ভারতের ইতিহাসে প্রথমবার, বিহার নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে বৃহন্নলা

নিজস্ব প্রতিবেদন : স্বাধীন ভারতে সকল মানুষের সমান অধিকার ও আত্মপ্রতিষ্ঠার যে দাবি ছিল, অবহেলিত, অসম্মানিত বৃহন্নলা সমাজের মনিকা দাস কিছুটা হলেও সেই দাবি এতদিনে সফল করতে পেরেছেন। সামাজিক প্রতিকূলতার বাঁধা কাটিয়ে তিনি মূলধারার সমাজকে দেখাতে পেরেছেন একজন বৃহন্নলা অন্য নারী পুরুষের মতোই সমান দক্ষতা ও যোগ্যতার অধিকারী হতে পারেন।

পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বর্ণ পদকপ্রাপ্ত মনিকা দাস প্রথমবার তৃতীয় লিঙ্গ ব্যক্তি বা বৃহন্নলা যিনি আগামী অক্টোবরে বিহার নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্বভার সামলাবেন। তাঁর এই উত্থান বৃহন্নলা সমাজের কাছে এক নতুন আশার দরজা খুলে দিয়েছে। এটা প্রমাণ করে দিয়েছেন, একজন বৃহন্নলা অন্য নারী পুরুষের মতো সমাজের মূলস্রোতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।

তিনিই প্রথম বৃহন্নলা যিনি তৃতীয় লিঙ্গ সমাজ থেকে উঠে এসে ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় কানাড়া ব্যাঙ্কের আধিকারিক হিসাবে কাজ করে আসছেন। বিহারের চিফ ইলেকশন অফিসার এইচ আর শ্রীনিবাস জানিয়েছেন, “বিহার ভোটে অনান্য প্রিসাইডিং অফিসারের মতোই ভোট সংক্রান্ত দায়িত্ব সম্বন্ধে মনিকা দাসকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তিনি পাটনার একটি ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব সামলাবেন। যেখানে ভোট গ্ৰহণের তারিখ ৩ নভেম্বর।”

আগামী অক্টোবরে বিহার বিধানসভা ভোটে ২,৩৪৪ জন বৃহন্নলা এবার ভোট দেবেন। যা মনিকা দাসের দায়িত্বভার গ্ৰহণের মতোই বৃহন্নলা সমাজের কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

ন্যাশানাল কাউন্সিল অফ ট্রাস্নজেন্ডার পার্সনের সদস্য রেশমা প্রসাদ জানিয়েছেন, “বৃহন্নলা সমাজের কাছে এ এক গর্বের বিষয়।” মনিকা দাসের মতোই বাংলার রিয়া সরকার ২০১৬ সালে প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে দায়িত্বভার সামলান যা গর্বিত করে বৃহন্নলা সমাজকে।

ভারতীয় সংবিধান ও গণতন্ত্র ভারতের সকল মানুষকে সমান মর্যাদা ও অধিকার দিলেও সামাজিক স্তরে বৃহন্নলা সমাজ ছিল ব্রাত্য। মূল ধারার শিক্ষা ও কর্ম জীবন থেকে বঞ্চিত হয়ে অসম্মাজনক জীবনধারণ করতে বাধ্য হতেন তাঁরা। মনিকা দাস, রিয়া সরকারদের এই লড়াই আগামী দিনের বৃহন্নলা সমাজকে এক নতুন জীবন ও আশার সন্ধান দিয়েছে।