার তরফে জানা গিয়েছে, “পরীক্ষায় ফেল করলেও পরিবারের সকলের ভালোবাসা ও সমর্থন আমাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখার সাহস দিয়েছে। আমি আবার পরিশ্রম করব, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হব এবং জীবনে উন্নতির শিখরে পৌঁছাব।”
সমাজের নানান অপমান, গঞ্জনাকে উপেক্ষা করে এই ঘটনা আরও একবার প্রমাণ করে দিল যে হয়তো মা বাবাই পারে সন্তানের খারাপ সময়ে তার ব্যথায় প্রলেপ লাগাতে। তার ইচ্ছা ও চাহিদা বুঝে অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফেরাতে।