লাল্টু : বাংলার ৪ই শ্রাবণ ইংরেজির ২০ই জুলাই এবছর শিবের মাথায় প্রথম জল ঢালা। কথায় আছে বাঙ্গালীদের ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। কিন্তু এবার করোনা ভাইরাসের কারণে হিন্দু হোক কিংবা মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের বিভিন্ন উৎসব যেন জৌলুসহীন ভাবে পালন করা হচ্ছে। দীর্ঘ দুমাসের উপর লকডাউনের পর মানুষ কিছুটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলেছিল এবং ভেবেছিল কিছুটা হলেও কমবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু করোনাভাইরাস যে ভাবে দিনের পর দিন আরও বেড়ে চলেছে, তাতে চিন্তার ভাঁজ বেড়েছে সরকার থেকে প্রশাসন প্রত্যেকেরই। বেশ কিছু জায়গায় নতুন করে শুরু হয়েছে লকডাউন। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার আবেদন করা হচ্ছে বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় যেন মাস্ক ব্যবহার করা হয় এবং দূরত্ব বজায় রাখা হয়।
পঞ্চপীঠের অন্যতম পীঠস্থান হলো বক্রেশ্বর। করোনার জেরে শনিবার বিকালে দুবরাজপুর ব্লকের বক্রেশ্বর শিব মন্দিরের সেবাইতদের নিয়ে একটি মিটিং করেন দুবরাজপুর থানার ইন্সপেক্টর মাধব চন্দ্র মন্ডল। প্রত্যেক বছর শ্রাবণ মাসে শিবের মাথায় জল ঢালতে হাজার হাজার ভক্তের আগমণ হয় এই বক্রেশ্বর ধামে। পশ্চিমবাংলা ছাড়াও বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকেও বহু ভক্ত আসেন জল ঢালতে। করোনার জেরে যেন কারো ক্ষতি না হয় সেজন্য এবার বক্রেশ্বর মন্দির কমিটি এবং পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে তাই শ্রাবণ মাসের প্রতি সোমবার মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল। প্রত্যেক বছর যে সংখ্যায় ভক্ত আসেন এখানে সেভাবে এবছরও যদি ভক্তের সংখ্যা বেড়ে যায় তাহলে সমস্ত সরকারি নিয়মকানুন লাটে উঠে যাবে, ফলে ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনা। শ্রাবণ মাসের প্রত্যেক সোমবার বক্রেশ্বরের শিব মন্দিরের দরজা ভক্তদের জন্য বন্ধ থাকবে। ভক্তরা শিবের মাথায় জল ঢালতে পারবেন না। সেবাইতরা শুধুমাত্র নিয়ম মেনে পুজা করবেন এবং ভোগ দেবেন। শ্রাবণ মাসের সোমবারগুলি বাদ দিয়ে অন্যান্য দিনগুলি সরকারি নিয়ম মেনে মন্দিরের দরজা খোলা থাকবে এবং ভক্তরা পুজোও দিতে পারবেন।
বক্রেশ্বর শিব মন্দিরের সেবায়েতরা জানান, ভক্তদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শ্রাবণ মাসের প্রত্যেক সোমবার মন্দিরের দরজা ভক্তদের জন্য বন্ধ থাকবে। করোনার জেরে এবছর শ্রাবণ মাসে শিবের মাথায় জল ঢালা যাবে না এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।