দীঘা তো অনেকবার গেছেন! কিন্তু জানেন এই জায়গার আগে কি নাম ছিল?

নিজস্ব প্রতিবেদন : বাঙ্গালীদের ছুটি আর ঘুরতে যাওয়া মানেই সবার প্রথমেই যে জায়গার নামটি আসে সেটি হল দীঘা (Digha)। অল্প সময়ের মধ্যে কম খরচে এর থেকে ঘুরতে যাওয়ার ভালো জায়গা আর কিছু হতে পারে না বলেই বারে বারে পূর্ব মেদিনীপুরের এই সমুদ্র সৈকতে ভিড় জমাতে দেখা যায় পর্যটকদের। তবে অনেকেই রয়েছেন যারা বারবার দীঘা গেলেও এই জায়গার আগে কি নাম ছিল তা জানেন না? না জানাটাই স্বাভাবিক, কারণ সে বহু বছরের কথা।

দিঘা কেবল এখন পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গা হয়ে উঠেছে এমনটা কিন্তু নয়। ব্রিটিশ আমল থেকেই দিঘায় ঘুরতে যাওয়ার হিড়িক ছিল সবার মধ্যে। তবে হিড়িক থাকলেও সেই সময় তো আর এত সুন্দর যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। যে কারণে দিঘার মত এই সমুদ্র সৈকতে সবচেয়ে বেশি ঘুরতে যেতেন ইংরেজরা। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে দীঘায় ইংরেজ অফিসাররা আসতেন স্বাস্থ্য বদলাতে।

যে সময়কার কথা বলা হচ্ছে সেই সময় অবশ্য দীঘা ছিল অন্য নামে পরিচিত। অনেকের কাছেই বিশ্বাস না হলেও সেই সময় দেখা ছিল বীরকূল নামে পরিচিত। ১৭৭৮ সালে বীরকুলকে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। পরে ১৭৮০ সালে নিজের স্ত্রীকে লেখা একটি চিঠিতে ওয়ারেন হেস্টিংস বর্তমান দিঘা তথা তৎকালীন বীরকুলকে ব্রিংটন অফ ক্যালকাটা বলে উল্লেখ করেছিলেন।

এরপর আবার ১৭৯৬ সালে চার্লস চেপম্যান স্বস্ত্রীক তৎকালীন বীরকূলে বেড়াতে আসেন। তারপর ওয়ারেন হেস্টিংকে তিনি একটি চিঠি লেখেন এবং বিলকুলের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এরপর আবার ১৯২৩ সালে জন ফ্রান্স স্মিথ নামে এক ইংরেজ ব্যবসায়ী দীঘায় এসে এখানকার সমুদ্র সৈকত দেখে এতটাই মুগ্ধ হন যে সেখানে একটি বাংলো বানিয়ে ফেলেন। সেখানেই তিনি বসবাস শুরু করেন এবং তার অনেক লেখা থেকে বাড়তে শুরু করে দিঘার জনপ্রিয়তা।

স্বাধীনতার পর মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায়কে দীঘায় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য অনুরোধ জানান স্মিথ। ১৯৫০ সালে দীঘায় গড়ে ওঠে পর্যটন কেন্দ্র এবং ধীরে ধীরে এর পথচলা শুরু হয়। আর এই ভাবেই ধাপে ধাপে বিরকুল পরিণত হয় এখনকার দীঘায়। তবে দীঘা বীরকুল থেকে কবে দীঘায় পরিণত হল তা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।