চার তলা বাড়ির মালিক জিমে স্নান করে গাড়িতেই রাত কাটান! তিন বছরে সঞ্চয় করেছেন ১২ লক্ষ টাকা

এই পৃথিবী বড়ই বিচিত্র। আর বিচিত্র এই পৃথিবীতে বাস করা মানুষজন। নাহলে মাসে লাখ টাকা রোজগার থাকা সত্ত্বেও কেউ এমন কাজ করে? ভাবছেন তো কার কথা বলছি? আর কী বা তার সেই অদ্ভুত কাজ?চিনের দক্ষিণে গুয়াংডঙ প্রদেশের ইয়াংজিয়াঙ শহরের বাসিন্দা ৪১ বছরের ঝাং ইউনলাই। চারতলা বিশাল বাড়ির মালিক তিনি, আর মাসিক আয়ও এক লক্ষ টাকার বেশি। তা সত্ত্বেও, গত চার বছর ধরে বাড়ির বিলাস ছেড়ে ঝাং বেছে নিয়েছেন গাড়িকে নিজের ঠিকানা হিসেবে।

পেশায় একজন দক্ষ প্রোগ্রামার, ঝাং আজও নিজের সিদ্ধান্তে অটুট কারণ গাড়িতে থাকার এই জীবন তাকে এনে দিয়েছে এক অনন্য আনন্দ আর স্বাধীনতা। ছয় বছর আগে কাজের সূত্রে ইয়াংজিয়াং ছেড়ে নতুন শহর শেনঝেনে পাড়ি দেন তিনি। প্রথমদিকে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন, মাসে প্রায় ২,৫০০ ইউয়ান ভাড়া গুনতে হত।

আরও পড়ুন: হ্রাস পেয়েছে শ্যাম্পু, তেল, বিস্কুটের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বিক্রি! কী কারণ ব্যাখ্যা দিলেন বিশেষজ্ঞরা?

একদিন এক বিশেষ পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে গাড়িতে রাত কাটাতে হয় ঝাংকে। সেই এক রাতেই তিনি টের পান একটু গদি পেতে, কিছুটা ব্যবস্থা করলেই গাড়ির ভেতরও তৈরি হতে পারে এক আরামদায়ক বাসস্থান। তারপর থেকেই জীবনের ছন্দ পাল্টে গেল। একটি ইলেকট্রিক গাড়ি কিনে তার ভেতরেই বিছানা পেতে নেন তিনি। প্রতিদিন সেখান থেকেই সরাসরি অফিস যান, অফিসের ক্যাফেটেরিয়ায় খাবার খান আর স্নান সারেন জিমের শৌচাগারে। রাত হলে খুঁজে নেন শহরের কোনও শান্ত পার্কিং লট। গাড়ির শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আরামদায়ক পরিবেশে গভীর ঘুমে মগ্ন হন তিনি।

দিনের খরচ, খাবার, পার্কিং ফি মিলিয়ে হাজার টাকার সামান্য বেশি। এর ফলে গত তিন বছরে ঝাং জমিয়ে ফেলেছেন প্রায় ১২ লক্ষ টাকা। তবে আর্থিক সাশ্রয় তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। ঝাং জানিয়েছেন, এই জীবন তাকে দেয় স্বাচ্ছন্দ্য, চাপমুক্তি আর একধরনের মুক্তির স্বাদ। প্রতি সপ্তাহান্তে গাড়ি ছুটিয়ে ফিরে যান নিজের শহরে, কাটান সময় পরিবারের সান্নিধ্যে ঠিক যেভাবে তিনি নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন নিজের বেছে নেওয়া অনন্য পথে।