এই বিশেষ বার্তা নিয়ে সাইকেল চালিয়ে তিন রাজ্য ভ্রমণ নদিয়ার যুবকের

নিজস্ব প্রতিবেদন : সাইকেল নিয়ে নদিয়া থেকে বীরভূম! শুধু বীরভূম নয়, এর পাশাপাশি আরও দুটি রাজ্য ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের বেশ কিছু এলাকা সাইকেল চালিয়েই ঘুরে বেড়ানোর লক্ষ্য রয়েছে নদিয়ার এই যুবককের। ঘুরে বেড়ানো বললে ভুল হবে, কারণ সে এক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই সাইকেল যাত্রায় নেমেছে। তার বার্তা হল ‘থ্যালাসিমিয়া মুক্ত সমাজ গড়ে তোলা’।

বিয়ের ক্ষেত্রে যেমন প্রাপ্তবয়স্ক না হলে তা আইনানুগ অপরাধ, ঠিক তেমনই এই যুবকের লক্ষ্য রয়েছে থ্যালাসেমিয়া যাতে আর না বাড়ে তার জন্য সরকার এমন এক আইন তৈরি করুক, যাতে বিয়ের আগে বাধ্যতামূলকভাবে রক্ত পরীক্ষা করা দরকার। এই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছে নদিয়ার এই যুবক সুজন অধিকারী।

নদিয়ার তেহট্ট থানার অন্তর্গত বেতাই গ্রামের বিএ পাস করা এই যুবক রোজগারের তাগিদে একটি অনলাইন সাইবার ক্যাফে চালান। কিন্তু তার লক্ষ্য সামাজিক বার্তা পৌঁছে দেওয়া। এই লক্ষ্যেই বছরের বিভিন্ন সময় সে তার সফরসঙ্গী পরিবেশবান্ধব সাইকেলকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। কখনো পার্বত্য এলাকা দার্জিলিং, আবার কখনো সমুদ্রতট ওড়িশা। তবে প্রতি ক্ষেত্রেই থাকে কোনো না কোনো সামাজিক বার্তা।

২০১৮ হোক অথবা ২০১৯, এই যুবক এমন একাধিক সফর করে ফেলেছেন, যাতে ছিল রক্তদানের মতো সামাজিক বার্তা। আর এবার তার লক্ষ্য সমাজকে ‘থ্যালাসেমিয়া মুক্ত’ করার। এই যুবক নদিয়া থেকে গত ২২ নভেম্বর রওনা দিয়ে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর পাড়ি দেওয়ার পর বুধবার বীরভূমের রামপুরহাটের পাঁচমাথা মোড়ে এসে পৌঁছান। সেখানে তিনি থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সাধারণ মানুষদের সামনে তুলে ধরেন এবং স্থানীয় ‘রক্তবন্ধু’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফ থেকে তাঁকে সংবর্ধনা ও সমস্ত রকম সাহায্য করা হয়। আগামী দিনে তার লক্ষ্য রয়েছে ঝাড়খন্ড এবং বিহারের বেশ কিছু এলাকায় এই একই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার।

ইতিমধ্যেই ওই যুবক বাংলার পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খন্ডে পাড়ি দিয়েছেন। ৬০০-৭০০ কিলোমিটার পাড়ি দেওয়ার পরেও তার লক্ষ্য এখনো স্থির নয়। এরপরে তিনি কোথায় পাড়ি দেবেন তা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবেন বলেই জানিয়েছেন।

সুজন অধিকারী জানিয়েছেন, “প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত যেমন বিয়ে করাটা আইনানুগ অপরাধ, ঠিক তেমনি থ্যালাসেমিয়া রোগ যাতে না বাড়ে তার জন্য বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে কারোর মধ্যে এই রোগ নেই তো! এই পরীক্ষার মাধ্যমেই আমরা থেলাসেমিয়া মুক্ত সমাজ গড়তে পারবো। এই জন্য আমাদের প্রত্যেককেই সচেষ্ট হতে হবে এবং সরকারের তরফ থেকেও এমন একটি আইন আনা প্রয়োজন।”