ফ্ল্যাট কিনবেন ভাবছেন, দাম বাড়তে পারে ১২ শতাংশ

শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : বর্তমানে অনেক মানুষই ফ্ল্যাটের কেনার দিকে ঝুঁকেছেন। কিন্তু এবার জানলে অবাক হবেন আগামী ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে ফ্ল্যাটের মূল্য বৃদ্ধি পেতে চলেছে প্রায় ১২ শতাংশ পর্যন্ত। তাই ফ্ল্যাট কেনার পরিকল্পনা যাদের রয়েছে তাদের জন্য মোটেই এটি ভালো খবর নয়। বিগত কয়েক মাসেও ফ্ল্যাটের মূল্য প্রায় পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু এবার আবাসন নির্মাতা সংস্থাগুলির সর্বভারতীয় সংগঠন ক্রেডাইয়ের এর পশ্চিমবঙ্গের শাখার তরফ থেকে এক ধাক্কায় ফ্ল্যাটের মূল্য এতটা বেড়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ক্রমবর্ধমান কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধির কারণেই এমন সিদ্ধান্ত। আবাসন নির্মাণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সামগ্রী যেমন স্টিল, বালি, অ্যালুমিনিয়াম, পাইপ ইত্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। যেখানে ২০২০ সালের অক্টোবরে স্টিলের দাম কলকাতায় ছিল ৪৫ টাকা প্রতি কেজি। যা এই বছরে ৬২ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে। বালির ক্ষেত্রেও মূল্য প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে টাইলসের দাম ও কম নেই প্রায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। গত এক বছরে ১২ শতাংশ নির্মাণ খরচ এবং শ্রমিক খরচ প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি হওয়ায়, সমস্ত কিছুর প্রভাবের জেরে এই মূল্যবৃদ্ধি।

বাড়ি নির্মাণের সমস্ত জিনিসের মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রতি বর্গফুট খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। নির্মাণ সামগ্রীর ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ফ্ল্যাট বিক্রির ক্ষেত্রে।

আবাসন শিল্পের সাথে যুক্ত ব্যক্তিরা এই মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, একদিকে ইস্পাতের মূল্য বৃদ্ধি অপরদিকে কয়লার যোগান কম হওয়ায় কারখানা চালানোর ক্ষেত্রে ডিজেলের খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইস্পাতের মূল্য এত বৃদ্ধি হওয়ায় তার ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে আবাসন শিল্পকে। সেক্ষেত্রে আবাসন শিল্পে দাম বাড়ানো ছাড়া যে আর কোনো উপায় দেখছেন না আবাসন শিল্পের সাথে যুক্ত মানুষরা।

ক্রেডাই বেঙ্গলের সভাপতি নন্দু বেলানি বলেছেন, স্টিলের ৪৫ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি তার সাথে সাথে তামা, অ্যালুমিনিয়ামের দাম বৃদ্ধির কারণেই যে ফ্ল্যাটের দাম ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে তাই জানানো হয়েছে। এছাড়াও উত্তরবঙ্গে পরিবহন এবং বালির মূল্য বৃদ্ধির কারণে ফ্ল্যাটের মূল্য ধাপে ধাপে বাড়বে।

এক্ষেত্রে কেবল ফ্ল্যাটের মূল্য বৃদ্ধি নয় নির্মাণ সামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণের কথা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে। এবার সরকার এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।