সরকারি বেসরকারি প্রায় সব অফিসেই কর্মচারীদের রোজের উপস্থিতি জমা রাখতে এখন বায়োমেট্রিক মেশিন ব্যবহার করা হয়। খুব সহজেই কে কখন অফিসে ঢুকছে বা বেরিয়ে যাচ্ছে তা বোঝা সহজ হয়। ঠিক তেমনভাবেই হাওড়া পুরসভার তরফে পুরকর্মীদের জন্য এই বায়োমেট্রিক মেশিন বসানো হয়েছিল মোটা টাকা খরচ করে। যাতে কর্মীদের অফিস থেকে ছুটির আগেই বাড়ি পালানো আটকানো যায়।
কিন্তু যে সংস্থা কর্তৃক মেশিন বসানো হয়েছিল তাদের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ মেটাতে পারেনি পুরসভা। যার ফল স্বরূপ বছর ঘুরতে না ঘুরতেই দামী মেশিনগুলিতে গোলমাল দেখা যায় বলেই অভিযোগ। তাই পূর্বের সেই হাজিরা খাতা আবার ঠাঁই পেলো পুরসভার টেবিলে। কারণ প্রায় ৭০ শতাংশ মেশিন বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। পুরকর্তাদের তরফে অভিযোগ এসেছে, সেই সঙ্গে ফিরেছে হাজিরা খাতায় সই করে অফিস পালানোর পুরনো সংস্কৃতিও। তাই সমস্ত পরিস্থিতি আলোচনা করে পুর কর্তৃপক্ষ এর তরফে ফের একবার ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আরও বায়োমেট্রিক মেশিন বসানোর বরাত দিয়েছেন একটি সরকারি সংস্থাকে। পুরসভা জানিয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি মেশিনগুলি সব দফতরে বসানো শুরু হবে।
আরও পড়ুন: Yellow Taxi: নতুন রূপে শহরের রাস্তায় দেখা যাবে কলকাতার ‘আইকন’ হলুদ ট্যাক্সিকে
পুরসভা সূত্রের মারফত জানা গিয়েছে, গত তিন বছর আগে হাওড়া পুরসভা, বালি সহ কয়েকটি বরো অফিসে মোট ৫৫টি বায়োমেট্রিক মেশিন বসানো হয়। স্বাভাবিকভাবেই মেশিনগুলি বসানো ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে একটি সরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু পুরসভার তরফে টাকা না দেওয়ায় গত দুই বছর ধরে সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণর অভাবে নষ্ট হয়ে যায় মেশিন গুলির অধিকাংশ। এখন ৫৫টি বায়োমেট্রিক মেশিন এর মধ্যে কাজ করছে মাত্র ১৬টি।
হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ কর্তা জানান, ‘‘অনেকেই হাজিরা খাতায় সই করে দিনের যেকোনো সময় পালিয়ে যাচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে। আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করব।” একইসাথে পুরসভা সূত্রের খবর, কর্মীদের অফিস থেকে যেকোনো সময় পালানো বন্ধ করতে ইতিমধ্যে সরকারি সংস্থা ওয়েবেল-কে ৮০টি বায়োমেট্রিক মেশিন অর্ডার দেওয়া হয়েছে। সেগুলি বসানো ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তিন বছরে মোট বরাদ্দ হয়েছে ৩৫ লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যে দরপত্রও ডাকা হয়েছে।
পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বায়োমেট্রিক যন্ত্রের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে দিনে দিনে। যাতে সব দফতরের কর্মীরা ব্যবহার করতে পারেন। আগের যন্ত্রগুলির মেমোরি ভরে যাওয়ায় সেগুলি খারাপ হয়ে গিয়েছিল বলেই জানতেন তিনি।
এখন দেখার বিষয় নতুন বায়োমেট্রিক মেশিনগুলো বসিয়ে পুর কর্মীদের অফিস বানা পালানো কতটা রোখা যায়।