শুধুই কি নেতা, স্বামী ও বাবা হিসেবে কেমন অনুব্রত মণ্ডল

নিজস্ব প্রতিবেদন : বঙ্গ রাজনীতিতে অনুব্রত মণ্ডলের নাম জানেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ঢের। সামান্য একটি মুদিখানার দোকানের মালিক থেকে তিনি আজ দাপুটে তৃণমূল নেতা। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর বাবার মুদিখানা এবং গ্রিলের কারখানা সামলানোর দায়িত্ব নেন। পরবর্তীতে জাতীয় কংগ্রেসের হাত ধরে রাজনীতিতে আগমণ এবং তৃণমূল কংগ্রেসের হাত ধরে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা লাভ করা। অনুব্রত মণ্ডলের রাজনৈতিক জীবন, তার হম্বিতম্বি, বিতর্কিত নানান নিদান জানেন না এমন হয়তো কেউ নেই। কিন্তু রাজনীতির বাইরে অনুব্রত মণ্ডল একজন স্বামী এবং বাবা হিসাবে কেমন?

অনুব্রত মণ্ডলের গ্রামের বাড়ি নানুরের হাটসেরান্দী হলেও দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই তিনি বোলপুরের ১৫ নং ওয়ার্ডের নিচুপট্টিতে মা, স্ত্রী এবং মেয়েকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন। রাজনীতির পাশাপাশি পরিবারের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা এবং দায়িত্ব বারংবার চোখে এসেছে। মা এবং স্ত্রী জীবিত থাকা অবস্থাতে বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগেই মায়ের খোঁজ নেওয়া এবং প্রণাম করা এই দুটি কাজ কখনই ভুলতেন না। তবে বার্ধক্যজনিত কারণে তার মা ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রয়াত হন।

অনুব্রত মণ্ডলের স্ত্রী ছবি মন্ডল দীর্ঘদিন ধরেই ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তবে অনুব্রত মণ্ডল যতই রাজনীতির পিছনে ছোটাছুটি করুক না কেন কখনোই তার চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোন রকম চিকিৎসার ক্ষেত্রে খামতি রাখেননি। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তাকে বিভিন্ন প্রান্তের ছোটাছুটি করতে দেখা গিয়েছে। কলকাতার টাটা মেমোরিয়ালে স্ত্রীর চিকিৎসা চলাকালীন বারংবার ছুটে যেতেন স্ত্রীকে দেখতে। এমনকি একাধিক রাজনৈতিক সভাতেও স্ত্রীর অসুস্থতার কথা তুলে ধরতে দেখা গিয়েছে তাকে। তবে তিনিও প্রয়াত হন ২০২০ সালের ২৪শে জানুয়ারি।

স্ত্রী ছবি মন্ডল জীবিত থাকা অবস্থায় অনুব্রত মন্ডলের খাওয়া-দাওয়ায় বেশকিছু রুটিন এবং পছন্দ অপছন্দের বিষয় ছিল বলে জানা যায়। কিন্তু পরবর্তীতে তা লাটে উঠেছে। এমনকি তার ব্যস্ততার মাঝে খাওয়া-দাওয়া নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তাকে এক প্রকার দুঃখকে চাপা দিয়েই বলতে শোনা গিয়েছে, ‘ওসব আগে ছিল, এখন আর নাই।’

বর্তমানে বীরভূমের এই দাপুটে তৃণমূল নেতার বাড়িতে মাত্র দুজনের বাস। তিনি আর তার মেয়ে। মেয়ের প্রতিও তার অগাধ ভালোবাসা লক্ষ্য করা যায়। সূত্র মারফত জানা যায়, মেয়ে কোন কিছু আবদার করলে তিনি তা কখনো ফিরিয়ে দেন না। মনে আছে, অনুব্রত মণ্ডলের এযাবত সবথেকে জনপ্রিয় ডায়লগ ‘সুটিয়ে লাল করে দেবো’কে নিয়ে তিন যুবক একটি মিম ভিডিও তৈরি করেছিলেন। যে ভিডিওতে অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ের প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল। যার পরেই বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয় এবং ওই তিনজনের মধ্যে দুই যুবক গ্রেপ্তার হয়। এই অভিযোগ করার পিছনে অনুব্রত মণ্ডলের কলকাঠি ছিল বলেও জানা যায়।

[aaroporuntag]
তৃণমূলের এই দাপুটে নেতারা এতকিছু থাকলেও তাকে একাধিক সভায় আফসোস করতে দেখা গিয়েছে তার আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। তার মুখ থেকেই জানা গিয়েছে, তার আত্মীয়দের তার এবং তার পরিবারের প্রতি তেমন সহিষ্ণুতা নেই। তবে সে যাই হোক অনুব্রত মণ্ডলের তার স্ত্রীর প্রতি অগাধ ভালোবাসা ছিল তাও একাধিক সভায় তার মুখ থেকে বলতে শোনা গিয়েছে।