বিলাসবাহুল ভ্রমণের ক্ষেত্রে এক অন্যতম পরিবহন ব্যবস্থা হল এয়ারলাইন (Airlines) তবে এই এয়ারলাইনের প্রথম শ্রেণী অন্যান্য শ্রেণিগুলির তুলনায় সবচেয়ে বিলাসবহুল। যেখানে খুবই আরামদায়কভাবে জার্নি করা যায়। তাই এয়ারলাইন মাধ্যমে খুব আরামদায়ক ভাবে কোনো ভ্রমণকারী যদি ভ্রমণ করতে চান তাহলে এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনে নিন এই বিশেষ পাঁচটি এয়ারলাইন। যে এয়ারলাইন্সগুলির প্রথম শ্রেণীতে রয়েছে যাত্রীদের জন্য দুর্দান্ত সুযোগ-সুবিধা। চলুন সেই এয়ারলাইন্সগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
জাপান এয়ারলাইন্স (Japan Airlines): আরামদায়ক এবং বিলাসবহুল জার্নির ক্ষেত্রে অন্যতম হলো জাপান এয়ারলাইন্সের প্রথম শ্রেণ। যেখানে যাত্রীদের জন্য রয়েছে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা। JAAL-এর প্রথম শ্রেণির ভিতরের সাজ-সরঞ্জাম সবকিছুই কাঠের তৈরি। এই এয়ারলাইন্সের প্রথম শ্রেণিতে ভ্রমণ করলে মনে হবে আপনি বাড়ির মধ্যেই রয়েছেন। এই শ্রেণির স্যুটের ভিতরে রয়েছে একটি স্টোরেজ স্পেস, একচি ল্যাপটপ পাওয়ার সাপ্লাই, একটি ২৩ ইঞ্চি ব্যক্তিগত বিনোদন স্ক্রিন এবং একটি ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্ট কন্ট্রোলার। অর্থাৎ ঘন্টাখানেকের ভ্রমণের জন্য এই এয়ারলাইন্সের ফার্স্ট ক্লাসের (Business Class) সুযোগ সুবিধা আপনাকে বেশ স্বস্তি দেবে।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স (Singapur Airlines): উপরে উল্লেখিত বিশেষ পাঁচ এয়ারলাইন্সের মধ্যে এক অন্যতম এয়ারলাইন্স হলো সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স। যে এয়ারলাইন্সের প্রথম শ্রেণির ক্যাটাগরির আসন বিশ্বের বৃহত্তম। এই এয়ারলাইন্সের প্রথম শ্রেণির কেবিনে থাকে মোট ৬টি স্যুট। মূলত ফার্স্ট ক্লাস কেবিনটি উপরের ডেকের দিকে থাকে। এই কেবিনের প্রত্যেকটি স্যুটে থাকে পৃথক পৃথক আরামদায়ক বিছানা। যা যাত্রীরা নিজেদের মতো অ্যাডজাস্ট করে নিতে পারবেন। এছারাও রয়েছে একটি আরামদায়ক চেয়ার। এর পাশাপাশি প্রতিটি স্যুটে রয়েছে একটি করে ওয়ার্ডড্রব এবং ৩২ ইঞ্চি ফুল HD মনিটর। এছাড়াও এখানে দুটি স্যুট রয়েছে যেখানে দুজন যাত্রী একটি সিঙ্গেল বেডকে ডবল বিছানায় রূপান্তরিত করতে পারবেন। তবে আরও একটি বিশেষ বিষয় হল সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের খাবার এবং কেবিন স্টাফদের ব্যবহার আপনাকে বেশ আপ্লুত করবে।
ইতিহাদ এয়ারওয়েজ (Etihad Airways): ইতিহাদ এয়ারওয়েজের ফার্স্ট ক্লাস অত্যন্ত আরামদায়ক এবং বিলাসবহুল। বিলাসিতার ক্ষেত্রে এই এয়ারওয়েজের ফার্স্ট ক্লাস দুর্দান্ত। এই এয়ারওয়েজের ফার্স্ট ক্লাসে রয়েছে টপ-শেল্ফ পণ্য সহ একটি সিগার লাউঞ্জ, সাদা টেবিলক্লথ সহ একটি লা কার্টে ডাইনিং এবং দুটি ককটেল বার। এর পাশাপাশি আরাম করার জন্য রয়েছে চামড়ার চেয়ার। যেখানে বসাও যাবে আবার আরাম করে শোয়াও যাবে। এছাড়াও এখানকার খাবার থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরিষেবা আপনাকে বেশমুগ্ধ করবে।
কাতার এয়ারওয়েজ (Qatar Airways): অন্যান্য এয়ারওয়েজের ফার্স্ট ক্লাসের মতো কাতার এয়ারওয়েজের ফার্স্ট ক্লাসও বিলাসবহুল জার্নির ক্ষেত্রে চমৎকার। এই এয়ারওয়েজের অন্দরমহলের সাজসজ্জা ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করার মতো। এই এয়ারলাইন্সের প্রথম শ্রেণিতে রয়েছে আরামদায়ক বিছানাসহ রিলাক্সেশনের আলাদা জায়গা। এর পাশাপাশি রয়েছে উন্নতমানের খাবার সহ বিভিন্ন ধরনের পানীয়। এছাড়াও রয়েছে ওয়াইফাই, পাওয়ার পয়েন্ট সহ কাজ করার আলাদা জায়গা। এর পাশাপাশি বিনোদনের ব্যবস্থাও রয়েছে এই এয়ারলাইন্সের প্রথম শ্রেণিতে। অর্থাৎ সবমিলিয়ে বলা যায় কাতার এয়ারওয়েজের ফার্স্ট ক্লাস যাত্রীদের বিলাসিতার দিকে বেশ নজর রাখে।
এমিরেটস (Emirates): বিলাসবহুল জার্নির ক্ষেত্রে এমিরেটসের ফার্স্ট ক্লাসও অত্যন্ত আরামদায়ক। যার কোনো তুলনা হয় না। এমিরেটসের প্রথম শ্রেণির স্যুটগুলিতে যাত্রীদের বিলাসিতার জন্য রয়েছে একটি আলাদা বার সেট। আরো একটি বিষয় হল এমিরেটসের ফার্স্ট ক্লাসের স্যুটগুলিতে রয়েছে ভার্চুয়াল উইন্ডো। যেখানে যাত্রীরা বসে বাইরের দৃশ্যে উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়াও ফার্স্ট কেবিনে রয়েছে মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত স্লাইডিং দরজা। এর পাশাপাশি রয়েছে বসার জন্য আরামদায়ক চেয়ার। তবে একটি মজার বিষয় মাধ্যাকর্ষণ শক্তি শূন্য থাকলেও এই এয়ারলাইন্সের ফার্স্ট ক্লাসে যাত্রীরা নিজেদের মতো আসন সেট করতে পারবেন।