প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি যোজনার সুবিধা কী বিশ বাঁও জলে? কেন্দ্রের জটিল নিয়মে বিপাকে বহু কৃষক

কেন্দ্রীয় সরকারি ‘প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি’ যোজনার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কোচবিহার জেলার বহু কৃষক। কেন্দ্রের কঠোর নিয়মের কারণে প্রকল্পের জন্য আবেদনই করতে পারছেন না হাজার হাজার প্রান্তিক কৃষক। ফলে আর্থিক সংকটে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন তাঁরা। জেলা কৃষি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কোচবিহারে রাজ্য সরকারের ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন প্রায় ৪ লক্ষ ৩০ হাজার কৃষক। অথচ কেন্দ্রের কিষান সম্মান নিধির সুবিধা মিলছে মাত্র ২ লক্ষ ৫২ হাজার কৃষকের কাছে। প্রশাসনিক মহলের মত, যদি দুই প্রকল্পের সুবিধাই কৃষকেরা পেতেন, তা হলে আর্থিক ভাবে তাঁরা অনেক বেশি শক্তিশালী হতেন।

জেলা কৃষি দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর (প্রশাসন) অসিতবরণ মণ্ডল বলেন, “কেন্দ্রীয় নিয়ম মেনে আবেদন যাচাই করতে হচ্ছে। তাই অনেক কৃষককে বাদ দিতে বাধ্য হচ্ছি।” তিনি জানান, ২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারির আগে যাঁদের জমির খতিয়ান কম্পিউটারে নথিভুক্ত হয়েছে, শুধুমাত্র তাঁরাই এই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারবেন। ২০১৯ সালের পর জমি নথিভুক্ত হওয়া কৃষকদের আবেদনের সুযোগ নেই।

আরও পড়ুন: এবছরই চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে জ্বলজ্বল করবে ভারতের নাম! আইএমএফ এর পূর্বাভাস

এই পরিস্থিতিতে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কোচবিহারের তৃণমূল সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। তাঁর অভিযোগ, “রাজ্য সরকার যেখানে কৃষকদের পাশে রয়েছে, সেখানে কেন্দ্রীয় নিয়মের জটিলতায় বহু প্রান্তিক কৃষক বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রকল্পটা শুধু লোক দেখানো।” প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি যোজনায় বছরে তিন দফায় মোট ৬ হাজার টাকা কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।

অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের কৃষকবন্ধু প্রকল্পে এক একর বা তার বেশি জমির মালিকরা বছরে দুটি কিস্তিতে মোট ১০ হাজার টাকা সহায়তা পান। এক একরের কম জমির ক্ষেত্রে বছরে ৪ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় নিয়মের কড়াকড়িতে ক্ষুব্ধ কৃষকেরা। মাথাভাঙ্গা-২ ব্লকের বাসিন্দা জমিলা বেওয়া বলেন, “কৃষকবন্ধুর টাকা পেয়েছি। কিন্তু কিষান সম্মান নিধির টাকা এখনও পাইনি। দুটোই পেলে অনেক সুবিধা হত।”

কৃষকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা ‘সাতমাইল সতীশ ক্লাব’-এর সম্পাদক অমল রায় জানান, “সমস্ত কৃষক যাতে আর্থিক সহায়তা পান, তার জন্য কেন্দ্রের উচিত নিয়ম কিছুটা সহজ করা।”