টাকা দ্বিগুণ করার প্রলোভন দেখিয়ে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা প্রতারণা, পুলিশের জালে ১

লাল্টু : ডিজিটাল লেনদেন বাড়ার পাশাপাশি দেশে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অনলাইন প্রতারণার ঘটনা। এবার সেই রকমই এক ঘটনার শিকার হয়েছেন বীরভূমের এক বাসিন্দা। তবে এই ব্যক্তি প্রতারিত হয়েছেন টাকা দ্বিগুণ করার প্রলোভনে। যদিও পুলিশ দূরদর্শীতা দেখিয়ে প্রতারককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

প্রতারক বোলপুরের এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা দ্বিগুণ করে দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন সময় লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। এই প্রতারণার অভিযোগে সুমন্ত গাঙ্গুলি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে দুবরাজপুর থানার পুলিশ। সুমন্তর বাড়ি খয়রাশোল থানার পান শিউড়ি গ্রামে। তিনি পেশায় জমির দালাল বলে জানা গিয়েছে। সুমন্ত প্রথমে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করলেও দুবরাজপুর থানার ওসি আফরোজ হোসেন দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করতেই ভেঙে পড়েন সুমন্ত এবং তারপরই বেরিয়ে আসে আসল প্রতারণা তথ্য।

জানা গিয়েছে, বোলপুরের বাঁধগড়া এলাকার বাসিন্দা মিলন কুমার রায়ের কাছ থেকে তিনি বিভিন্ন সময় ৭ লক্ষ ৩১ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেন। বেশ কিছুদিন পর মিলন কুমার রায় বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হচ্ছেন এবং এর পরেই তিনি জেলা পুলিশের দ্বারস্থ হন। মিলন কুমার রায়ের মেয়ে অনুরূপা রায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

প্রসঙ্গত, দুবরাজপুর থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া খয়রাশোলের পান শিউড়ি গ্রামের সুমন্ত গাঙ্গুলি যে সিমকার্ডটি ব্যবহার করতেন সেই সিমকার্ডটি ছিল দুবরাজপুর থানার শল্লা পাহাড় নামে এক গ্রামের এক বৃদ্ধার নামে। এই বৃদ্ধার সঙ্গে দীর্ঘদিন আগে পরিচয় হয় সুমন্তর। তাঁকেও প্রতারণা করে তাঁর ডকুমেন্টস ব্যবহার করে বাজার থেকে সিমকার্ড কেনেন সুমন্ত। সেই সিমকার্ড থেকেই চলত প্রতারণার কাজ।

তদন্তে করতে দুবরাজপুর থানার পুলিশ যখন মাঠে নামেন সিমকার্ডের ঠিকানা দেখে দুবরাজপুরে শল্লা পাহাড় গ্রামের ওই বৃদ্ধার ঠিকানা পায় এবং ওই বৃদ্ধাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর কাছ থেকে কিছু না পেয়ে পুলিশ ছেড়ে দেয়। এরপর ফোনের টাওয়ার লোকেশন খোঁজ শুরু করে দুবরাজপুর থানার পুলিশ এবং তাতে সুমন্ত গাঙ্গুলির টাওয়ার লোকেশন দেখায় দুবরাজপুরের পাকুরতলা মোড় এলাকায়।

পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে সুমন্ত খয়রাশোল থেকে দুবরাজপুর শহরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতো। ভাড়া বাড়ি থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় সুমন্ত। প্রথমে সমস্ত কিছু অস্বীকার করলে পরে অবশ্য দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে সুমন্ত পুরো বিষয়টি স্বীকার করে নেন।

এরপর সুমন্ত গাঙ্গুলিকে দুবরাজপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই বিষয়ে দুবরাজপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী রাজেন্দ্র প্রসাদ দে জানান, প্রতারণার অভিযোগে দুবরাজপুর থানার পুলিশ ৪১৯ ও ৪২০ ধারায় একটি মামলা শুরু করে। গ্রেপ্তার করা হয় সুমন্ত গাঙ্গুলি নামের এক ব্যক্তিকে। তাঁকে দুবরাজপুর আদালতে তোলা হলে ৭ দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দেন দুবরাজপুর আদালতে বিচারক।