চাবি জেলবন্দি অনুব্রতরের কাছে! বীরভূমে বন্ধ হয়ে গেল আস্ত স্কুল

নিজস্ব প্রতিবেদন : গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়ে অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) এখন রয়েছেন তিহার জেলে (Tihar Jail)। তবে তিনি তিহার জেলে থাকলেও বোলপুরের একাধিক বিতর্ক কোনোভাবেই পিছু ছাড়ছে না। সেই রকমই এবার একটি বিতর্ক দানা বেঁধেছে আস্ত একটি স্কুল (School) বন্ধ হয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে।

বোলপুর পুরসভার অন্তর্গত ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ১৯৮৪ সাল থেকে পথচলা শুরু করে একটি নার্সারি স্কুল। যে স্কুলটি চলতো একটি ট্রাস্টের অধীনে এবং সেখানে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করানো হতো। মাত্র ১৫০ থেকে ২০০ টাকা ফি নিয়ে স্কুলে পঠন পাঠন করানো হতো। স্কুলটি বাংলা মাধ্যম হলেও ইংরেজি শিক্ষাই জোর দেওয়া হতো।

কিন্তু লোকমাতা নিবেদিতা শিশু শিক্ষা নিকেতন নামের ওই স্কুলটি বর্তমানে বন্ধ করে তালা ঝোলানো হয়েছে। স্কুলের বর্তমান পরিচালক লক্ষ্মণ দে দাবি করেছেন, স্থানীয় ক্লাবের ছেলেরা ওই স্কুলের গেটে তালা লাগিয়ে স্কুল বন্ধ করে দিয়েছেন। কি কারণে স্কুলের গেটে তালা লাগানো হয়েছে তা লক্ষ্মণ বাবু স্পষ্টভাবে জানাতে না পারলেও ক্লাবের সদস্যদের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে তারা এখানে একটি কমিউনিটি হল করতে চান।

যে এলাকায় এমন ঘটনাটি ঘটেছে সেই ওয়ার্ডের বাসিন্দা হলেন দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। আর এই ঘটনার পিছনে অনুব্রত মণ্ডলের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের কাছে কোনরকম অভিযোগ দায়ের হয়নি বলেও খবর। তবে যারা এই স্কুলে পড়াশোনা করতেন তাদের অভিভাবকরা এখনো চান স্কুলটি পুনরায় খুলুক।

লক্ষ্মণ দে দাবি করেছেন, দীর্ঘ বছর ধরে চলা স্কুলটিতে হঠাৎ ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে তালা ঝুলিয়ে দেন ক্লাবের সদস্যরা। ক্লাবের সদস্যরা দাবি করেছিলেন এটি কমিউনিটি হল করা হবে। ঘটনার পর লক্ষ্মণ দে অনুব্রত মণ্ডলের দ্বারস্থ হন। অনুব্রত মণ্ডল সেই সময় বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেও কোন কাজ হয়নি।

অন্যদিকে ক্লাবের সদস্য প্রসেনজিৎ বাগদি দাবি করেছেন, স্কুলটি এমনি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং পরে এই জায়গাটি বিক্রি করার জন্য বন্দোবস্ত করা হচ্ছিল। কিন্তু এই জায়গাটি ভেস্টেড এলাকায় তাই আমরা বিক্রি করতে দিইনি এবং তালা বন্ধ করে দিই।

বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্কুলটিতে প্রায় ২০০ জন পড়ুয়া পড়াশোনা করতেন বলে জানা গিয়েছে। লক্ষ্মণ দে পুনরায় স্কুলটি খুলতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তবে স্কুল খোলার জন্য ক্লাবের সদস্যদের যখন তিনি চাবির কথা বলেন তখন তারা নাকি তাকে জানান, চাবি রয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের কাছে।