কতটা ভয়ঙ্কর অ্যাডিনো ভাইরাস, কীভাবে বুঝবেন আক্রান্ত কিনা!

ভয়াবহ আকার নিচ্ছে ঋতু পরিবর্তনের সময় সর্দি-কাশি। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, অ্যাডেনো ভাইরাসের (Adenovirus)জন্যই এমনটা হচ্ছে। প্রায় গোটা রাজ্যই এখন আক্রান্ত এই ভাইরাসের দাপটে। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। উদ্বেগ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে, নাইসেড-এর রিপোর্ট। যেখানে বলা হয়েছে, গত দেড়মাসে স্বাস্থ্য দফতরের পাঠানো ৫০০-রও বেশি নমুনার মধ্যে ৩২ শতাংশই অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত।

জানা গিয়েছে, অ্যাডেনো ভাইরাসের প্রায় ১০০টি স্ট্রেন রয়েছে। এর মধ্যে যে কোনও স্ট্রেনে মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন। এক্ষেত্রে ৩ এবং ৭ নম্বর স্ট্রেনটি বেশি দেখা যাচ্ছে। তার মধ্যেও ৭ নম্বর স্ট্রেনটি বেশি মারাত্মক বলে মনে করছেন। এবার অ্যাাডিনো সংক্রমণ মোকাবিলায় নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সেই গাইডলাইনে বলা হয়েছে-

১) শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসে অস্বস্তি থাকলে নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।

২) খাওয়াদাওয়া বা প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলেও যেতে হবে চিকিৎসকের কাছে।

৩) জ্বর-সর্দি থাকলে, শিশুদের স্কুলে না পাঠানোরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়।

৪) ৩ থেকে ৫ দিন টানা জ্বর থাকলে বা রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯২ শতাংশের কম থাকলে শিশুদের ভর্তি করতে হবে হাসপাতালে।

চিকিৎসকরা বলছেন, অ্যাডেনো ভাইরাসে মূলত আক্রান্ত হচ্ছে ১ থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুরা। শিশুদের ক্ষেত্রে এই উপসর্গ মূলত, জ্বর, গলা ব্যথা, ফুসফুসে সংক্রমণ, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ডায়েরিয়া, বমি, পেট ব্যথা, মূল সমস্যা শ্বাসকষ্ট।

অ্যাডেনো ভাইরাস এড়াতে কিছু সতর্কতা (Adenovirus Precaution) অবলম্বন করতে বলছেন চিকিৎসকরা। প্রথমবারের পর দ্বিতীয়বারও শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই এই রোগ থেকে বাঁচতে কিছু সতর্কতা মেনে চলতেই হবে। যেমন,
১) শিশুদের ভিড়ে না নিয়ে যাওয়া,

২) মাস্ক পরানো,

৩) ভাল করে হাত ধোয়া,

৪) বড়দের কাশি থাকলে শিশুদের সংস্পর্শে না যাওয়া,

৫) অনেকসময় মল থেকেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে, তাই মলের ডিসপোসাল সঠিকভাবে করা,

৬) একটানা সর্দি কাশিতে ভুগলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া ইত্যাদি।

রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে যে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে- হাসপাতালে রোজ কত শিশু আসছে, তাদের কতজনকে ভর্তি করতে হচ্ছে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট দিতে হবে। হাসপাতালে শিশুদের ভর্তি করার পর কী ওষুধ দিতে হবে, কোন পরিস্থিতিতে কী পরিমাণ ওষুধ দিতে হবে তাও উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশিকায়। জেলার শিশু হাসপাতালগুলিকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। অক্সিজেন ও ভেন্টিলেটর পরিকাঠামো যেন ঠিক ঠাক থাকে, তাও দেখতে বলা হয়েছে।