স্ত্রীর প্রেমে ডগমগ, উপহারে দিলেন তাজমহলের আদলে আস্ত বাড়ি

শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : সেই বহু শতক আগে থেকেই ভালোবাসার জন্য নানা নজির চোখে পড়ে আসছে সকলের। কালের গতিতে যা অপরিবর্তিত থেকে গেছে তা হলো কেবলমাত্র ভালোবাসা। যার জন্য মানুষ যেমন প্রাণ ও দিয়েছে কত কেউ আবার বহু অবিশ্বাস্য কাজও করেছে। এমনই এক ভালোবাসার রূপকথার মত গল্প ঘটেছে সম্প্রতি। নিজের স্ত্রীকে ভালোবাসার উপহার হিসেবে তিনি দিয়েছেন তাজমহলের আদলে তৈরি করা বাড়ি, যা সাড়া ফেলে দিয়েছে চারিদিকে। শাজাহান মমতাজের স্মৃতির উদ্যেশ্যে বানিয়েছিলেন তাজমহল। এই ব্যক্তি আবার প্রমাণ করলেন যে এখনও শাজাহানের মতো প্রেমিকরা বর্তমান।

ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের বুরহানপুরে। যাঁকে ঘিরে এত জল্পনা তাঁর নাম আনন্দ চোকসে। নিজের স্ত্রীকে তাজমহলের আদলে বাড়ি বানিয়ে দিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি সবাইকে। যদিও শাজাহানের ক্ষেত্রে গল্পটা ছিল একটু অন্যরকম মমতাজ মারা গিয়েছিলেন কিন্তু এক্ষেত্রে আনন্দের স্ত্রী কিন্তু জীবিত রয়েছেন এখনও।

বাড়িটির অন্দরমহলের সজ্জাও পুরোপুরি তাজমহলের আদলেই করার চেষ্টা করেছেন আনন্দ। বাড়িটি তৈরি করতে তিনি ইন্দোর ও বাংলার সবথেকে দক্ষ নির্মাণ শিল্পীদের সাহায্য নিয়েছেন। অন্দরে মোট শয্যাকক্ষের সংখ্যা চারটি। বাড়ির ভেতরে লাইব্রেরী ও মেডিটেশন রুমও রয়েছে। তবে তাজমহলের ন্যায় বাড়ি বানানো তো আর চারটি খানি কথা নয়। এর জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়েছে আনন্দকে। এই কঠিন নির্মাণ শৈলী সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভের উদ্যেশ্যে বারংবার যেতে হয়েছে তাজমহল। বারবার চাক্ষুষ দেখেই ধীরে ধীরে এই অসাধারণ শিল্পকর্ম বাস্তব রূপ পেয়েছে।

২৯ ফুট লম্বা এই সুবিশাল গম্বুজ রয়েছে বাড়িটির মধ্যে। তাজমহলের মতোই সুসজ্জিত একটি টাওয়ার ও আছে বাড়িটিতে। রাজস্থানের বিখ্যাত ‘মাকরানা’ থেকে বাড়ির মেঝে তৈরি হয়েছে। বাড়ি সজ্জার উপযুক্ত সমস্ত আসবাবপত্র তৈরি করেছেন মুম্বইয়ের কারিগররা।

জানা যায়, শাজাহানের স্ত্রী মমতাজের মৃত্যু হয়েছিল বুরহানপুরে কিন্তু তারপরেও আশ্চর্যজনকভাবে তাজমহল তৈরি হয়েছিল আগ্রায়। এই প্রশ্ন আনন্দের মনে প্রথম এসেছিল আর তারপর থেকেই স্ত্রীর জন্য এমন বাড়ি তৈরির চিন্তা তাঁর। অবশেষে তিন বছরের বহু চেষ্টার ফল হিসেবে এই বাড়ি নির্মাণ করে স্ত্রীকে উপহার দিতে পেরে খুব খুশি আনন্দ। আর সেই সঙ্গে যার জন্য এই উপহার আনন্দের স্ত্রী যে আনন্দে ডগমগ সে আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। এভাবেই ভালোবাসায় ডুবে ভালো থাকুক ওরা দুজন।