তৃণমূলের বিরোধিতায় মমতা স্টাইলে কেষ্ট গড়ে হাজির ভারতী ঘোষ

হিমাদ্রি মন্ডল : ভারতী ঘোষ, যিনি একসময় তৃণমূল ঘনিষ্ঠ পুলিশ সুপার বলে সুপরিচিত ছিলেন। দায়িত্বে ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের। দুঁদে অফিসার হিসাবেই পরিচিতি ছিল তার, ছিলেন তৃণমূল ছাড়াও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির ঘনিষ্ঠ। আর সেই দীর্ঘ সময়ে ভারতী ঘোষকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সাথে পাশাপাশি বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে বহুবার দেখাও গিয়েছে।

কিন্তু কালক্রমে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের সাথে তার বাড়তে থাকে দূরত্ব, দূরত্বটা বাড়ে ঠিক মুকুল রায়ের সাথে তৃণমূলের দূরত্ব বাড়ার সাথে সাথে। কারণ তিনি মমতা ঘনিষ্ঠ হলেও মুকুল রায়ের তার বেশি যোগাযোগ ছিল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। রাজনৈতিক মহলের একাংশ এও মনে করেন, মুকুল রায়ের সাথে তৃণমূলের দূরত্ব বাড়ার সাথে সাথে ভারতী ঘোষের সাথে তৃণমূলের সম্পর্কও পৌঁছায় তলানীতে। শুরু হয় তৃণমূলের সাথে ভারতী ঘোষের লড়াই। ছেড়ে দেন পুলিশ সুপারের পদ, তৃণমূল সরকারও একাধিক অভিযোগ আনে ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে। এমনকি দীর্ঘ সময় এই দুঁদে অফিসার ভারতী ঘোষকে নিজেকে সমস্ত কিছু থেকে সরিয়ে থাকতে হয় দূর-দূরান্তে।

তারপর বিজেপির হাত ধরে আবার হঠাৎ আগমন তাঁর, কারণ সে সময় বিজেপিতে মুকুল রায়। দিল্লিতে বিজেপির পতাকা হাতে সরকারি অফিসার থেকে প্রত্যাবর্তন রাজনীতিতে। বিগত লোকসভা নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন ঘাটাল থেকে তৃণমূলের দীপক অধিকারী ওরফে দেবের বিরুদ্ধে। যদিও তিনি সেখান থেকে জয় ছিনিয়ে নিতে পারেননি, তবে তারপর থেকেই পাকাপাকিভাবে রাজনীতিতে অধিষ্ঠিত।

একসময়ের এই দুঁদে অফিসার, বর্তমানে বিজেপি নেত্রীর শনিবার কেষ্ট গড়ে সিউড়ি এসপি অফিসের সামনে চলা বিজেপির ধর্না মঞ্চে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অঘটন, তার ধর্ণা মঞ্চে পৌঁছানোর আগেই সকাল ১১ টার পর ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে বিজেপি নেতা ও কর্মীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ ধরনা মঞ্চ থেকে। যে ধরনা মঞ্চ করা হয়েছিল নানুরের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে খুন হওয়া বিজেপি নেতা স্বরূপ গড়াইয়ের মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করার দাবিতে।

গ্রেপ্তার হওয়া ওই বিজেপি নেতাকর্মীদের নিয়ে যাওয়া হয় সদাইপুর থানায়। সেখানে তাদের রাখা হলে বৈকাল বেলায় তাদের মুক্ত করতে সদাইপুর থানায় পৌঁছান বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ। থানার সামনে আসা মাত্রই সাধারণ মানুষ ফ্ল্যাশব্যাকে, একেবারে মমতার ধাঁচে নীল সাদা শাড়ি পরে হাজির ভারতী ঘোষ। স্টাইলেও অনেকটা একই, তবে মুখে সর্বদাই মমতা বিরোধিতা।

যদিও তিনি সেখানে উপস্থিত হয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে পারেন বিজেপি নেতা কর্মীদের, তবে আশ্বাস পান রাতের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়ার। আর এই সদাইপুর থানায় দাঁড়িয়ে তিনি পুলিশ কর্মীদেরও হুমকি দেন, সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার। তবে এহেন স্টাইলে কেষ্টগড়ে তাঁর হাজির হওয়া নিয়ে ধন্দে রাজনৈতিক মহল।