মিলেছিল ২০২২-র ভবিষ্যদ্বাণী, ২০২৩ আরও ভয়ঙ্কর, বলছেন বাবা ভঙ্গা

পৃথিবী জুড়ে এক পরিচিত নাম বাবা ভাঙা। যার করা ভবিষ্যদ্বানী আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল সারা দুনিয়ায়। অনেক কথা তার ফলেও যায়। আগামী বছর কেমন কাটতে চলেছে সেই নিয়ে তিনি কি বলে গিয়েছিলেন? আসুন তা জেনে নেওয়া যাক। তিনি বলেছিলেন, এই বছর জৈব অস্ত্রের হামলা চালাতে পারে কোনো একটি বৃহৎ শক্তিশালী দেশ। তাই রাশিয়া-ইউক্রেন সমস্যাটি হালকা ভাবে নিলে চলবে না। কারণ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একাধিকবার পরমাণু হামলা করার কথা বলেছেন। তাই বাবা ভাঙার কথায় একটা বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েই যায়। বাবা আরো বলেছিলেন, আগামী বছর কোনও পরমাণু চুল্লিতেও বিস্ফোরণের ফলে আকাশে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পরায় এশিয়ার বহু মানুষকে মারণরোগে আক্রান্ত হতে দেখা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেছিলেন, আগামী বছর ভয়ংকর এক সৌরঝড়ের আশঙ্কা আছে যা পৃথিবীর অভিকর্ষের বড়সড় ক্ষতি করতে পারে। এ ছাড়াও তিনি বলেছিলেন, ২০২৩-এ পৃথিবীর উপর এলিয়েন বা ভিন্ গ্রহের জীবের হামলা করতে পারে। তার ফলে সমগ্র পৃথিবী অন্ধকারে ঢেকে যেতে পারে এরই সাথে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। আবার, এই বছর নাকি ল্যাবরেটরিতেই মানবশিশুর জন্ম হবে। আর সন্তানের গায়ের রং, লিঙ্গ নির্ধারণ করতে পারবে বাবা-মাই। অর্থাৎ ভবিষ্যতের মানুষ কেমন হবে, সেটি ঠিক করবে মানুষই।

এই বাবার ভবিষ্যৎবাণী অনেকেই মেনে চলেন। কেননা, তাঁর অনেক কথাই ইতিপূর্বে আশ্চর্যরকম ভাবে ফলে যেতে দেখা গেছে। যেমন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন, চের্নোবিল বিপর্যয়, ডায়ানার মৃত্যু, ৯/১১ হামলা, বারাক ওবামার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়া, ২০০৪-এর সুনামি, ২০১৯- এর শেষে করোনার মতো মহামারীর আগমন ইত্যাদি। এমন কি মিলেছে ২০২২-এর প্রাকৃতিক বিপর্যয় কথাও। বিশ্বের নানা জায়গায় জলসংকট ও বন্যার কথা বলেছিলেন তিনি। আর তারপরই ইটালি ও পর্তুগালের বহু এলাকা তলিয়ে গেছে জলের তলায়, বন্যার কবলে পড়েছে অস্ট্রেলিয়া সহ এশিয়া মহাদেশের একাধিক দেশ, এমনকী বন্যা দেখা দিয়েছিল আমাদের আসাম, কর্নাটকেও।

কিন্তু প্রশ্ন আসে কে এই বাবা ভাঙা? তাঁর পরিচয়ই বা কি? এই বাবা ভাঙার আসল নাম ভ্যাঞ্জেলিয়া প্যানদেভা গুশতেরোভা। ১৯৯৬ সালে তিনি পরলোক গমন করেন। আর মারা যাবার আগে ভবিষ্যৎ দুনিয়া সম্পর্কে এমন অনেক ভবিষ্যতবাণীই করে গেছেন, যার অনেক কিছুই এখন মিলে যাচ্ছে। ১৯১১-এ ম্যাসিডোনিয়ায় স্ট্রুমিকা নামে এক জায়গায় জন্ম হয় তার। স্ট্রুমিকা জায়গাটি পরে যদিও বুলগেরিয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। শোনা যায় যে, ভ্যাঞ্জেলিয়া যখন ১২ বছর বয়স ছিল, তখন একদিন বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে খেলতে সে প্রবল ঝড়ের মধ্যে আটকে যায়। সেই ঝড় ভ্যাঞ্জেলিয়াকে অনেক দূর পর্যন্ত উড়িয়ে নিয়ে যায়। বেশ কয়েক পরে যখন তাকে খুঁজে পাওয়া যায়, তখন দেখা যায়, তার দুটো চোখের অবস্থা ভীষণই খারাপ। চোখের কোটরে ধুলোবালি, ময়লা ঢুকে তার চোখের উপর শক্ত আবরণ তৈরি হয়েছে। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। ভাগ্যের পরিণতি মেনেই আজীবন অন্ধ হয়ে কাটাতে হয় তাকে।

কিন্তু, এর পরই রহস্য তৈরি হয় তাকে ঘিরে। ভ্যাঞ্জেলিয়া দাবি করেন, প্রবল ঝড়টি যখন তাকে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, এবং সে যখন তার দৃষ্টি ধীরে ধীরে হারাচ্ছিল সে তখন বুঝতে পারছিল যে, তার মধ্যে অদ্ভুত কোনও ক্ষমতা সৃষ্টি হচ্ছে! সে যেনো বন্ধ চোখ দিয়ে ভবিষ্যতের পৃথিবী দেখতে পাচ্ছে। এমনকী তারপর তার মধ্যে এমন এক ক্ষমতা জেগে ওঠে, যার জোরে মানুষকে ছুঁয়ে দিয়ে সুস্থ করে তোলে মানুষকে! এই জন্য তাঁকে ‘বলকানের নস্ট্রাডামুস’ নামে ডাকা হতে হয়। ভ্যাঞ্জেলিয়া ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন ‘বাবা ভাঙা’। বুলগেরিয়ান ভাষায় ‘বাবা’ মানে ‘দিদিমা’ বা ‘জ্ঞানী মহিলা’। বাবা ভাঙা যে হেতু ভবিষ্যৎ দেখতে পেতেন এবং মানুষকে সুস্থ করে তুলতে পারতেন, তাই তাঁর এমন নামকরণ করা হয়। এবার দেখা যাক ২০২৩ নিয়েও তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী মেলে কি না?