শ্বশুরের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূকে ঠেলে দিলো শেষ পরিণতির দিকে

অমরনাথ দত্ত : বছর দুয়েক আগে বীরভূমের সিউড়ি থানার অন্তর্গত পুরন্দরপুর গ্রামের বাসিন্দা সেলিনা খাতুনের সাথে বিয়ে হয়েছিল নানুর থানার অন্তর্গত বড় সাঁওতা গ্রামের বাসিন্দা আরিফুলের।

বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্বামী শেখ আরিফুল অতিরিক্ত পণের দাবি করে। পাশাপাশি সেলিনা খাতুনের ঠাকুমায়ের নামে রয়েছে বেশ কিছুটা সম্পত্তি, সেই সম্পত্তি বিক্রি করে দেওয়ার জন্য চাপ দেয় স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় চলতো মারধর। মারধরের জেড়ে বাপের বাড়ি চলে আসে সেরিনা, দুইপক্ষের মধ্যস্থতায় আবার শ্বশুরবাড়ি পাঠানো হয় তাকে।

শ্বশুর বাড়ি ফিরে যেতেই শুরু হয় নতুন করে অত্যাচার।একদিকে সম্পত্তি অন্যদিকে শ্বশুরের ও শ্বশুরবাড়ির চাপ। অন্যদিকে ছেলে কর্মসূত্রে বাইরে থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শ্বশুর বৌমাকে দেয় শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়। তাতে রাজি না হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকেও বেধড়ক মারধর করা হতো তাকে। শ্বশুর যে তাকে কুপ্রস্তাব দিচ্ছে, শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য চাপ দিচ্ছে এ কথা বছরখানেক আগেই বাপের বাড়ির লোকজনকে জানিয়েছিল সেরিনা। কিন্তু বাপের বাড়ি পক্ষ থেকে সেভাবে কোনো সাড়া পাইনি সে। সে কারণেই মুখ বুজে সব সহ্য করছিল সেলিনা।

অত্যাচারের পরিমাণ চরমে ওঠে আজ। ভোররাতে থেকেই সেলিনা খাতুনের উপর শুরু হয় চরম অত্যাচার। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে অতিরিক্ত পণের দাবিতে বেধড়ক মারধর শুরু করে। মারধরের পরিমাণ এতটাই সেরিনার চোখ থেকেও রক্ত বেরোতে শুরু করেছিলো। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য গলায় ওড়না জড়িয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে তাকে। পরে শ্বশুর বাড়িতে ফোন করে জামাই জানাই আপনার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।

বাপের বাড়ির লোকজন সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং বোলপুর সিয়ান হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে ভর্তি করলে ডাক্তার জানায় মারা গেছে সেরিনা খাতুন। বর্তমানে ময়নাতদন্তের জন্য বোলপুর সিয়ান হাসপাতালে রয়েছে মৃতদেহটি।

কঠোর শাস্তির দাবি করছে সেরিনার মা ও তার পরিবার। স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন সকলেই পলাতক।