Birbhum: বিশু ডাক্তার, যার নামটুকুই যথেষ্ট লাভপুর তথা বীরভূম, বাংলার মানুষদের কাছে। বিশু ডাক্তার, যার ভালো নাম সুকুমার চন্দ্র, যিনি কথা সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক কথাতেই গ্রামে থেকে গিয়েছেন। লোভনীয় চাকরির লোভে অন্যত্র চলে যাননি। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য এবং ডাক্তার বিধান চন্দ্র রায়ের ছাত্র বিশু ডাক্তার নিজের কর্মজীবনে বহু মানুষের মুখে যেমন হাসি ফুটিয়েছেন, ঠিক সেই রকমই তিনি অনেকেরই ডেথ সার্টিফিকেট লিখেছেন। তবে এমন মানুষটিকেই ৯৮ বছর বয়সে দাঁড়িয়ে এমন একজনের ডেথ সার্টিফিকেট লিখতে হলো, যা তার জীবনের সবচেয়ে বড় বুকফাটা দুঃখ। যার ডেথ সার্টিফিকেট লিখতে গিয়ে হাত কাঁপলো।
গত শুক্রবার বিশু ডাক্তারের অন্যতম প্রিয়জন স্ত্রী রাধা চন্দ্র পরলোক গমন করেন। নিজের স্ত্রী পরলোক গমন পরিপ্রেক্ষিতে তিনি নিজেই ডেথ সার্টিফিকেট লেখেন। যে মানুষটি নিজের কর্মজীবনে অজস্র মানুষের ডেথ সার্টিফিকেট লিখেছেন সেই মানুষটিকে এবার নিজের স্ত্রীর ডেথ সার্টিফিকেট লিখতে গিয়ে কোথাও যেন থমকে যেতে হল।
গত চার মাস ধরে বিশু ডাক্তারের স্ত্রী রাধা চন্দ্র বার্ধক্যজনিত কারণে শয্যাশায়ী ছিলেন। তবে স্ত্রী শয্যাশায়ী থাকলেও তিনি কিন্তু রোগী দেখতে ভুলেননি। এমনকি স্ত্রীর মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত রোগী দেখেছেন।
বিশু ডাক্তার এমন একজন চিকিৎসক যার কাছে আসা রোগীরা খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন। তার অভিজ্ঞতার দাম কতটা তা এলাকার মানুষরা খুব ভালোভাবেই জানেন। পাশাপাশি তিনি রোগী দেখেই টের পান কার আর্থিক অবস্থা কেমন। আর এমনটা টের পেয়ে তিনি পিছিয়ে পড়া বহু রোগীর ক্ষেত্রে বিনামূল্যে চিকিৎসা করে দেওয়ার পাশাপাশি ওষুধের দামও নেন না।
