মমতাশঙ্করকে এক ডাকে চেনে টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃণাল সেন পরিচালিত মৃগয়া চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। তার সহ অভিনেতা ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। আর সেই বছরই তার বিবাহ স্থির হয় মিঠুনের সাথে। কিন্তু কোনো অজানা কারণ বশত বিয়ে না হলেও, সেই বছর মৃগয়া শ্রেষ্ঠ কাহিনি চিত্র হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারটি পেয়েছিল।
শেষ ‘মৃগয়া’ ছবিতে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল তাদের দুজনকে। তার মাঝে কেটে গেছে সাতচল্লিশ বছর। ১৯৭৫-এর পর একেবারে ২০২২, আবার একবার এই ‘মৃগয়া’ জুটি মিঠুন চক্রবর্তী ও মমতাশঙ্করকে একসঙ্গে দেখা যাবে বড়োপর্দায়। সম্প্রতি ‘প্রজাপতি’ ছবির ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে। যেখানে দেব-মিঠুনকে একসাথে দেখা যাচ্ছে। তবে দর্শক এই ছবিকে দেব-মিঠুনের ছবি না বলে বলছেন, এ ছবি মমতাশঙ্করের ও মিঠুনের ফিরে আসার ছবি। কারণ, একটা সময় বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল মিঠুন ও মমতাশঙ্করের। কিন্তু সে সম্পর্ক বিয়ে পর্যন্ত গড়ায় নি। আর সেই নিয়ে এত বছর পর মুখ খুললেন মমতা।
মমতা একটি সাক্ষাৎকারে এক সংবাদ মাধ্যমকে জানান, মিঠুনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে না হয়ে ভালই হয়েছে, এক কঠিন অধ্যায় ওটা জীবনের। সেটা হওয়ার জন্য তিনি তার স্বামী চন্দ্রোদয়কে পেয়েছেন। যিনি, তাকে আরও ভাল ভাবে চিনেছেন, বুঝেছেন। আরও বেশি ভালবেসেছেন তাকে, আর এটাই বোধ হয় ঈশ্বর ঠিক করে রেখেছিলেন। তাই তার জীবনে কোথাও কোনও রকম তিক্ততা নেই। তাই মিঠুনের পরিবারের লোকজনের সাথেও ভালই যোগাযোগ আছে তার।
কথায় কথায় মমতা শঙ্কর জানান, মিঠুন খুবই ভাল মানুষ। কিন্তু, তার সঙ্গে বিয়ে হলে মমতার নাচ, অভিনয় সবকিছুই বন্ধ হয়ে যেত। কারণ মিঠুন চক্রবর্তী সেসব পছন্দ করতেন না। মিঠুন বলেছিলেন, বাড়ির বউ বাড়িতেই থাকবে, তার বাইরে বেরোনোর দরকার নেই। মমতাশঙ্কর এও বলেন যে, তাঁর জন্য চন্দ্রোদয়ই ঠিক ছিল, নাহলে তিনি জীবনে এতটা এগোতে পারতেন না। আর মিঠুন চক্রবর্তীর জন্য যোগিতাই ঠিক ছিলেন। কারণ মিঠুনের বউ হবার পর সিনেমা জগত থেকে সম্পূর্ণভাবে বিদায় নিয়ে যোগিতা হয়ে ওঠেন আদর্শ মিঠুন ঘরণী। মিঠুন যদিও এখন তাঁর খুব ভাল বন্ধু। চন্দ্রোদয়ের সঙ্গেও মাঝে মধ্যেই কথা হয় মিঠুনের। দুই পরিবারের মধ্যে এখনও ভালই যোগাযোগ রয়ে গিয়েছে ।
সকলের বহু পরিচিত মমতাদেবী চন্দ্রোদয় ঘোষের ঘরণী, মমতাশঙ্কর নৃত্যশিল্পী উদয়শংকর ও অমলাশংকরের কন্যা। বর্তমানে তার পরিচয় তিনি একজন ভারতীয় নৃত্যশিল্পী, নৃত্য পরিকল্পক ও অভিনেত্রী। উনি সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋতুপর্ণ ঘোষ, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, গৌতম ঘোষ প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মনে রাখার মত বেশ কিছু কাজ করেছেন। এছাড়াও বর্তমানে তিনি উদয়ন নামে একটি নৃত্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্ণধার। আর তার নতুন ছবি প্রজাপতি মুক্তিপেতে চলেছে কিছুদিনের মধ্যেই।