‘দিদির ছোঁয়ায় যাবেন না, গেলেই অপরাধী হয়ে যাবেন’, মহঃ সেলিম

“বারমুন্ডা মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়” কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে কটাক্ষ মহঃ সেলিমের

হিমাদ্রি মন্ডল : জেলা কমিটি ডাকে বীরভূমের একটি জনসভা করা হয় জেলা সিপিএমের পক্ষ থেকে। জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহঃ সেলিম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলার বামপন্থী নেতাকর্মীরা।

এনআরসি ইস্যুতে মহঃ সেলিম বলেন, “লাল ঝাণ্ডার পক্ষ থেকে বলছি আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে আমরা এনআরসি হতে দেবো না। দিলীপ ঘোষ জেনে রাখুন বাংলা থেকে বলছেন দু কোটি মানুষকে তাড়াবেন, কাঁটা তারের ওপারে আমরা পেরোতে দেবো না। আর মোদি দিদির নাটক আমরা বেশ বুঝতে পারছি।”

এরপরই বাবুল সুপ্রিয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলায় যে একটা মন্ত্রী আছে সেটা কেউ জানত না। যাদবপুর গিয়ে বাচ্চা বাচ্চা ছেলে মেয়েদের অপমান করেছে। মন্ত্রী হয়েছেন পরিবেশ দপ্তরের, পূর্ণমন্ত্রী না, হাফ মন্ত্রীও না, হাফ আর ফুলপ্যান্টের মাঝে যে বারমুন্ডা প্যান্ট হয় সেই বারমুন্ডা মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। গোটা বিশ্ব যেদিন পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে রাস্তায় নেমেছেন, সেদিন পরিবেশমন্ত্রী যাদবপুরে গিয়েছেন শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে।”

এরপর তিনি বলেন, “আমি নিজে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বিজেপির যে সমস্ত দালাল বাবুল সুপ্রিয়, দিলীপ ঘোষরা ৪ বার জন্ম নিলেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যে শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করতে হয় তা করতে পারবে না।”

দিলীপ ঘোষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এখন যারা বলছেন তুমি ভারতীয় কিনা প্রমাণ কর, তোমার বাবার সার্টিফিকেট আছে কিনা বের করো, তোমার জমির দলিল আছে কিনা বের করো, তোমার স্কুলের সার্টিফিকেট দাও। আর এসব জিজ্ঞাসা করছে দিলীপ ঘোষ। ও বেটা দিলীপ ঘোষকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় তোমার স্কুলের সার্টিফিকেট আছে কিনা দেখাও ও বের করতে পারবেনা।”

এরপর প্রধানমন্ত্রী প্রসঙ্গে মহঃ সেলিম বলেন, “উনি নাকি বলেন, উনি দিল্লি ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করেছেন। যদি পাশ করে থাকেন তাহলে উনার সহপাঠী থাকবে তো। উনি নাকি বলেন, গুজরাট ইউনিভার্সিটি থেকে এন্টার পলিটিক্যাল সাইন্সে এমএ করেছি। তাহলে যে পড়িয়েছেন মোদি বাবুকে সেই শিক্ষক থাকবে, তো তাকেও খুঁজে পাওয়া গেল না একটাও সহপাঠী পাওয়া গেল না।” সে প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “যে নিজের সার্টিফিকেট জমা দিতে পারেনা সে ভারতবর্ষে ও বাংলার কোটি কোটি মানুষকে বলছেন সার্টিফিকেট জমা করো।”

দিদিকে বলো প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন “দিদিকে বলো, দিদিকে বলো করে বিভিন্ন জায়গায় হোডিং লাগানো হয়েছে। অথচ দিদিকে যখন বলতে গেল বামপন্থী ছাত্র সংগঠন তখন তাদের ওপর টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটালো, জলকামান চালক, লাঠিচার্জ করল দিদির পুলিশ। তাদেরকে গ্রেপ্তার করে একাধিক ধারা দিয়ে মামলা রুজু করল পুলিশ।”

এছাড়াও তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালের যে লড়াই তাহল নকল লড়াই। ঠিক wwf এর মত। আসলে রাজ্যের মানুসডট মূল সমস্যাকে ছড়িয়ে দিয়ে একটা রাজনৈতিক সমস্যা সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। আসলে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর লড়াই হলো নিজেদের মধ্যে আপোষের লড়াই। এরা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভাঙতে চাইছে।”

এরপরেই উঠে আসে রাজীব কুমার প্রসঙ্গ, যে প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি জানান, “গোয়েন্দা কাহিনীতে সবসময়ই দেখা যায় গোয়েন্দারা অপরাধী খোঁজেন, অপরাধের কারণ খোঁজেন। কিন্তু এই মমতা ব্যানার্জি বিগত আট বছরে যা করেছেন, যাতে করে যে অফিসার ছিলেন সবথেকে ভালো, ট্রেনিং প্রাপ্ত, পেশাদার। তাকেই চিটফান্ডের টাকার চক্করে অপরাধীকে ধরার পরিবর্তে অপরাধীকে পাচারের জন্য এমন ভাবে ব্যবহার করেছেন যে গোয়েন্দাপ্রধান নিজেই অপরাধীকে খোঁজার পরিবর্তে নিজেই অপরাধীর মত লুকিয়ে বেড়াচ্ছেন। মমতা ব্যানার্জির কাছে যেই গেছেন, তারই এমন অবস্থা হয়েছে। শিল্প-সাহিত্যিক হোক, ছবি আঁকি হোক, সম্পাদক হোক। সুতরাং বাংলার মানুষদের বলছি ওই দিদির ছোঁয়ায় যাবেন না, গেলেই আপনি কিন্তু অপরাধী হয়ে যাবেন।”