HS Result 2024: স্কুলের মধ্যে উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম হয়ে নজরকাড়া রেজাল্ট ছেলের, কিছুই জানতেন না দিনমজুর বাবা!

Shyamali Das

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : অনেকের বাবা মা তাদের ছেলেমেয়েদের জন্য যা প্রয়োজন সবকিছু মুখের সামনে নামিয়ে দেন। কিন্তু তারপরেও দেখা যায় সেই সকল ছেলেমেয়েদের অনেকেই পড়াশোনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাবা মায়েদের চাওয়া-পাওয়া রাখতে পারে না। আবার কিছু ছেলেমেয়েদের দেখা যায় যাদের বাড়িতে হাজার অনটন থাকলেও তারা বাবা-মায়ের মান-সম্মান সব সময় শিখরে নিয়ে যায়। ঠিক সেই রকমই এবার উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল (HS Result 2024) প্রকাশ হতে একটি ঘটনা সামনে এলো।

এবার যে ঘটনাটি ঘটেছে সেই ঘটনাটি রীতিমত অবাক করা। ঘটনাটি ঘটেছে নদীয়ায়। নদীয়ার তেহট্ট থানার চিলাখালি দক্ষিণপাড়ার রণবীর শিকদার নামে এক পড়ুয়া এই বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল সিদ্ধেশ্বরীতলা ইনস্টিটিউট থেকে। সে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করে। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর দেখা যায় সে স্কুলের মধ্যে প্রথম স্থান দখল করেছে।

স্কুলের মধ্যে প্রথম স্থান দখল করার ফলে তার সহপাঠী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে তাকে নিয়ে আলাদা আবেগ তৈরি হলেও তার বাবা কিছুই জানতেন না। তার বাবা রঞ্জিত শিকদার, পেশায় দিনমজুর সেই সময় মাঠে নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। অন্যদিকে তার মা পুষ্পা সিকদার গৃহবধূ। তিনিও সারাদিন নিজের কাজেই ব্যস্ত থাকেন। আর সংসারের খরচ যোগাতে রঞ্জিতবাবুকে সকাল থেকে সন্ধ্যা মাঠে-ঘাটে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ছুটে বেড়াতে হয়। রঞ্জিতবাবু যখন মাঠে কাজ করছিলেন সেই সময় কেউ একজন তাকে এসে খবর দেন তার ছেলের এমন ফলাফল নিয়ে।

আরও পড়ুন ? Twin Sisters in HS Merit List: উচ্চমাধ্যমিকের মেধা তালিকায় যমজ দুই বোন, র‍্যাঙ্ক আলাদা হলেও নজির হুগলিতে

রণবীর সিকদার ছোট থেকেই পড়াশোনায় খুব ভালো। তবে তার বাবা মায়ের কাজের ব্যস্ততায় তাকে সেই ভাবে কিছু দেখানো না হওয়ার কারণে প্রতিবেশী এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রকাশ চন্দ্র রায় তার সমস্ত রকম দায়িত্ব নিয়েছেন। স্কুলে ভর্তি থেকে শুরু করে বই কেনা, টিউশন দিয়ে আসা, এমনকি নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পড়ানো সমস্ত কিছু তিনি করিয়ে থাকেন। আর এই প্রত্যেকের সম্মান রাখলেন রণবীর।

রণবীর এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৬৩ নম্বর পেয়েছে। বাংলায় তার নম্বর এসেছে ৯১, ইংরেজিতে এসেছে ৯৮, রসায়নে ৯০, পদার্থবিদ্যায় এসেছে ৮৪ এবং গণিতে এসেছে ১০০ তে ১০০। রঞ্জিত শিকদার জানিয়েছেন, তার ছেলে দিনে অন্ততপক্ষে পাঁচ ছ’ঘন্টা পড়াশোনা করতো। তবে তারা কিছু দেখার মত সুযোগ পেতেন না। যা দেখাশোনার কাজ করতেন তিনি হলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রশান্ত চন্দ্র রায়।