‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে মিলবে ১১টি প্রকল্পের সুবিধা, রইলো তালিকা

Madhab Das

Published on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : শিওরে বাংলার বিধানসভা নির্বাচন। আর এই বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে শাসক এবং বিরোধী প্রতিটি রাজনৈতিক দলই কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। কোন পক্ষই বিনাযুদ্ধে অপর পক্ষকে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দিতে নারাজ। বিরোধীরা যেমন শাসকদলের এবং সরকারের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ আনছে, ঠিক তেমনই রাজ্য সরকার নিজেদের আসন ধরে রাখতে নতুন নতুন প্রকল্প এবং কর্মসূচির উদ্বোধনের পথে হাঁটছে। আর এই সকল প্রকল্প এবং কর্মসূচির অংশ হিসাবে রাজ্য সরকারের নতুন কর্মসূচি ‘দুয়ারে সরকার’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন এই কর্মসূচির ঘোষণা করেন বাঁকুড়া থেকে।

Advertisements

Advertisements

এই কর্মসূচি আজ অর্থাৎ ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়ে গেল। চারটি পর্যায়ে এই কর্মসূচি চালানো হবে। প্রথম পর্যায় ১ ডিসেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্যায় ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তৃতীয় পর্যায় ২ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত এবং চতুর্থ পর্যায় ১৮ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই কর্মসূচি চলাকালীন ১১ টি সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা সাধারণ মানুষদের হাতে তুলে দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।

Advertisements

যে ১১টি সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যাবে ‘দুয়ারে সরকার‘ কর্মসূচি থেকে

১) স্বাস্থ্য সাথী : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের আওতায় থাকা এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডধারীরা চিকিৎসার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেয়ে থাকেন। রাজ্য এবং রাজ্যের বাইরে ১৫০০টি হাসপাতল এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছে।

২) কাস্ট সার্টিফিকেট : কাস্ট সার্টিফিকেট সম্পর্কিত আবেদন করা যাবে দুয়ারে দুয়ারে সরকার এই কর্মসূচি চলাকালীন। এই সার্টিফিকেট সম্প্রদায়ভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে।

৩) খাদ্য সাথী : খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের অধীনে থাকা এই প্রকল্পের জন্য আবেদন এবং অভিযোগ করা যাবে এই কর্মসূচি চলাকালীন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে RSKY-I-এর সুবিধাভোগীরা দু’টাকা কিলো দরে চাল ও গম পেয়ে থাকেন। মাসে মাথাপিছু তিন কিলো গম এবং দু কিলো চাল দেওয়া হয়ে থাকে।

RSKY-II-এর আওতায় সুবিধাভোগীরা ৯ টাকা কিলো দরে গম এবং ১৩ টাকা কিলো দরে চাল পেয়ে থাকেন। প্রতিমাসে মাথাপিছু এক কিলো করে চাল ও গম দেওয়া হয়ে থাকে।

৪) কন্যাশ্রী : নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তরের অধীনে থাকা এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের পাঠরত অবিবাহিত ছাত্রীরা আর্থিক সাহায্য পেয়ে থাকেন। এই প্রকল্পের দুটি ভাগ রয়েছে। একটি হলো কন্যাশ্রী : ১ এবং অন্যটি হলো কন্যাশ্রী : ২।

কন্যাশ্রী : ১-এর মাধ্যমে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী পাঠরত অবিবাহিত মেয়েরা বার্ষিক এক হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য পেয়ে থাকেন।

কন্যাশ্রী : ২-এর মাধ্যমে ১৮ বছরের বেশি কিন্তু অনূর্ধ্ব ১৯ অবিবাহিত মেয়েদের এককালীন ২৫ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়।

৫) কৃষক বন্ধু : এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের কৃষকদের খরিপ এবং রবি শস্য চাষ শুরু হওয়ার আগে এক একর বা তার বেশি চাষযোগ্য জমির জন্য দুই কিস্তিতে ৫০০০ টাকা অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে। জমির পরিমাণ এক একরের কম হয়ে থাকলে বছরে দুই কিস্তিতে ন্যূনতম ২০০০ টাকা দেওয়া হয়ে থাকে।

এই প্রকল্পের আওতায় ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি চাষীদের মৃত্যুজনিত সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। কোন চাষির মৃত্যু হলে সে ক্ষেত্রে ওই চাষির আইনানুগ উত্তরসূরী দু লক্ষ টাকা সাহায্য পেয়ে থাকেন।

৬) শিক্ষাশ্রী : অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দপ্তর এবং আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তরের অধীনে থাকা এই প্রকল্পের মাধ্যমে তপশিলি জাতি ও আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রীদের বছরে ৮০০ টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে।

৭) জয় জোহার : অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দপ্তর এবং আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তরের অধীনে থাকা এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৬০ বছর বা তার বেশি তপশিলি এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের মাসে ১০০০ টাকা করে পেনশন দেওয়া হয়ে থাকে।

৮) রুপশ্রী : নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তরের অধীনে থাকা এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের যেসকল পরিবারগুলির বার্ষিক আয় দেড় লক্ষ টাকার কম সেই সকল পরিবারের মেয়েরা প্রথমবার বিয়ের জন্য ২৫০০০ টাকা অনুদান পেতে পারেন।

৯) ঐক্যশ্রী : সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের অধীনে থাকা এই প্রকল্পের মাধ্যমে তিন ধরনের স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে। প্রথম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত প্রি ম্যাট্রিক, একাদশ থেকে পিএইচডি পর্যন্ত পোস্ট ম্যাট্রিক এবং কারিগরি ও বৃত্তিমূলক পড়াশোনার জন্য মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে।

১০) ১০০ দিনের কাজ : পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের অধীনে রয়েছে এই প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রাম্য এলাকায় পরিবারগুলি বছরে কম করে ১০০ দিনের কাজ পেয়ে থাকেন।

১১) পেনশন : বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধীদের জন্য নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তরের অধীনে থাকা এই প্রকল্পের মাধ্যমে মাসিক এক হাজার টাকা করে পেনশন দেওয়া হয়ে থাকে।

Advertisements