ফ্লাইটে ওঠার ক্ষেত্রে জারি হল নতুন নিয়ম, না মানলে কড়া ব্যবস্থা এই সংস্থার

সম্প্রতি ফ্লাইটে উঠে যাত্রীদের বেশ কিছু অভব্য আচরণ সামনে এসেছে। তাতে যেমন সহযাত্রী দের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে, তেমনি অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে ফ্লাইট কর্তৃপক্ষকেও। আর এই সমস্ত অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে মূলত নেশাগ্রস্থ যাত্রীদের কারণে। তাই এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে, এবং নেশাগ্রস্থ যাত্রীদের বাড় বাড়ন্ত ঠেকতে বেশ কিছু নতুন নিয়ম আনতে চলেছে এয়ার ইন্ডিয়া (Air India) কর্তৃপক্ষ। বিশেষত এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মচারীরা নেশাগ্রস্ত যাত্রীদের নিয়ে সম্প্রতি বেশ কিছু প্রশ্ন তোলার পর সংস্থার পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

গতবছর নানান অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India) ফ্লাইটে দুই বার নেশাগ্রস্ত যাত্রীদের নিয়ে বিমান কর্মীদের নাকাল হওয়ার ঘটনা খুব করে মিডিয়ায় উঠে এসেছে। তাই এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India) পক্ষ থেকে যাত্রী এবং কেবিন ক্রুদের জন্য একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তাই কোন যাত্রী এবার থেকে ফ্লাইটে মদ্যপান করে ভ্রমণ করতে চাইলে তার জন্য এই প্রতিবেদনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে জেনে নেওয়া যাক ঠিক কি ধরনের নির্দেশিকা জারি হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে।

এক্ষেত্রে এই এয়ার লাইন্সটি ইউএস ন্যাশনাল রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশনের নির্দেশিকা থেকে কিছু ইনপুট গ্রহণ করেছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে যেমন ট্রাফিক লাইট সিস্টেমের উপকার হয়েছে তেমন নেশাগ্রস্ত যাত্রীকে সনাক্ত করতেও বিমান কর্মীদের বিশেষভাবে সুবিধা হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India) পক্ষ থেকে পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, কোন যাত্রী নেশাগ্রস্থ অবস্থায় থাকলে তাকে এবার থেকে আর বিমানে চড়তে দেওয়া হবে না। নির্দেশিকায় আরো বলা হয়েছে কোন যাত্রীকে নেশাগ্রস্ত বলে সন্দেহ হলে তাকে বিমান কর্মীরা স্ক্যান করতে পারবেন। বোর্ডিং এর সময় কোন যাত্রীকে মদ্যপ অবস্থায় চিহ্নিত হলে সেই সম্পর্কে পাইলটকেও জানাতে হবে। আর যদি কোন যাত্রী যদি নেশাগ্রস্থ হয়ে গালিগালাজ, হুমকি বা কোন ধরনের অশালীন আচরণ করে থাকে তাহলে সাথে সাথেই কেবিন সুপারভাইজারকে জানাতে হবে।

বিমান কর্মীদের মদ্যপ যাত্রীদের চেনার জন্য বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করা হয়েছে এই নির্দেশিকায়। যেমন যাত্রীর ধীর গতিতে চলা, সোজা হয়ে বসতে না পারা, অর্থহীন তর্ক করা, অসংযত কথা বলা, অস্বাভাবিক জোরে হাসা বা কথা বলা, বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়ার চেষ্টা করুন, মদ্যপানের ইচ্ছা বৃদ্ধি, ইত্যাদি। এছাড়াও কেবিন ক্রুদের জন্য আকাশে নেশাগ্রস্ত যাত্রীদের কিভাবে পরিচালনা করতে হবে তা নিয়েও বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বিমানের মধ্যে কোন যাত্রী যদি মদ্যপান করতে উদ্যত হয় তবে তাকে বিমান কর্মীরা এখন থেকে নিষেধ করতে পারবেন। এমনকি কেবিন ক্রুদের কাছ থেকে অনুমতি না নিয়ে কোন যাত্রী বিমানের মধ্যে অ্যালকোহল পান করতে পারবেন না বলেও এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে।

বিমান কর্মীদের কিভাবে যাত্রীদের সাথে ব্যবহার করতে হবে তা নিয়েও কিছু নির্দেশিকা আনা হয়েছে। যেমন, যাত্রীদের সাথে ভদ্রভাবে ব্যবহার করতে হবে এবং তাদের বিনীতভাবে জানাতে হবে যে বিমানের মধ্যে মধ্য পরিবেশন করা যাবে না। কি কারনে মদ্য পরিবেশন করা যাবে না সে বিষয়েও কেবিন ক্রুদের স্পষ্ট ভাবে জানাতে হবে যাত্রীদের। এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের অ্যালকোহল বিহীন পানীয়ই পরিবেশন করতে পারবে। কোন যাত্রী মাতাল হয়ে থাকলে তাকে মাতাল বলে সম্বোধন করা যাবে না এবং তাকে তার আচরণ সম্পর্কে বিনীতভাবে সতর্ক করতে হবে। সেই সাথে ওই যাত্রীকে জানিয়ে দিতে হবে তার এই রূপ আচরণ বিমানের পরিবেশের মধ্যে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কোন যাত্রী যদি অভাব্য আচরণ করে থাকে সেক্ষেত্রে বিমান কর্মীকে শান্ত থাকতে হবে এবং নেশাগ্রস্ত যাত্রীকে তার যথাযথ সম্মান দিয়েও কথা বলতে হবে।