Unique Village India : বিশ্বজুড়ে নিজেদের স্বায়ত্ব শাসন বজায় রাখতে অনেক রকম নিয়ম প্রচলিত রয়েছে। আফ্রিকার বিভিন্ন গ্রামগুলিতে প্রচলিত রয়েছে নানান অদ্ভুত রীতিনীতি বিবাহ থেকে শুরু করে ঋতুচক্র, বিবাহ নীতি সহ নানান বিষয়ে অদ্ভুত নিয়ম রয়েছে। তবে ভারতেও রয়েছে এমন একটি গ্রাম। যেখানকার মানুষজন বহির্জগতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে নারাজ। তারা চিকিৎসা করাতে পর্যন্ত গ্রামের বাইরে যেতে চান না। তবে এ তো খুব ছোট্ট নিয়ম। সেখানে মেয়েদের ঋতুচক্র শুরু হলে আর গ্রামে থাকতে দেওয়া হয় না। এমনই নানান অদ্ভুত প্রচলিত রয়েছে ভারতেরই একটি গ্রামে।
সম্প্রতি সর্বভারতীয় একটি সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে এই খবর। অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি জেলা। এমন নানান অদ্ভুত নিয়ম রয়েছে সেখানে একটি গ্রামে। গ্রামের বাসিন্দারা দলিতদের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলেন না। গ্রামে দলিতদের প্রবেশ নিষেধ। সবথেকে বড় ব্যাপার হল, এই গ্রামে কোনও মহিলার ঋতুস্রাব শুরু হলে, তাদের আর গ্রামে থাকতে দেওয়া হয় না। গ্রামের বাইরে একটি ঘরে দিনরাত বন্দি থাকতে হয় তাদের। শেষ নয় এখানেই। এই গ্রামে নাকি জুতো পড়াও নিষিদ্ধ। আর সবকিছুই হয় ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা জানাতে।
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি জেলার ভেমনগরী ইন্দুল নামের একটি গ্রাম রয়েছে। সেই গ্রামেই এমন অদ্ভুত সব নিয়ম প্রচলিত। আর কি জানা যাচ্ছে এই গ্রাম সম্পর্কে? জানা গিয়েছে, গ্রামের বাসিন্দারা বাইরের খাবার পর্যন্ত খান না। বাইরে কোথাও গেলে সঙ্গে করে নিয়ে যান জল এবং খাবার। তারা চিকিৎসা করাতেও গ্রামের বাইরে যেতে পারেন না। গ্রামের চিকিৎসকদের কাছেই তাদের চিকিৎসা করাতে হয়। আর সবকিছুর কারণ একটাই। মূলত এই গ্রামে অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষজনের বসবাস বেশি। আর তারা বাইরের জগতের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে নারাজ।
বহির্জগতের জন্য রয়েছে অন্য নিয়ম। বাইরে থেকে কেউ এই গ্রামে এলে, তাকে জুতো পড়ে গ্রামের ঢুকতে দেওয়া হয় না। জুতো খুলে আসতে হয় গ্রামের বাইরে। জানা গিয়েছে অতিমারি কালে এই গ্রামের কেউ কোভিড টিকা পর্যন্ত নেননি। জানা গিয়েছে, এই গ্রামে প্রায় ২৫টি পরিবার বাস করে, যেখানে গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় ১২০। তাঁদের মধ্যে ভোট দেন ৭০ জনের কাছাকাছি মানুষ। এখানকার গ্রামবাসীরা নিজেদের পালভেকরি বর্ণের বলে মনে করেন। এটি একটি অনগ্রসর শ্রেণি। তাঁরা নিজেদের বাইরে কারও সঙ্গেই মেলামেশা করতে চান না।
এই সবকিছুর জন্যই রয়েছে স্থানীয় মানুষের মধ্যে একটি মতাদর্শ। আসলে এর পিছনে রয়েছে এক দীর্ঘদিনের প্রথা ও ঐতিহ্য। ভগবান ভেঙ্কটেশ্বর স্বামীর এক পাথরের বিগ্রহ রয়েছে এখানে। লক্ষ্মী, নরসিংহ স্বামী এবং দেবী গঙ্গাম্মার পুজোও করেন তাঁরা। এক গ্রামবাসীর কথায়, ”এখানে ভগবান ভেঙ্কটেশ্বর থাকেন। তাই এই গ্রামে জুতো পরে প্রবেশ নিষেধ। মন্দিরে কেউ কি জুতো পরে প্রবেশ করেন? আমরা এই গ্রামকে মন্দির বলেই মনে করি।