বিজেপিতে যাওয়ার আগে কোন কোন দলের জার্সি গায়ে দিয়েছেন দীনেশ ত্রিবেদী

নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে যেদিন তিনি তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন এবং ইস্তফা দেওয়ার কারণ হিসেবে জানান, ‘দম বন্ধ হয়ে আসছিল। আন্তরাত্মার ডাক শুনেই এই সিদ্ধান্ত।’ তখনই ধরেই নেওয়া হয়েছিল দীনেশ ত্রিবেদী গেরুয়া শিবিরেই নাম লেখাতে চলেছেন। গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর জল্পনা হিসেবে তাঁর বক্তব্যে সেদিন ফুটে উঠেছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে বেশ কিছু বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি। অবশেষে সেই সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে মোদীর ব্রিগেড সমাবেশের ২৪ ঘন্টা আগে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখালেন তিনি।

তবে দীনেশ ত্রিবেদীর জার্সি বদলের ঘটনা এই নতুন নয়। পোড়-খাওয়া এই রাজনীতিবিদ একাধিকবার জার্সি বদল করেছেন। তিনি শেষ দুই দশকের বেশি সময় কাটান রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের সাথে। শাসকদল তৃণমূলের সাথে থাকাকালীন একাধিকবার তিনি মমতা ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন, আবার কখনো কখনো দূরে সরে যান। চলুন দেখে নেওয়া যাক দীনেশ ত্রিবেদী রাজনৈতিক যাত্রাপথ।

আটের দশকে কংগ্রেসের হাত ধরে দীনেশ ত্রিবেদী রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু হয়। তবে কংগ্রেসের হাত ধরে রাজনৈতিক জীবন শুরু হলেও সেই দলে তিনি বেশিদিন থাকেননি। পরে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দেন জনতা দলে।

এরপর নয়ের দশকে তিনি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে নাম লেখান তৃণমূলে। সে সময় তিনি তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক পদে বসেছিলেন। আর এরপরই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। পাশাপাশি তিনি দিল্লির তৃণমূলের মুখ্য হয়ে দাঁড়ান।

তৃণমূলের থাকাকালীন দীনেশ ত্রিবেদী ২০১১ সালের ১৩ই জুলাই রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তবে সেটাও তার কাছে সুখকর হয়নি। তার আমলে পরের বছর রেল বাজেট পেশ করার সময় তিনি সমস্ত ধরনের ট্রেনের টিকিটের ভাড়া বাড়ানোর সুপারিশ করেন। যাওয়ার পরেই তিনি তৃণমূল নেত্রীর বিরাগভাজন হন। নেত্রীর সাথে কথা না বলেই কেন এমন সুপারিশ সেই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় তাকে। আর এই সকল চাপে পড়েই বাজেট পেশ করার মাত্র ১৯ দিন পরেই তিনি রেলমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন।

[aaroporuntag]
এরপর ২০১৪ সালের লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে তিনি জয়লাভ করেন বারাকপুর কেন্দ্রে। তবে ওই কেন্দ্রের তাকে হারের মুখ দেখতে হয় ২০১৯ সালে অর্জুন সিং-এর কাছে। তবে এরপর ২০২০ সালের ৩ এপ্রিল তিনি রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ মনোনীত হন। আর সেই সাংসদ পদ থেকে ১০ মাসের মধ্যে ইস্তফা দেন এবং ২০২১ এর ৬ মার্চ গেরুয়া শিবিরে নাম লেখালেন।