ভারতীয় রেল বিশ্ববিখ্যাত তার বিশাল পরিব্যাপ্তির কারণে। আমাদের দেশে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় অতি দ্রুত, অতি কম খরচে ভ্রমণ করার জন্য রেলের কোন বিকল্প নেই। দেশের বিভিন্ন শহরতলীর মানুষ প্রতিদিন রেলে চেপে নিকটবর্তী শহরে গিয়ে পৌঁছয় রুটি রুজির টানে। ভারতীয় রেলের যাত্রা শুরু ব্রিটিশ আমল থেকেই। তবে স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের কোণে কোণে পৌঁছেছে রেল নেটওয়ার্ক। আজও ভারতের প্রান্তিক মানুষের জন্য যাতায়াত ব্যবস্থার একটি অন্যতম মাধ্যম হলো ভারতীয় রেল ব্যবস্থা।
তবে রেলগাড়ি শুধু সেখানেই যেতে পারে যেখানে রেললাইন পাতা হয়েছে। আর রেললাইন দেখেনি এমন ভারতীয় বোধহয় একজনও নেই। তবে জানেন কি মাত্র ১ কিমি রেললাইন বসাতে রেল কর্তৃপক্ষকে কত টাকা খরচ করতে হয়? এই লাইনগুলি পাতাই ভীষণ খরচ সাপেক্ষ ব্যাপার। বিশেষত যদি পাহাড়ি রাস্তায় রেলের লাইন পাতা হয় তাহলে খরচ ও কষ্ট হয় আরো বেশি। এর জন্য রেলকে খরচ করতে হয় প্রচুর। কিন্তু কোন কারণে এত খরচ হয় রেলের। আসুন জেনে নিন।
রেলের লাইনগুলি দেখে ইস্পাত বলেই মনে হয়। তবে এক অন্য ধরনের ইস্পাত । কারণ এই ট্র্যাকগুলো সব সময়ই খোলা আকাশের নীচে থাকে। বৃষ্টিতে ভেজে, রোদে পড়ে কুয়াশায় ভেজে, তবুও সহজে রেল ট্র্যাকে মরচে পড়েনা। ভীষণ অবাক করা ব্যাপার তাই না? কিন্তু এই ধরনের ইস্পাত বানাতেই খরচ হয় ভীষণ পরিমাণে। মাত্র ১ কিমি ট্র্যাক বসানোর জন্য যে খরচ হয় সেই খরচ শুনলেও অবাক হতে হয়।
রেলপথ তৈরি করতে কোনো সাধারন মানের ইস্পাত ব্যবহার করা হয় না। এই ইস্পাত এক বিশেষ ধরনের ইস্পাত। এই ইস্পাতের নাম ম্যাংলাই। এটি একটি বিশেষ প্রকারের স্টিল দিয়ে তৈরি হয়। যেখানে ১৩% ম্যাঙ্গানিজ ব্যবহার করা হয়। তাই এটি অক্সিজেন এবং আর্দ্রতার সংস্পর্শে এলেও কখনো মরচে ধরে না।
এই ইস্পাতের খরচ ছাড়াও, এর সাথে যোগ হয় বিভিন্ন যন্ত্রপাতির খরচ, শ্রমিকদের পারিশ্রমিক। শুধু মাত্র এক মিটার লম্বা ট্র্যাক এর ওজন হয় ৪৫ কেজি। সমতল ভূমিতে এই ট্র্যাক বসানোর জন্য ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা খরচ করতে হয় রেল কর্তৃপক্ষকে। আর হাইস্পিড রেল করিডরের ক্ষেত্রে ১ কিমি ট্র্যাক বসাতে ১০০ থেকে ১৪০ কোটি টাকা খরচ করতে হয়।