এই ডিজিটাল যুগে মুঠোফোন থাকা মানেই তাতে রয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবার সুবিধা। আর ইন্টারনেট পরিষেবা বললেই যে সংস্থার নাম প্রথমেই মাথায় আসে তা হল মুকেশআম্বানির জিও। যদিও জিওকে টেক্কা দিতে সস্তায় বেশি দিনের মেয়াদ সহ রিচার্জ প্ল্যান এনে গ্রাহকদের মুখে হাসি ফোটায় বিএসএনএল। তবুও দ্রুত ইন্টারনেট পরিষেবার প্রদানের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে জিওই। আর এবার মুকেশ আম্বানির সংস্থা জিও আবারও খবরের শিরোনামে উঠে এলো।
সম্প্রতি Comptroller and Auditor General of India বা ক্যাগের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারের এক বিরাট আর্থিক ক্ষতির তথ্য প্রকাশ করেছে। সুত্র মারফত জানা গিয়েছে, বিগত ১০ বছর কেটে গেলেও রিলায়েন্স জিওর কাছ থেকে বিল পায়নি সরকারি টেলিকম সংস্থা বিএসএনএল। যার ফল স্বরূপ এক মোটা অংকের টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরকারের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৭৫৭.৫৬ কোটি টাকা। এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে এত টাকা ক্ষতির আসল কারণ কী?
আরও পড়ুন: Bangladesh Break Comment : প্রদ্যোৎ মাণিক্যের বিস্ফোরক হুঁশিয়ারি, বাংলাদেশের বিভাজনের ইঙ্গিত
ক্যাগ হল দেশের শীর্ষ অডিটিং সংস্থা। ইতিমধ্যেই তাদের প্রকাশ করা এক রিপোর্ট ঘিরে হৈচৈ পড়ে গিয়েছে। রিপোর্ট মারফত জানা গিয়েছে, সরকারি টেলিকম সংস্থা বিএসএনএল এবং রিলায়েন্স জিওর মধ্যে Master Service Agreement নামক এক চুক্তি ছিল। চুক্তি অনুযায়ী জিওকে খরচ বহন করতে হতো বিএসএনএল এর অবকাঠামো ব্যবহার করার জন্য। তবে বিগত ১০ বছর কেটে গিয়েছে অর্থাৎ ২০১৪ সালের মে মাস থেকে ২০২৪ সালের মার্চ মাস। অথচ জিওকে কোনও বিলই পাঠাতে দেখা যায়নি বিএসএনএল এর তরফে।
যার ফলে জিওর কাছ থেকে বিএসএনএল ১৭৫৭.৫৬ কোটি টাকা জোগাড় করতে পারেনি। একইসাথে এক বিরাট অংকের লাইসেন্স ফি যার পরিমাণ ৩৮.৩৬ কোটি টাকা সেটিও আদায় করতে পারেনি বিএসএনএল। আবার উপরি ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিং চার্জের ২৯ কোটি টাকাও পকেটে ঢোকেনি বিএসএনএল এর।
ক্যাগ এর রিপোর্ট দেখেই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, বিএসএনএল তাদের দুই সংস্থার মধ্যেকার চুক্তির শর্ত সঠিকভাবে পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের তরফে সঠিক সময়ে বিল পৌঁছায়নি জিওর কাছে। ফলে জিও কোনরকম অর্থ প্রদান করতে পারেনি। এই চুক্তিতে মূল্যবৃদ্ধির যে শর্ত রাখা হয়েছিল তাও কার্যকর করা হয়নি। ফলে সরকারের যে বিপুল পরিমাণ অর্থের ক্ষতি হয়ে গিয়েছে তার জন্য বিএসএনএল এর ব্যাপক গাফিলতিকেই দায়ী করা হচ্ছে।
স্বাভাবিকভাবেই এখন নানান মহল থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিএসএনএল এর কর্মকর্তাদের এই গাফিলতির বিরুদ্ধে আদেও কী কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে সরকারের তরফে? তবে এই প্রশ্নের জবাবে সরকার এখন মুখ খুলতে নারাজ। কিন্তু তদন্তের কাজে হাত লাগানো হতে পারে। একটি সরকারি সংস্থা কর্তৃক এহেন কাজ মোটেই বরদাস্ত করা যায়না। কারণ এতে জুড়ে রয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষের করের অর্থ। এখন নজর শুধু একদিকেই যে সরকার কীভাবে এই বড় অংকের টাকার ক্ষতির সমাধান করে।