Indian cricketer: ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য থেকে এসবিআই এর কেরানি, দুটো ওডিআই পরেই ভুলে গেছেন সবাই। ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের একটা সময় খুব দুরবস্থা চলছিল এই ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ আর বিংশ শতাব্দীর সূচনা এই সময়টা জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রচন্ড ওঠা পরা চলেছে। ম্যাচ গড়াপেটার কারণে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে ভারতীয় জাতীয় দলকে। এই পরিস্থিতিতে বেশ কিছু নতুন সদস্যের খোঁজে ছিল ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দল। এরপর এই সময় দলে যোগ দেন হরভাজন সিং, যুবরাজ সিং, বীরেন্দ্র সেহওয়াগ প্রমুখ ব্যক্তিরা। জাতীয় দলের হয়ে খেলে আন্তর্জাতিক স্তরে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তারা। কিন্তু এই দলে ছিলেন আরো একজন। যাকে কেউ মনে রাখেনি। বর্তমানে খেলা ছেড়ে তিনি এখন এসবিআই এর কেরানি।
এই সময় ভারতীয় ক্রিকেট দলে এক ঝাঁক নতুন মুখ যুক্ত হয়। কিন্তু কেউ জনপ্রিয়তার শীর্ষ পৌঁছেছে আবার কেউ একেবারে হারিয়ে গেছে। অনেকেই আছেন যারা বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলেছিলেন কিন্তু একবার বাদ দিয়ে দেওয়ার পর আর ফিরে আসার কোন সুযোগ দেওয়া হয়নি তাদেরকে। সেই দলে নাম রয়েছে অজয় রাতরা, দ্বীপ দাসগুপ্ত, এসএস দাস, টিনু জোহানন আরো অনেকে। এদের মধ্যেই এমন একজন আছেন যিনি একবার বাদ পড়ার পর আর লাইম লাইটে ফিরেই আসেননি। একসময় ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছিলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের হয়ে। সৌরভ গাঙ্গুলী, রাহুল দ্রাবির প্রমুখ বিশিষ্ট ক্রিকেটারদের সাথে শেয়ার করেছিলেন ড্রেসিং রুম। কিন্তু আজ তিনি এসবিআই এর সামান্য কেরানি।
কথা হচ্ছে জ্ঞানেন্দ্র পান্ডেকে (Indian cricketer) নিয়ে। উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা এই বাঁহাতি স্পিনার খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নিজের ট্যালেন্ট প্রকাশ করতে সফল হয়েছিলেন। ব্যাট করার হাত ছিল দুর্দান্ত। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের জার্সি গায়ে পেপসি ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। ১৯৯৯ সালের ২৪শে মার্চ এই খেলাটির আয়োজন করা হয়। ভারতীয় দলের হয়ে খেলা এটি তার জীবনের প্রথম ম্যাচ ছিল। কিন্তু ভাগ্য সাথ দেয়নি। সেই ম্যাচে ১০ ওভারে ৩৯ রান খরচ করেছিলেন তিনি।একটিও উইকেট নিতে পারেননি। শূন্য রানে আউট হতে হয় তাঁকে।
আরো পড়ুন: জাতীয় দলে বাবা ছেলে, একজন ভারতের হয়ে আর অপরজন ইংল্যান্ডের
এরপর আবারও ভারতীয় জার্সি গায়ে পড়ার সুযোগ পান তিনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মাঠে নামেন। এই খেলাটি আয়োজন করা হয়েছিল মোহালিতে। এইবার ১০ নম্বরে ব্যাট করতে নামার সুযোগ পান তিনি। মাত্র চার রান করেছিলেন, তবে ছিলেন অপরাজিত। গোটা ম্যাচে ৩ ওভার বল করেছিলেন। খরচ হয়েছিল ২১ রান। কিন্তু এবারও কোন উইকেট তার হাতে আসেনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলা এই দুটি ম্যাচেই শেষ হয়ে যায় তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার। এই দুটি ম্যাচ খেলার পর আর কখনো ডাক পাননি ভারতীয় দল থেকে। এই একই বছরেই নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি টেস্ট ম্যাচে অংশগ্রহণ করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু বিসিসিআইয়ের হস্তক্ষেপের কারণে সেই ম্যাচ আর তাঁর খেলা হয়নি।
মাত্র দুটো ম্যাচ খেলার পরেই ভারতীয় জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন একেবারেই ভেঙে যায় তার। শেষ হয়ে যায় খেলোয়াড় (Indian cricketer) হিসেবে তার ক্যারিয়ার। কিন্তু কেন তিনি মাত্র দুটো ম্যাচ খেলার পর আর ভারতীয় দলে সুযোগ পেলেন না? এই নিয়ে প্রশ্ন করেনি কেউ। তিনি দু:খ করে বলেছিলেন কোনো সংবাদ মাধ্যমও তার হয়ে প্রশ্ন তোলেনি। প্রথমে এর জন্য নিজেকেই দায়ী করতেন। পরে বুঝেছিলেন মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকার জন্য যে ট্রিক প্রয়োজন ছিল তা জানা ছিল না তার। তবে তিনি উত্তর প্রদেশের হয়ে খেলা চালিয়ে গেছিলেন। তাঁর সীমিত খেলোয়ার জীবনে ১১৭ টি ম্যাচে ১৬৫ টি উইকেট নিয়েছেন। তিনি মোট রান করেছিলেন ৫৩৪৮। ৯ টি সেঞ্চুরি এবং ৩০ টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তার ঝুলিতে।