Dubrajpur: দুবরাজপুরে শান্তি কমিটির বৈঠক, ডিজে বাজনায় নিষেধাজ্ঞা এবং প্যান্ডেলে নিরাপত্তায় জোর

Dubrajpur: হাতে গোনা আর কয়েকটা দিন, তারপরেই বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো। আর সেই উপলক্ষে দুবরাজপুর থানার পুলিশের উদ্যোগে দুবরাজপুর শহরের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ৩০টি দুর্গাপুজো কমিটিকে নিয়ে শান্তি কমিটির বৈঠক হয়ে গেল দুবরাজপুর পৌরসভার হল ঘরে। মূল লক্ষ্য দুবরাজপুরে দুর্গাপুজোয় শব্দ দানব ডিজে মুক্ত করার। এই শান্তি কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডিএসপি পথিক রায়, দুবরাজপুরের সিআই শুভাশিস হালদার, দুবরাজপুর থানার ওসি মনোজ সিং, দুবরাজপুর দমকল বিভাগের ওসি কৃষ্ণদয়াল বসু, দুবরাজপুর ট্রাফিক ওসি সন্তু ব্যানার্জি, পৌরসভার চেয়ারম্যান পীযূষ পান্ডে সহ পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা।

এদিন দুবরাজপুর (Dubrajpur) শহরের দুর্গাপুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে দুর্গাপুজোর নানান কর্মসূচি ও সমস্যার কথা শোনেন পুলিশ আধিকারিকরা। পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকেও নানান সরকারি বার্তাও দেওয়া হয় দুর্গাপুজো উদ্যোক্তাদের। কয়েকদিন পর দুবরাজপুর থানার পুলিশের পক্ষ থেকে দুবরাজপুর শহর ও গ্রামীণ এলাকার দুর্গাপুজো কমিটিগুলোকে নিয়ে আবারও মিটিং করবে।

আজকের মিটিংয়ে বৈঠকে পুজো নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য একাধিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়

  1. ডিজে বাজানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। কেউ আইন ভাঙলে তাৎক্ষণিক পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
  2. প্রতিটি প্যান্ডেলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক। ফায়ার এক্সটিংগুইশার রাখতে হবে।
  3. বড় প্যান্ডেলগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো ও পর্যাপ্ত আলো রাখার নির্দেশ।
  4. প্রতিটি কমিটিকে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে মাইক বা শব্দযন্ত্র বাজানো যাবে না।
  5. ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদেরও নিয়োজিত করার কথা বলা হয়েছে।
  6. প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় বিভিন্ন কমিটির নির্দিষ্ট সময়সূচি মানতে হবে যাতে ভিড় ও বিশৃঙ্খলা এড়ানো যায়।

আরও পড়ুন: কোপাই নদী থেকে বাড়ির কাজের জন্য দু’বস্তা বালি তোলায় চরম বিপত্তি দুই আদিবাসী যুবকের

এসডিপিও বলেন যে, পুজোর আনন্দে কোনোভাবেই যেন আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয়। উচ্চ শব্দে ডিজে বাজানো যাবে না। যারা নিয়ম ভাঙবেন তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুবরাজপুর (Dubrajpur) পৌরসভার চেয়ারম্যান জানান যে, পুজো আমাদের গর্বের উৎসব। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পুজো করতে হবে। এজন্য সব কমিটির সহযোগিতা অপরিহার্য। অধিকাংশ পুজো কমিটি প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের মতে, শব্দদূষণ ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে এই পদক্ষেপ প্রয়োজন। তবে কিছু কমিটি অনুরোধ করেছে যে, ঢাক-ঢোল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যেন অযথা বাধা সৃষ্টি না হয়। শব্দসীমার মধ্যে স্থানীয় ঐতিহ্যকে বজায় রাখার সুযোগ দিতে হবে।

দুবরাজপুর (Dubrajpur) শহরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৫০টি দুর্গাপুজো হয়। মূলত বিভিন্ন সরকারি বিধি নিষেধ মেনে সুষ্ঠুভাবে দুর্গা উৎসব পালন করার জন্যই এই শান্তি কমিটির বৈঠক। এদিন আলোচনায় উঠে এসেছে গতবারের মতো এবারেও ডিজে পুরোপুরি বন্ধ করা, শহরে যাতে যানজট না হয় সেইদিকে নজর দেওয়া, দুবরাজপুরে দুর্গাপুজোর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ অস্ত্র হাতে জয়তারা উৎসব সেই উৎসব যাতে শান্তিপূর্ণভাবে হয় সেই নিয়েও এদিন আলোচনা হয়। শহরবাসীর একাংশ প্রশাসনের কড়াকড়িকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। বিশেষত পরিবার ও প্রবীণরা মনে করছেন, শব্দদূষণ রোধে ডিজে নিষিদ্ধ হলে শান্ত পরিবেশে উৎসব উপভোগ করা যাবে। তবে কিছু তরুণ জানিয়েছেন, ডিজে না থাকলেও পুজোয় আনন্দের অন্য আয়োজন রাখা উচিত।