জেলা কংগ্রেস সভাপতির বিজেপি যোগ! সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা কর্মীদের

হিমাদ্রি মন্ডল : বীরভূম জেলা কংগ্রেস সভাপতি সভাপতি মিল্টন রশিদ নভেম্বর মাসের ৮ তারিখ চিনপাইয়ে দলীয় একটি কর্মী সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন বীরভূমে ১১ খানা সিটের মধ্যে পাঁচ খানা সিট পাবে বিজেপি। আর টিএমসি পাবে তিনখানা। আর তার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেস কর্মীদের একাংশকে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। তাদের প্রশ্ন কেন লড়াইয়ে নামার আগেই বিজেপিকে পাঁচ খানা আসন দিয়ে দিলেন কংগ্রেস সভাপতি। আর এই ক্ষোভের পাশাপাশি এবার কংগ্রেস সভাপতির বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করলেন কংগ্রেসের ওই কর্মীরা।

কংগ্রেসের অসংগঠিত শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ বীরভূম জেলা সভাপতি মিল্টন রশিদের সাথে বিজেপির যোগ রয়েছে। তাই তারা এবার সরাসরি জানিয়ে দিলেন, কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি মিল্টন রশিদ যে জায়গায় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন সেই জায়গায় কংগ্রেসের অসংগঠিত শ্রমিক সংগঠনের কর্মীরা কোনরকম অংশগ্রহণ করবে না।

শুক্রবার সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে কংগ্রেসের অসংগঠিত কর্মী সংগঠনের তরফ থেকে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির জন্মদিন পালন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। আর এই কর্মসূচি থেকেই কংগ্রেস জেলা সভাপতি মিল্টন রশিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন।

কংগ্রেসের অসংগঠিত শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ সাউ জানান, “আমরা হতবাক হয়ে গেছি আমাদের বীরভূম জেলার সেনাপতি কংগ্রেস সভাপতি লড়াইয়ে নামার আগেই পাঁচ খানা সিট বিজেপি পার্টিকে দিয়ে দিচ্ছেন। আর তার এই বক্তব্যের কারণে আজকে আমাদের কংগ্রেসের কর্মীদের মনোবল ভেঙে পড়েছে। তাই আমরা বলতে চাইছি উনি যদি বিজেপি করতেই চান তাহলে বিজেপিতে গিয়েই করুন। অন্ততপক্ষে উনার কংগ্রেসের থেকে আর লাভ নেই। উনি বিধায়ক পদ ছেড়ে চলে যেতে পারেন বিজেপিতে। আমাদের কোনো আপত্তি নেই।”

পাশাপাশি তিনি এটাও জানান যে, “বীরভূম জেলার সেই সকল কংগ্রেস নেতৃত্বের সাথে আমরা আজ থেকে সমস্ত রকম সম্পর্ক ছিন্ন করছি যাদের সাথে বিজেপির যোগ রয়েছে। বীরভূম জেলা কংগ্রেস সভাপতি বীরভূম জেলায় কোন কর্মসূচি গ্রহণ করলে সেই কর্মসূচিতে বীরভূম জেলা কংগ্রেসের অসংগঠিত সংগঠনের কর্মী অংশগ্রহণ করবে না।”

কংগ্রেসের কর্মীদের একাংশের এমন ক্ষোভ দেখে রাজনৈতিক মহলের মন্তব্য প্রকাশ্যে ফুটে উঠছে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। যদিও এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূম জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক মিল্টন রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানা যায় তিনি ব্যস্ত রয়েছেন।

যদিও এপ্রসঙ্গে বিজেপির বীরভূম জেলা প্রাক্তন সভাপতি নির্মল চন্দ্র মন্ডল জানিয়েছেন, “আমি মিল্টন রশিদকে খুব ভালভাবে চিনি। তার বিরুদ্ধে এই যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সর্বৈব মিথ্যা। মিল্টন রশিদ মনেপ্রাণে কংগ্রেসী। কিন্তু এখন কেন এই অভিযোগ আনা হলো তা বুঝতে পারছি না।”