নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে রবিবার দেশে জনতা কারফিউয়ের ডাক দিয়েছেন। সেদিন সকাল ৭টা থেকে রাত্রি ৯টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টা সাধারণ মানুষকে বাড়ির মধ্যে গৃহবন্দি রাখার অনুরোধ করেছেন। তবে জরুরি সেবার সাথে যুক্ত মানুষেরা তাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্যও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। আর প্রধানমন্ত্রীর এই জনতা কারফিউয়ের প্রশংসা করলেন ভারতে নিযুক্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) প্রতিনিধি হেঙ্ক বেকেডাম। তিনি জানান, সঠিকভাবে জনতা কারফিউ বাস্তবায়িত করা গেলে দীর্ঘকালীন ভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাবে।
WHO launds PM Modi's 'Janata Curfew' initiative https://t.co/tjGYSLm91F
— Millennium Post (@mpostdigital) March 20, 2020
আগামী রবিবার করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির জুড়ে জনতা কারফিউয়ের ডাক দিয়েছেন। কিন্তু এই জনতা কারফিউয়ের মাধ্যমে কতটা লাভ হবে তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। এমনকি বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণকে অন্তঃসারশূন্য বলে কটাক্ষ করেছেন। তবে এসবের বাইরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এমন পদক্ষেপকে প্রশংসা করল। শুক্রবার হু-র ভারতের প্রতিনিধি হেঙ্ক বেকেডাম বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর জনতা কার্ফুর আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছি। সঠিকভাবে কৌশল রূপায়িত হলে ভাইরাসের সংক্রমণ রুখে দেওয়া যাবে।”
বেকেডাম আরও জানিয়েছেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হাত, সর্দি-কাশি হলে সঠিক সময়ে যদি সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ হয় তাহলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব। এর পাশাপাশি এই ভাইরাসের সংক্রমণকে আটকাতে সামাজিক ভাবে নিজেকে একটু গুটিয়ে নিতে হবে। সামাজিক দূরত্ব তৈরি হলেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ আটকানো সম্ভব।
আবার রবিবার জনতা কারফিউ ডাকা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই মন্তব্য করছেন, “করোনাভাইরাসটা কি রবিবারেই আসে?” এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, “রবিবার এমনিতেই সরকারি দপ্তর ও অন্যান্য দপ্তরগুলি বন্ধ থাকে। সুতরাং সেই দিনে জনতা কারফিউকে সফল করা অনেকটা সহজ। পাশাপাশি রবিবার জনতা কারফিউ করা হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও অনেকটা কম হবে। এমনিতেই রবিবার বেশিরভাগ মানুষই ছুটি কাটান।”
শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে অন্যান্য তৃণমূল নেতারা এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যতটা সম্ভব বাড়ির মধ্যে থাকার কথা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বিনামূল্যে একসাথে রেশন দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি ৫০% সরকারি কর্মীকে বাড়িতে থেকেই কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়াও অনেকেই জনতা কারফিউয়ের দিন বিকাল ৫ টায় হাততালি, থালা অথবা সাইরেন বাজানো নিয়েও কটাক্ষ করছেন। রাস্তাঘাটে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে কটাক্ষ করার সময় অনেকেরই প্রশ্ন, “এসব বাজালে কি তাহলে করোনাভাইরাস আসবেনা?” এখন স্পষ্টভাবে জেনে রাখা প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কখনোই তাঁর ভাষণে বলেন নি, এগুলি করলে বাড়িতে করোনাভাইরাস আসবে না।
তিনি যা বলেছেন সেটি হল, “দেশজুড়ে গত দুমাস ধরে ডাক্তার, নার্স, পুলিশ, বিমানকর্মীরা, হোম ডেলিভারি বয়রা ও অন্যান্য সরকারি কর্মচারীরা যেভাবে এই ভাইরাসের সংক্রমণকে তোয়াক্কা না করে দেশের সাধারণ মানুষদের দিনের পর দিন পরিষেবা দিয়ে গেছেন তাদের অভিবাদন জানানোর জন্যই এই আয়োজন। পাশাপাশি এমনটা করা হলে তাদের মনোবল অনেকটা বৃদ্ধি পাবে।”