কিছু লোককে দেখলেই কুকুর চিৎকার শুরু করে! কেন এমন করে তারা?

বর্তমান দিনে কুকুর বিড়ালের প্রতি মানুষের ভালোবাসা যেন আরো বেড়েছে। তাদের মায়া ভরা দুটি চোখের দিকে তাকালে গলে যায় মানুষের মন। বাড়িতে কুকুর বিড়াল পোষার সংখ্যা এখন আগের থেকে বেড়েছে। তবে বাড়িতে যেসব কুকুর পোষা হয় তারা কোনো কারণ ছাড়াই আচমকা চিৎকার করে ওঠে। শুধু অচেনা লোকজন দেখলে নয়, অধিকাংশ সময় ঘরের চেনা মানুষজনদের দেখেও ঘেউ ঘেউ করে ওঠে কুকুররা। কুকুরের মালিক তাকে বকাঝকা করলেও সে কিছুতেই চুপ করেনা।

এই অদ্ভুত আচরণের কারণ হল কুকুরের অসাধারণ সংবেদনশীল ব্যবস্থা ও মনোবিজ্ঞান। কুকুর খুব দ্রুতই মানুষের আবেগ ও শারীরিক নড়াচড়া ধরে ফেলতে পারে। তাহলে ঠিক কীসের তাগিদে কুকুরের চোখ মাত্র কয়েকজনের ওপরেই যায়? জেনে নিন কোন উপায়ে এগুলি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ কথা সত্যি যে মানুষের তুলনায় কুকুরের ঘ্রাণ শক্তি অনেক তীব্র হয়। প্রত্যেক মানুষের শরীরে একটা অন্যরকম গন্ধ থাকে যাকে শারীরিক গন্ধ বলা হয় কুকুররা খুব সহজেই এই গন্ধ চিনে ফেলতে পারে।

আরও পড়ুন: নজরুল জয়ন্তী পালিত হল দুবরাজপুরে

কোন সময় যদি মানুষের শরীর থেকে মদ পশুপাখি বা কোন তীব্র সুগন্ধির গন্ধ পায় তখন কুকুর খুব সচেতন হয়ে পড়ে এবং জোরে চিৎকার শুরু করে। বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণার হাত ধরে জানতে পেরেছে যেসব মানুষজন মানসিকভাবে চাপে ও দুর্বল থাকে তাদের আশেপাশে থাকা কুকুররা বেশি সজাগ হয়ে থাকে। অপরদিকে কুকুরের নিরাপদ স্থল হল শান্ত ও আত্মবিশ্বাসী মানুষের সংস্পর্শ।

এই সকল ব্যক্তির কোলেই আশ্রয় খোঁজে তারা। আর তাই তারা স্নেহের স্পর্শ পেলে লেজ নাড়িয়ে ভালোবাসা প্রকাশ করে। তবে কুকুর শান্ত থাকে যতক্ষন না তারা বিভ্রান্তি বা ভুলভাল কিছু দেখে। আর দেখলেই তারশ্বরে চিৎকার করে ওঠে। খুব সতর্ক থেকে কুকুররা মানুষের শরীরের ভাষা পর্যবেক্ষণ করে। কুকুররা কিছু বিষয়কে হুমকি হিসেবে মনে করে যেমন কেউ যদি হঠাৎ হাত নাড়ে দ্রুতগতিতে হাঁটতে শুরু করে কিংবা চোখের সংস্পর্শে এগোতে শুরু করে। মানুষ এমন আচরণ করলে তারা ভয়ে ধরে যায়। তৎক্ষণাৎ তারা নিজেদের বাঁচানোর জন্য উপায় খুঁজতে থাকে।

কিছু উদাহরণের মাধ্যমে স্পষ্ট করে দেওয়া যেতে পারে কেন তারা বিশেষ কিছু লোককে দেখলেই চিৎকার করে ওঠে। যেমন কোনও মাতাল ব্যক্তি স্থিরভাবে হাঁটাচলা না করলে কুকুর এটিকে হুমকি হিসেবে নিয়ে সতর্ক হয়ে যায়। অন্যদিকে, যদি কোনও ব্যক্তি কুকুরকে আগে কোনো সময় ভয়ে দেখিয়ে তার মনে আতঙ্ক তৈরি করে থাকেন তবে নতুন কোনও ব্যক্তিকে সামনে একই রঙের পোশাক বা শারীরিক গন্ধ পেলে তার ওপর চিৎকার করতে শুরু করে।

আবার কুকুর যে নির্দিষ্ট পাড়ার মধ্যে ঘুরে বেড়ায় সেটাকেই নিজের স্থায়ী থাকার জায়গা বলে ভেবে নেয়। তাই নতুন কোনও মানুষকে সেই অঞ্চল বা পাড়ায় প্রবেশ করতে দেখলে তাকে সতর্ক করতে চিৎকার করে ওঠে।
কুকুরকে অকারণে বিরক্ত না করে নিজের সাবধানতা অবলম্বন করে এগিয়ে গেলেই কুকুর আর বেশি কিছু করেনা।